ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৬ মাসেই সঞ্চয়পত্র বিক্রি লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে

  • পোস্ট হয়েছে : ১০:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • 42

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসেই সঞ্চয়পত্র বিক্রি লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ব্যাংকখাতে আমানতের সুদ কমে যাওয়ায় মানুষ এখন সঞ্চয়পত্রের দিকে ঝুঁকেছেন। ফলে সরকার অর্থবছর জুড়ে যে পরিমাণ টাকা সঞ্চয়পত্র থেকে ধার নিতে চেয়েছিলেন তা ছয়মাসেই পূরণ হয়েছে।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, গেলো বছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ২০ হাজার ৪৮৭ কোটি ১২ লাখ টাকার। ২০২০-২১ অর্থবছরে সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। চলতি বছরের অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সঞ্চয়পত্রের প্রকৃত বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৩৪৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

ডিসেম্বর মাসে বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৪৪২ কোটি ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র। তবে নভেম্বর মাসের তুলনায় ডিসেম্বরে বিক্রি কমেছে ১৯৬০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছেন, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে সরকারের বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। বছর শেষে বিক্রির পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি টাকা অতিক্রম করতে পারে।

আর সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের শেষে বিক্রির পরিমাণ ৩৯০ কোটি ২৫ লাখ টাকা বেড়ে ৩ হাজার ২১১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ঋণের সুদ ৯ শতাংশ বাস্তবায়ন করার পরে অধিকাংশ ব্যাংক আমানতের সুদ ৬ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। অপর দিকে কিছু কিছু ব্যাংকের আমানতের সুদ ২ শতাংশ পর্যন্ত নেমেছে। এখনো সঞ্চয়পত্রের সুদ ১২ শতাংশ হওয়ার কারণে ১০ শতাংশ ট্যাক্স দেওয়ার পরে মানুষ সঞ্চয়পত্রের দিকে ঝুঁকেছে।

২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় ২০২০-২১ অর্থবছরের শুরুতেই অস্বাভাবিক বেড়েছে। এ অর্থবছরে ১৪ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা কমে দাঁড়িয়েছিল ৪৯ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা।

চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে সরকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি ধরা হয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতির অর্থায়নে সরকার সঞ্চয়পত্র বিক্রিসহ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৯ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে।

এ প্রসঙ্গে একজন প্রবীণ ব্যাংকার বলেছেন, করনীতি কঠোর করার পরেও সঞ্চয়পত্রে অতিরিক্ত বিনিয়োগ ইঙ্গিত দেয় যে দেশের মানুষের বিনিয়োগের জন্য সঞ্চয়পত্রের চেয়ে ভালো বিকল্প আর নেই।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারা ও বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ না থাকায় বিভিন্ন সংস্থা তাদের তহবিল ব্যাংকে রাখার পরিবর্তে নিরাপদ এবং উচ্চ সুদে বিনিয়োগ করতে পছন্দ করছে। মানুষ সঞ্চয়পত্রের দিকে ঝুঁকেছে। যার ফলে সঞ্চয়পত্র বিক্রি বেড়েছে।

বিজনেস আওয়ার/০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

৬ মাসেই সঞ্চয়পত্র বিক্রি লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে

পোস্ট হয়েছে : ১০:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসেই সঞ্চয়পত্র বিক্রি লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ব্যাংকখাতে আমানতের সুদ কমে যাওয়ায় মানুষ এখন সঞ্চয়পত্রের দিকে ঝুঁকেছেন। ফলে সরকার অর্থবছর জুড়ে যে পরিমাণ টাকা সঞ্চয়পত্র থেকে ধার নিতে চেয়েছিলেন তা ছয়মাসেই পূরণ হয়েছে।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, গেলো বছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ২০ হাজার ৪৮৭ কোটি ১২ লাখ টাকার। ২০২০-২১ অর্থবছরে সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। চলতি বছরের অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সঞ্চয়পত্রের প্রকৃত বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৩৪৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

ডিসেম্বর মাসে বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৪৪২ কোটি ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র। তবে নভেম্বর মাসের তুলনায় ডিসেম্বরে বিক্রি কমেছে ১৯৬০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছেন, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে সরকারের বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। বছর শেষে বিক্রির পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি টাকা অতিক্রম করতে পারে।

আর সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের শেষে বিক্রির পরিমাণ ৩৯০ কোটি ২৫ লাখ টাকা বেড়ে ৩ হাজার ২১১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ঋণের সুদ ৯ শতাংশ বাস্তবায়ন করার পরে অধিকাংশ ব্যাংক আমানতের সুদ ৬ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। অপর দিকে কিছু কিছু ব্যাংকের আমানতের সুদ ২ শতাংশ পর্যন্ত নেমেছে। এখনো সঞ্চয়পত্রের সুদ ১২ শতাংশ হওয়ার কারণে ১০ শতাংশ ট্যাক্স দেওয়ার পরে মানুষ সঞ্চয়পত্রের দিকে ঝুঁকেছে।

২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় ২০২০-২১ অর্থবছরের শুরুতেই অস্বাভাবিক বেড়েছে। এ অর্থবছরে ১৪ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা কমে দাঁড়িয়েছিল ৪৯ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা।

চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে সরকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি ধরা হয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতির অর্থায়নে সরকার সঞ্চয়পত্র বিক্রিসহ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৯ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে।

এ প্রসঙ্গে একজন প্রবীণ ব্যাংকার বলেছেন, করনীতি কঠোর করার পরেও সঞ্চয়পত্রে অতিরিক্ত বিনিয়োগ ইঙ্গিত দেয় যে দেশের মানুষের বিনিয়োগের জন্য সঞ্চয়পত্রের চেয়ে ভালো বিকল্প আর নেই।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারা ও বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ না থাকায় বিভিন্ন সংস্থা তাদের তহবিল ব্যাংকে রাখার পরিবর্তে নিরাপদ এবং উচ্চ সুদে বিনিয়োগ করতে পছন্দ করছে। মানুষ সঞ্চয়পত্রের দিকে ঝুঁকেছে। যার ফলে সঞ্চয়পত্র বিক্রি বেড়েছে।

বিজনেস আওয়ার/০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: