1. [email protected] : anjuman : anjuman
  2. [email protected] : user : user
  3. [email protected] : Admin : Admin
  4. [email protected] : Nayan Babu : Nayan Babu
বেড়েই চলেছে ভোজ্যতেলের দাম
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৪১ পূর্বাহ্ন

বেড়েই চলেছে ভোজ্যতেলের দাম

  • পোস্ট হয়েছে : বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২১
print sharing button
OIL_BH24

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বিশ্ববাজারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশের বাজারে বেড়েই চলেছে ভোজ্যতেলের দাম। সেই সঙ্গে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে দেশে। নতুন দরের তেল দেশে এসে পৌঁছানোর পর দাম আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। গত দুই মাস ধরে চলছে এ প্রবণতা।

জানা গেছে, দফায় দফায় বেড় ১০৫ টাকা লিটার দরে বিক্রি হওয়া প্রতি লিটার সয়াবিন তেল এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৪ টাকা দরে। এখানেই শেষ নয়। আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিনের দাম না কমলে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে সয়াবিন তেলের দাম আরও বাড়তে পারে বলে ইঙ্গিত করেছেন ব্যবসায়ীরা। সয়াবিনের পাশাপাশি অন্যান্য ভোজ্যতেলের দামও বাড়ছে।

এদিকে ব্যবসায়ীরা সয়াবিনের ওপর আরোপিত আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি করলেও এ বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বিষয়টি নিয়ে বিব্রত সরকার। এমন পরিস্থিতিতে করনীয় নির্ধারণে রবিবার (২৪ জানুয়ারি) ভোজ্যতেল আমদানিকারকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

জানা গেছে, সয়াবিন তেলে দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে অপরাপর ভোজ্যতেলের দামও বাড়ছে। ভোজ্যতেলের দাম এখন এমন এক পর্যায়ে গেছে, যেখানে নিম্নআয়ের মানুষের খুবই কষ্ট হচ্ছে।

তবে ভোজ্যতেলের দাম সাধারণ মানুষের কেনার সাধ্যের মধ্যে রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত সংস্থা বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন তিনটি সুপারিশ করেছে।

ট্যারিফ কমিশনের প্রথম সুপারিশে বলা হয়েছে, সরকার উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে বিদ্যমান ভ্যাট মওকুফ করলে এবং সরবরাহ ও খুচরা পর্যায়ে কমিশনের হার লিটারপ্রতি যথাক্রমে ৩ ও ৫ টাকা নির্ধারণ করলে ভোজ্যতেলের দামে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

দ্বিতীয় সুপারিশ কমিশন বলেছে, ভোজ্যতেলের ওপর যে অগ্রিম কর রয়েছে, সেটি তুলে নিলেও বাজারে ভোজ্যতেলের দামে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং দাম কমবে।

তৃতীয় সুপারিশে বলা হয়েছে, আমদানি মূল্যে শতকরা হারের পরিবর্তে টনপ্রতি নির্দিষ্ট হারে ভ্যাট আরোপ করলেও সুফল পাওয়া যাবে। কমিশন বলছে, আমদানিকারকদের দুই পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি, অগ্রিম কর প্রত্যাহার এবং সরবরাহ ও খুচরা পর্যায়ে কমিশন যৌক্তিক করলে সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১১০ টাকার মধ্যে রাখা যাবে।

আন্তর্জাতিক বাজারে রেট বেড়ে যাওয়ার অজুহাতে গত এক মাসে পাইকারি বাজারে মণপ্রতি সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৪০০ টাকা। গত ডিসেম্বর থেকে দেশে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার যাত্রা নতুন বছরেও অব্যাহত রয়েছে। এখন পাইকারি পর্যায়ে প্রতি মণ সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার ৩৮০ টাকায়। যা গত ডিসেম্বরে ছিল তিন হাজার টাকার কম। সয়াবিনের মতো পাম অয়েল ও সুপার সয়াবিনের দামও গত এক মাসে ৪০০ টাকা বেড়েছে।

বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, ২০১৯ সালের মাঝামাঝি প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের আমদানি মূল্য ছিল ৬৫৪ ডলার। এতে ভ্যাট দাঁড়ায় আট হাজার ৭০০ টাকা, প্রতি লিটারে আট টাকা ৭০ পয়সা। গত ২০ ডিসেম্বর বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম টনপ্রতি ৭৯৪ ডলারে উঠেছে।

এ দরের ওপর নতুন বাজেটের ভ্যাট কাঠামো ও অগ্রিম কর বিবেচনায় নিলে সরকারের রাজস্ব দাঁড়াবে লিটারে ১৪ টাকা ৮৫ পয়সা, ২০১৯ সালের মে মাসের তুলনায় লিটারে প্রায় ছয় টাকা বেশি।

এ প্রসঙ্গে ভোজ্য তেল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, বিশ্ববাজারে নভেম্বরে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম ছিল টনপ্রতি ৭১০ ডলার, এখন তা এক হাজার ডলার ছাড়িয়েছে। একইভাবে ৬০০ ডলারের পাম অয়েল এখন ৮৫০ ডলার। এভাবে দাম বাড়লে এর প্রভাবতো বাজারে পড়বেই। এটি কীভাবে সহনীয় রাখা যায়, তা নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আগামী রবিবার আমদানিকারকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের বৈঠক রয়েছে।

দেশের বাজারে গত নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলে সাত টাকা ও পাম সুপার তেলে ১৬ টাকার মতো বেড়েছে। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে শীর্ষ বাজার হিস্যাধারী কয়েকটি কোম্পানি বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে আট টাকা বাড়িয়েছে। তারা বলছে, বিশ্ববাজারের দাম যে হারে বাড়ছে, তাতে দেশে না বাড়িয়ে উপায় নেই।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, এক বছর আগের তুলনায় বাজারে এখন সয়াবিনসহ ভোজ্যতেলের দাম ১৯ থেকে ২৩ শতাংশ বেশি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানা গেছে, বাজারে ভোজ্যতেল সরবরাহে কোনও ঘাটতি নাই। সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে।

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে ভোজ্যতেলের সরবরাহ ছিল ২০ লাখ টনের মতো, যা চাহিদার তুলনায় আড়াই লাখ টন বেশি। সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে আরও পাঁচ লাখ ১৫ হাজার টন আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছে। ট্যারিফ কমিশন মনে করে সরবরাহে কোনও ঘাটতি হবে না।

দেশে ভোজ্যতেলের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ২০ লাখ টন। এর অধিকাংশই আমদানি নির্ভর। দেশে নানাভাবে নানা উৎসে যে ভোজ্যতেল উৎপাদন করা হলেও তা পরিমাণে কম। পরিসংখ্যান বলছে দেশে উৎপাদিত ভোজ্যতেলের পরিমাণ সর্বোচ্চ ৫ লাখ টন হতে পারে।

চাহিদার প্রায় ৯০ শতাংশ ভোজ্যতেল আমদানি করতে হয়। মেঘনা, সিটি, বাংলাদেশ এডিবল অয়েল, বসুন্ধরা, টি কে, এস আলম গ্রুপসহ সাত-আটটি প্রতিষ্ঠান অপরিশোধিত তেল আমদানির পর তা পরিশোধন করে বাজারজাত করে। কোম্পানিগুলো বিভিন্ন সময় ভোজ্যতেলের ওপর এক স্তরে ভ্যাট আরোপের দাবি জানিয়ে আসছিল।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এর আগে গত বছর ভোজ্যতেল ও চিনির ওপর কর কমাতে কয়েক দফা অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছিল। তবে কর কমানো হয়নি।

বিজনেস আওয়ার/২১ জানুয়ারি, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের আরো সংবাদ