বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বোনার ৯০, জশুয়া ৯২ ও জোসেফ থেমেছেন ৮২ রান করে। এ তিনজনের ব্যাটেই মূলত শেষ ৫ উইকেটে ২৩১ রান যোগ করতে পেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষদিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ২৫ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট নিয়েছেন রাহি-তাইজুলরা। শেষ পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল ৪০৯ রানে থেমেছে।
আগেরদিন করা ৫ উইকেটে ২২৩ রান নিয়ে আজকের দিনের খেলা শুরু করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আবু জায়েদ রাহি, তাইজুল ইসলামদের আলগা বোলিংয়ের সুযোগ কাজে লাগিয়ে দিনের শুরু থেকেই সহজ রান পেয়েছেন এনক্রুমাহ বোনার ও জশুয়া ডা সিলভা।
দিনের প্রথম বলটিই পায়ে করেন রাহি। রানের সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেননি হাফসেঞ্চুরি করে অপরাজিত থাকা বোনার, অনসাইডে ঠেলেই নিয়ে নেন তিনটি রান, স্ট্রাইক পান জশুয়া। এক বল পর রাহির ভেতরে ঢোকা বল আঘাত হানে জশুয়ার প্যাডে। আম্পায়ার সৈকত আউট দেননি। বাংলাদেশ রিভিউ নিয়েও সফল হয়নি। ঠিক পরের বলেই পয়েন্টে দুর্দান্ত বাউন্ডারি হাঁকান জশুয়া।
শুরুর দিকে উইকেট না পাওয়ায় দিনের সাত ওভার পর একসঙ্গে রাহি ও তাইজুলকে আক্রমণ থেকে সরিয়ে দেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। দুই প্রান্ত থেকে দুই অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ ও নাঈম হাসানকে আনা হয় জুটি ভাঙতে। এই পরিকল্পনায় মেলে সাফল্য।
বল হাতে নিয়ে দিনে নিজের প্রথম ওভারেই জশুয়ার কঠিন পরীক্ষা নেন মিরাজ। দিনের ১২তম ওভারে গিয়ে নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের ৯৯তম উইকেট তুলে নেন মিরাজ।
উইকেট থেকে সাহায্যের আশায় রাউন্ড দ্য উইকেটে বোলিং করেন মিরাজ। সিলি পয়েন্ট না রেখে লেগ স্লিপে দাঁড় করান মোহাম্মদ মিঠুনকে। তার লেগস্ট্যাম্পে পিচ করা ডেলিভারিটি ফাইন লেগে ঠেলে দেয়ার চেষ্টায় লেগ স্লিপেই ধরা পড়েন ৭৪ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করা বোনার। আজ তিনি ব্যক্তিগত সংগ্রহে যোগ করতে পেরেছেন ১৬ রান। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়েও ২০৯ বলে ৯০ রানে থামেন বোনার, ভেঙে যায় ৮৮ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি।
এই জুটি ভেঙেও অবশ্য স্বস্তি পায়নি বাংলাদেশ। দিনের দ্বিতীয় ঘণ্টায় আরও দ্রুত রান তুলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মিরাজের বলে রিভার্স সুইপ করে ফিফটিতে পৌছান জশুয়া। উইকেটে এসে শুরু থেকেই চার-ছক্কায় মনোযোগ দেন জোসেফ। মিরাজ, নাঈম বা তাইজুল- কোনো স্পিনারকেই বাড়তি সমীহ করেননি জোসেফ। প্রতিটি বাজে বলের ঠিকানাই করেছেন সীমানার বাইরে।
প্রথম সেশন শেষ হওয়ার আগে অবিচ্ছিন্ন সপ্তম উইকেট জুটিতে ৫৯ রান যোগ করেন জশুয়া ও জোসেফ। অন্যদিকে ৭০ রানে অপরাজিত ছিলেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জশুয়া।
হালকা ব্যাটিং করতে পারা পেস বোলিং অলরাউন্ডার জোসেফ রীতিমতো নাভিশ্বাস তোলেন বাংলাদেশের বোলারদের। কোনোভাবেই এ জুটি ভাঙতে পারছিল না স্বাগতিকরা। ছক্কার মারে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন জোসেফ। বে সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েও তা পূরণ করা হয়নি তার।
অবশ্য জোসেফের আগে সাজঘরে ফেরেন জশুয়া। দলীয় ৩৮৪ রানের মাথায় তাইজুলের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান জশুয়া। সমাপ্তি ঘটে ১৮৭ বলে ১০ চারের মারে খেলা ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ৯২ রানের ইনিংসের, থেমে ১১৮ রানের সপ্তম উইকেট জুটি। ঠিক পরের ওভারেই আউট হন জোসেফ। রাহির পরপর দুই বলে ছয় ও চার মেরে তিনি ঢোকেন ৮০’র ঘরে। এর পরের বলটিও বড় শট খেলার চেষ্টায় ধরা পড়েন উইকেটরক্ষক লিটন দাসের হাতে।
এরপর শেষ দুই উইকেট তুলে নিতে আর সময় নষ্ট করেননি রাহি ও তাইজুল। জোমেল ওয়ারিকানকে ফিরিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম ফাইফারের সম্ভাবনা জাগান রাহি। কিন্তু পরে গ্যাব্রিয়েলের উইকেট নিয়ে তাইজুলও ইনিংস শেষ করেন ৪ উইকেটে। রাহি ও তাইজুল- দুজনেরই শিকার ৪টি করে উইকেট।
বিজনেস আওয়ার/১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১/কমা