ঢাকা , রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনার থাবায় কমে যেতে পারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির লভ্যাংশ

  • পোস্ট হয়েছে : ০১:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ মে ২০২০
  • 79

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস পৃথিবীর প্রায় ২১২টি দেশে আঘাত হেনেছে। ভাইরাসটির কবলে পড়েছে বাংলাদেশও। যার কারণে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও চলছে লকডাউন। বন্ধ রয়েছে প্রায় সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এরই ধারাবাহিকতায় বন্ধ রয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোও। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, করোনাভাইরাসের থাবায় তালিকাভুক্ত কোম্পানির লভ্যাংশ এবছর কমে যেতে পারে। কারণ উৎপাদনের সঙ্গে ব্যবসা ও আয়-ব্যয়ের সম্পর্ক রয়েছে। আর আয় কমে গেলে স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব পড়বে প্রতিষ্ঠানগুলোর লভ্যাংশ বিতরণে।

তাদের মতে, এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়বে রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানগুলো। কারণ করোনাভাইরাসের জন্য উৎপাদন বন্ধ থাকায় তারা পণ্য রপ্তানি করতে পারছে না। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে পারে পোশাকশিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো। কারণ এ খাত থেকেই বাংলাদেশ কমবেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। বর্তমানে পুঁজিবাজারে বস্ত্র খাতের ৫৬টি প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত রয়েছে, যার সিংহভাগই রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান। রপ্তানি করতে না পারলে তাদের ব্যবসা থমকে যায়।

এদিকে বস্ত্র খাত ছাড়াও বিমান, পর্যটন, হোটেল ও সেবা খাতের কোম্পানিগুলোতে করোনাভাইরাসের বৈরী প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। চীনে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই এ ধরনের কোম্পানিগুলোতে প্রভাব পড়তে দেখা গেছে। ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর ইংল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ সব দেশেরই এ ধরনের কোম্পানির শেয়ারদর কমে যেতে দেখা যায়।

বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, করোনাভাইরাসের কবলে পড়ে বিশ্বের প্রায় সব দেশই নাকাল। আমাদের দেশেও এর প্রভাব পড়েছে। এটা একটি প্রাকৃতিক বিপর্যয়। তাই এখানে কারও কিছু করার নেই। করোনা পরিস্থিতির কারণে যদি লকডাউন দীর্ঘমেয়াদি হয় তাহলে কোম্পানিগুলোর ব্যবসায় এর প্রভাব পড়বে। সেক্ষেত্রে লভ্যাংশ বিতরণে এর প্রভাব পড়তে পারে। তবে আমি মনে করছি, এ পরিস্থিতি শিগগির কেটে যাবে।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বলেন, দীর্ঘদিন থেকে পুঁজিবাজার পরিস্থিতি ভালো না থাকায় তাদের অবস্থা এমনিতেই নাজুক। পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে কারোনার কারণে পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায়। এরপর যদি লভ্যাংশ কমে যায়, তাহলে আমাদের পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে মার্কেন্টাইল সিকিউরিজিরে প্রবীণ বিনিয়োগকারী মো. হেলাল হোসেন বলেন, পোর্টফোলিওতে থাকা শেয়ারগুলোয় এমনিতেই অনেক লোকসান রয়েছে। তার ওপর বাজার বন্ধ থাকায় আমরা আরও খারাপ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এরপর যদি লভ্যাংশ কমে যায়, তাহলে আমাদের পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর দেশজুড়ে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। এ সতর্কতার আওতায় বর্তমানে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো বন্ধ রয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। এতে দুশ্চিন্তা বাড়ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

করোনার থাবায় কমে যেতে পারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির লভ্যাংশ

পোস্ট হয়েছে : ০১:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ মে ২০২০

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস পৃথিবীর প্রায় ২১২টি দেশে আঘাত হেনেছে। ভাইরাসটির কবলে পড়েছে বাংলাদেশও। যার কারণে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও চলছে লকডাউন। বন্ধ রয়েছে প্রায় সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এরই ধারাবাহিকতায় বন্ধ রয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোও। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, করোনাভাইরাসের থাবায় তালিকাভুক্ত কোম্পানির লভ্যাংশ এবছর কমে যেতে পারে। কারণ উৎপাদনের সঙ্গে ব্যবসা ও আয়-ব্যয়ের সম্পর্ক রয়েছে। আর আয় কমে গেলে স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব পড়বে প্রতিষ্ঠানগুলোর লভ্যাংশ বিতরণে।

তাদের মতে, এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়বে রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানগুলো। কারণ করোনাভাইরাসের জন্য উৎপাদন বন্ধ থাকায় তারা পণ্য রপ্তানি করতে পারছে না। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে পারে পোশাকশিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো। কারণ এ খাত থেকেই বাংলাদেশ কমবেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। বর্তমানে পুঁজিবাজারে বস্ত্র খাতের ৫৬টি প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত রয়েছে, যার সিংহভাগই রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান। রপ্তানি করতে না পারলে তাদের ব্যবসা থমকে যায়।

এদিকে বস্ত্র খাত ছাড়াও বিমান, পর্যটন, হোটেল ও সেবা খাতের কোম্পানিগুলোতে করোনাভাইরাসের বৈরী প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। চীনে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই এ ধরনের কোম্পানিগুলোতে প্রভাব পড়তে দেখা গেছে। ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর ইংল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ সব দেশেরই এ ধরনের কোম্পানির শেয়ারদর কমে যেতে দেখা যায়।

বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, করোনাভাইরাসের কবলে পড়ে বিশ্বের প্রায় সব দেশই নাকাল। আমাদের দেশেও এর প্রভাব পড়েছে। এটা একটি প্রাকৃতিক বিপর্যয়। তাই এখানে কারও কিছু করার নেই। করোনা পরিস্থিতির কারণে যদি লকডাউন দীর্ঘমেয়াদি হয় তাহলে কোম্পানিগুলোর ব্যবসায় এর প্রভাব পড়বে। সেক্ষেত্রে লভ্যাংশ বিতরণে এর প্রভাব পড়তে পারে। তবে আমি মনে করছি, এ পরিস্থিতি শিগগির কেটে যাবে।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বলেন, দীর্ঘদিন থেকে পুঁজিবাজার পরিস্থিতি ভালো না থাকায় তাদের অবস্থা এমনিতেই নাজুক। পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে কারোনার কারণে পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায়। এরপর যদি লভ্যাংশ কমে যায়, তাহলে আমাদের পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে মার্কেন্টাইল সিকিউরিজিরে প্রবীণ বিনিয়োগকারী মো. হেলাল হোসেন বলেন, পোর্টফোলিওতে থাকা শেয়ারগুলোয় এমনিতেই অনেক লোকসান রয়েছে। তার ওপর বাজার বন্ধ থাকায় আমরা আরও খারাপ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এরপর যদি লভ্যাংশ কমে যায়, তাহলে আমাদের পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর দেশজুড়ে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। এ সতর্কতার আওতায় বর্তমানে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো বন্ধ রয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। এতে দুশ্চিন্তা বাড়ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: