1. [email protected] : anjuman : anjuman
  2. [email protected] : user : user
  3. [email protected] : Admin : Admin
  4. [email protected] : Nayan Babu : Nayan Babu
ভোজ্যতেলের দাম চার মাসে ৫৬.২৫ শতাংশ বেড়েছে
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৬ অপরাহ্ন

ভোজ্যতেলের দাম চার মাসে ৫৬.২৫ শতাংশ বেড়েছে

  • পোস্ট হয়েছে : রবিবার, ১০ জানুয়ারী, ২০২১
print sharing button
OIL_BH24

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বাংলাদেশের বাজারে হু হু করে বেড়েই চলেছে ভোজ্যতেলের দাম। ফলে সাধারণ ক্রেতারা বেকায়দায়। গত চার মাসে বাংলাদেশের বাজরে গড়ে ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে ৫৬.২৫ শতাংশ। সেপ্টেম্বর মাসে প্রতি কেজি খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা, এখন এই তেল বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকা। একই অবস্থা পাম তেলের ক্ষেত্রেও। সেপ্টেম্বরে যেখানে প্রতি কেজি সুপার পাম তেল বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা দরে। বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকা দরে।

এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারের পরিস্থিতি অনুযায়ী দেশে তেলের দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশের তেল ব্যবসায়ীরা। তারা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে লিটারপ্রতি দাম ১৫ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা করাসহ ভোজ্য তেলে তিন স্তরের ভ্যাটের পরিবর্তে এক স্তরের ভ্যাট নির্ধারণের জন্য চিঠি দিয়েছেন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়েছে।

রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে খোলা সয়াবিন তেল ১২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়। বোতলজাত ৫ লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ থেকে ৬২০ টাকায়। এক কেজি লুজ পাম অয়েল ৯৮ টাকা এবং সুপার পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকায়।

গত সেপ্টেম্বর মাসেও প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সেই তেল বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকায়। অর্থাৎ গত চার মাসে প্রতি কেজি সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ৪৫ টাকা।

অন্যদিকে, খোলা পাম তেলের অবস্থাও একই রকম। গত সেপ্টেম্বরে খোলা সুপার পাম তেলে বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকায়। বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকায়। সেই হিসাবে গত চার মাসে সুপার পামের দাম বেড়েছে ৪৫ টাকা। আর গত চার মাসে সব ধরনের তেলের দাম বেড়েছে ৫৬ দশিমক ২৫ শতাংশ।

আমদানিকারক, ব্যবসায়ী ও বাজার বিশ্লেষকরা জানান, গত সপ্তাহের আমদানিমূল্যের সঙ্গে সরকারের ভ্যাট-ট্যাক্স, পরিশোধন ও বিপণন খরচ যোগ করলে বর্তমানে প্রতি লিটার সয়াবিন বোতলজাতকরণ পর্যন্ত খরচ পড়ে ১৩২ টাকা। বাজারে এখন যে দামে ভোজ্যতেল (সয়াবিন ও পাম) বিক্রি হচ্ছে, গত সপ্তাহের আমদানিমূল্য ধরে বিক্রি করলে খুচরা মূল্য আরও বেশি হওয়া উচিত। আন্তর্জাতিক বাজারের এ ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকলে সামনের দিনগুলোয় ভোজ্য তেলের দাম আরও বাড়তে পারে।

এজন্য আন্তর্জাতিক বাজারের ঊর্ধ্বমুখী ধারা বিবেচনা করে সম্প্রতি প্রতি লিটার ভোজ্য তেলের দাম ১৩০ টাকা নির্ধারণসহ তিন স্তরের ভ্যাট থেকে এক স্তরে নামিয়ে আনার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। কিন্তু ওই চিঠির পর আন্তর্জাতিক বাজারে আরও কয়েক দফা বেড়েছে পণ্যটির দাম।

এ বিষয়ে বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দিন বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ার কারণে দেশের বাজারেও দাম বেড়েছে। তবে এর সঙ্গে শুধু আন্তর্জাতিক বাজার নয়, আমাদের সরবরাহ ব্যবস্থায় একটু সমস্যা রয়েছে। যেমন মিলগেট থেকে খোলা তেল খুচরা বাজারে আসতে অনেকগুলো হাত বদল হয়। এতে করে দামে কিছুটা বাড়ে। এ বিষয়ে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে ভোজ্যতেল উৎপাদনকারী ব্যবসায়ীদের নিয়ে বসবো।

তিনি বলেন, তেলটা সম্পূর্ণ আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয়। আমরা ভ্যাটের বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে বলেছি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। তারা পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে। আমাদের রাজস্বও লাগবে, আবার ভোক্তাদের কম দামেও পণ্য দিতে হবে। আশা করছি তেলের দাম কমে যাবে।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশেও (ক্যাব) বলছে, ভোজ্যতেলের মতো একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে তিন স্তরে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট যৌক্তিক নয়। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে করকাঠামো পুনর্বিবেচনা করা দরকার। তাহলে দামের রাশ কিছুটা টানা সম্ভব হতো। এতে ভোক্তারাও একটু স্বস্তি পেতো।

বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মোস্তফা হায়দার বলেন, তেলের দাম দিন দিন বাড়ছে। কারণ ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও যুক্তরাষ্ট্র আমাদের আমদানির বড় বাজার। এসব দেশে করোনার কারণে উৎপাদন কম। এছাড়া চীন এবার ব্যাপক হারে তেল কিনেছে। আন্তর্জাতিক বাজারকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা সরকারের নেই। সরকার যা পারে তা হলো ভ্যাট-ট্যাক্স কমিয়ে বাজারজাতকরণ খরচ কমাতে সহায়তা করা। ভোজ্যতেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে যেভাবে বাড়ছে সে অনুযায়ী সরকার মূল্য সমন্বয় না করলে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা যাবে না।

উল্লেখ্য, দেশে বছরে প্রায় ২৮ লাখ টন পরিশোধিত ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। এছাড়া দেশে প্রতি বছর আরও প্রায় দুই লাখ টন অভোজ্য তেল আমদানি করা হয়, যা অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা হয়। ২৮ লাখ টন ভোজ্য তেলের মধ্যে ৯০ শতাংশই আমদানি হয়। চাহিদার মোট ভোজ্য তেলের মধ্যে সয়াবিন তেলের অংশ হচ্ছে ৪০ শতাংশের মতো। পাম তেলের অংশ হচ্ছে ৫২ শতাংশের মতো এবং বাকিটা সরিষা ও অন্যান্য তেল।

বিজনেস আওয়ার/১০ জানুয়ারি, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের আরো সংবাদ