ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুঁজিবাজার বন্ধ থাকায় বিপাকে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা

  • পোস্ট হয়েছে : ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ মে ২০২০
  • 100

দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে সরকার সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়িয়ে ১৪ এপ্রিল করেছে। সেই হিসেবে পুঁজিবাজারের লেনদেনও আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। কিন্তু স্টক একচেঞ্জ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

সাধারণত ব্যাংকের ছুটির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পুঁজিবাজারের লেনদেন বন্ধ থাকে। বর্তমানে সীমিত সময়ের জন্য হলেও ব্যাংকের লেনদেন চালু রয়েছে। কিন্তু সরকারের সাধারণ ছুটির সাথে মিল রেখে ডিএসই ও সিএসই’র ট্রেডিং, সেটেলমেন্ট কার্যক্রমসহ সকল দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। বিনিয়োগকারীরা একদিকে তাদের শেয়ার লেনদেন করতে পারছেন না, অন্যদিকে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সম্পর্কে কোন তথ্যও পাচ্ছেন না।

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, স্টক একচেঞ্জ এখন পুরোপুরি ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করছে। আর যেহেতু ব্যাংক খোলা, সেহেতু ব্যাংকের সাথে সমন্বয় রেখে স্টক একচেঞ্জকেও সীমিত আকারে খোলা রাখার ব্যবস্থা করা হলে বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হতো। কারণ এমন অনেক বিনিয়োগকারী আছেন যাদের সকল বিনিয়োগ শেয়ার বাজারে রয়েছে, আর স্টক একচেঞ্জ বন্ধ থাকায় তারা বর্তমান লকডাউন অবস্থায় মানবেতর জীবন জাপন করছেন এবং সংসার চালাতেও হিমশিম খাচ্ছেন।

গত ২৪ মার্চ কোভিড-১৯ এর ব্যাপকভাবে বিস্তার প্রতিরোধে জনসমাবেশ এড়াতে এবং সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পনিগুলোকে ডিজিটাল প্লাটফর্মে (ভার্চূয়াল) মিটিং করার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কিন্তু স্টক একচেঞ্জ বন্ধ থাকায় বিএসইসির নির্দেশনার বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।

বিএসইসি’র ঐ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, স্টক একচেঞ্জের তালিকাভুক্ত কোম্পানিসমূহের বার্ষিক সাধারন সভা, বিশেষ সাধারন সভা ও পরিচালনা পর্ষদের সভা এবং প্রাইস সেনসেটিভ ইনফরমেশনসহ ও অন্যান্য বিষয় সম্পাদনের জন্য ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে উক্ত সভা সমূহ পরিপালন করতে পারবে। এছাড়া বিএসইসি উভয় স্টক একচেঞ্জকে তাদের আদেশ সব লিস্টেড কোম্পানিকে জানিয়ে দিতে এবং তাদের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করতে বলেছে।

কিন্তু যেহেতু উভয় স্টক একচেঞ্জ বন্ধ সেহেতু বিনিয়োগকারীদের সুবিধার জন্য বিএসইসির পক্ষ থেকে যে আদেশ দেয়া হয়েছে সে সুবিধা থেকে বিনিয়োগকারীরা বঞ্চিত হচ্ছে। কেননা ঢাকা স্টক একচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক একচেঞ্জ (সিএসই) বন্ধ থাকায় তাদের ওয়েবসাইটে কোন কোম্পানির হালনাগাদ তথ্য নেই ফলে বিনিয়োগকারীরা তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং এতে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।

বিএসইসি কোম্পনিগুলোকে ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে উক্ত সভা সমূহ পরিপালন করতে বলেছে কিন্তু বিনিয়োগকারীরা কিভাবে বোর্ড মিটিং এর তারিখ ও স্থান ইত্যাদি বিষয় অবগত হবে সে ব্যাপারে কোন দিক নির্দেশনা দেয়নি ফলে তালিকাভুক্ত কোম্পানিসমূহের বার্ষিক সাধারন সভা, বিশেষ সাধারন সভা এবং বোর্ড মিটিং এর তারিখ ও স্থান ইত্যাদি বিষয় বিনিয়োগকারীরা অবগত হতে পারছেন না।

বিএসইসির নির্দেশনা মোতাবেক কোম্পানিগুলোর ভার্চূয়াল মিটিংয়ের ফলাফল বা তথ্য বিনিয়োগকারীদের কাছে পৌছাচ্ছেনা। ফলে বঞ্চিত হচ্ছে বিনিয়োগকারীরা। তাই বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে স্টক একচেঞ্জ এর ওয়েবসাইট আপডেট করা উচিত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

যেহেতু ব্যাংক খোলা সেহেতু ব্যাংকের সাথে সমন্বয় করে স্টক একচেঞ্জকেও সীমিত আকারে খোলা রাখার ব্যবস্থা করা হলে বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবে। তাই বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে স্টক একচেঞ্জ এর ওয়েবসাইটে তালিকাভুক্ত কোম্পানিসমূহের নিউজ গুলি পাবলিসের ব্যবস্থা করা হলে বিনিয়োগকারীরা সহজেই তাদের প্রয়োজনীয় কোম্পানি সংক্রান্ত তথ্য সম্পর্কে অবহিত হতে পারবেন।

বড় ধরনের দরপতন ও ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ বন্ধ রাখায় তারল্যের এই বাজার থেকে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে অর্থ উত্তোলনের সুযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে পুঁজি আটকে যাওয়ায় বিপাকে পরেছেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা। পাশাপাশি কৌশলগত বিনিয়োগকারীরাও বিদ্যমান পরিস্থিতির সুযোগে কম দরে শেয়ার কেনা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এদিকে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কোনো কারণে যদি সাধারণ ছুটির মধ্যেও ব্যাংকে স্বাভাবিক সময়ের মতো পূর্ণ লেনদেন হয়, তাহলে পুঁজিবাজারে লেনদেন চালুর বিষয়টি ভেবে দেখা হবে।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

পুঁজিবাজার বন্ধ থাকায় বিপাকে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা

পোস্ট হয়েছে : ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ মে ২০২০

দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে সরকার সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়িয়ে ১৪ এপ্রিল করেছে। সেই হিসেবে পুঁজিবাজারের লেনদেনও আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। কিন্তু স্টক একচেঞ্জ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

সাধারণত ব্যাংকের ছুটির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পুঁজিবাজারের লেনদেন বন্ধ থাকে। বর্তমানে সীমিত সময়ের জন্য হলেও ব্যাংকের লেনদেন চালু রয়েছে। কিন্তু সরকারের সাধারণ ছুটির সাথে মিল রেখে ডিএসই ও সিএসই’র ট্রেডিং, সেটেলমেন্ট কার্যক্রমসহ সকল দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। বিনিয়োগকারীরা একদিকে তাদের শেয়ার লেনদেন করতে পারছেন না, অন্যদিকে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সম্পর্কে কোন তথ্যও পাচ্ছেন না।

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, স্টক একচেঞ্জ এখন পুরোপুরি ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করছে। আর যেহেতু ব্যাংক খোলা, সেহেতু ব্যাংকের সাথে সমন্বয় রেখে স্টক একচেঞ্জকেও সীমিত আকারে খোলা রাখার ব্যবস্থা করা হলে বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হতো। কারণ এমন অনেক বিনিয়োগকারী আছেন যাদের সকল বিনিয়োগ শেয়ার বাজারে রয়েছে, আর স্টক একচেঞ্জ বন্ধ থাকায় তারা বর্তমান লকডাউন অবস্থায় মানবেতর জীবন জাপন করছেন এবং সংসার চালাতেও হিমশিম খাচ্ছেন।

গত ২৪ মার্চ কোভিড-১৯ এর ব্যাপকভাবে বিস্তার প্রতিরোধে জনসমাবেশ এড়াতে এবং সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পনিগুলোকে ডিজিটাল প্লাটফর্মে (ভার্চূয়াল) মিটিং করার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কিন্তু স্টক একচেঞ্জ বন্ধ থাকায় বিএসইসির নির্দেশনার বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।

বিএসইসি’র ঐ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, স্টক একচেঞ্জের তালিকাভুক্ত কোম্পানিসমূহের বার্ষিক সাধারন সভা, বিশেষ সাধারন সভা ও পরিচালনা পর্ষদের সভা এবং প্রাইস সেনসেটিভ ইনফরমেশনসহ ও অন্যান্য বিষয় সম্পাদনের জন্য ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে উক্ত সভা সমূহ পরিপালন করতে পারবে। এছাড়া বিএসইসি উভয় স্টক একচেঞ্জকে তাদের আদেশ সব লিস্টেড কোম্পানিকে জানিয়ে দিতে এবং তাদের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করতে বলেছে।

কিন্তু যেহেতু উভয় স্টক একচেঞ্জ বন্ধ সেহেতু বিনিয়োগকারীদের সুবিধার জন্য বিএসইসির পক্ষ থেকে যে আদেশ দেয়া হয়েছে সে সুবিধা থেকে বিনিয়োগকারীরা বঞ্চিত হচ্ছে। কেননা ঢাকা স্টক একচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক একচেঞ্জ (সিএসই) বন্ধ থাকায় তাদের ওয়েবসাইটে কোন কোম্পানির হালনাগাদ তথ্য নেই ফলে বিনিয়োগকারীরা তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং এতে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।

বিএসইসি কোম্পনিগুলোকে ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে উক্ত সভা সমূহ পরিপালন করতে বলেছে কিন্তু বিনিয়োগকারীরা কিভাবে বোর্ড মিটিং এর তারিখ ও স্থান ইত্যাদি বিষয় অবগত হবে সে ব্যাপারে কোন দিক নির্দেশনা দেয়নি ফলে তালিকাভুক্ত কোম্পানিসমূহের বার্ষিক সাধারন সভা, বিশেষ সাধারন সভা এবং বোর্ড মিটিং এর তারিখ ও স্থান ইত্যাদি বিষয় বিনিয়োগকারীরা অবগত হতে পারছেন না।

বিএসইসির নির্দেশনা মোতাবেক কোম্পানিগুলোর ভার্চূয়াল মিটিংয়ের ফলাফল বা তথ্য বিনিয়োগকারীদের কাছে পৌছাচ্ছেনা। ফলে বঞ্চিত হচ্ছে বিনিয়োগকারীরা। তাই বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে স্টক একচেঞ্জ এর ওয়েবসাইট আপডেট করা উচিত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

যেহেতু ব্যাংক খোলা সেহেতু ব্যাংকের সাথে সমন্বয় করে স্টক একচেঞ্জকেও সীমিত আকারে খোলা রাখার ব্যবস্থা করা হলে বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবে। তাই বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে স্টক একচেঞ্জ এর ওয়েবসাইটে তালিকাভুক্ত কোম্পানিসমূহের নিউজ গুলি পাবলিসের ব্যবস্থা করা হলে বিনিয়োগকারীরা সহজেই তাদের প্রয়োজনীয় কোম্পানি সংক্রান্ত তথ্য সম্পর্কে অবহিত হতে পারবেন।

বড় ধরনের দরপতন ও ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ বন্ধ রাখায় তারল্যের এই বাজার থেকে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে অর্থ উত্তোলনের সুযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে পুঁজি আটকে যাওয়ায় বিপাকে পরেছেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা। পাশাপাশি কৌশলগত বিনিয়োগকারীরাও বিদ্যমান পরিস্থিতির সুযোগে কম দরে শেয়ার কেনা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এদিকে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কোনো কারণে যদি সাধারণ ছুটির মধ্যেও ব্যাংকে স্বাভাবিক সময়ের মতো পূর্ণ লেনদেন হয়, তাহলে পুঁজিবাজারে লেনদেন চালুর বিষয়টি ভেবে দেখা হবে।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: