1. [email protected] : anjuman : anjuman
  2. [email protected] : user : user
  3. [email protected] : Admin : Admin
  4. [email protected] : Nayan Babu : Nayan Babu
ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫৯ পূর্বাহ্ন

ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ

  • পোস্ট হয়েছে : রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
print sharing button

স্পোর্টস ডেস্ক : চট্টগ্রামের পর ঢাকা টেস্টেও বাংলাদেশকে ১৭ রানে হারিয়েছে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুই টেস্টের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ঢাকা টেস্টে ম্যাচ জয়ের খুব কাছে গিয়েও হার দেখতে হলো টাইগারদের।

এ ম্যাচে ছিলো চরম টানটান উত্তেজনা। টেস্ট ম্যাচে এমন রোমাঞ্চের দেখা মেলে কালেভদ্রে। কোন দল জিতবে-বাংলাদেশ না ওয়েস্ট ইন্ডিজ? তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছিল না। পাল্লা একবার বাংলাদেশের দিকে, আরেকবার পাল্লা ঝুঁকে পড়ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের দিকে।

বাংলাদেশের লক্ষ্য ২৩১ রানের। ১৮৮ রানে টাইগারদের নবম উইকেট তুলে নেয়ার পর অনেকটাই জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল ক্যারিবীয়দের। তবে শেষ উইকেটে দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে খেলাটা জমিয়ে তুললেন মেহেদি হাসান মিরাজ, সঙ্গী হলেন আবু জায়েদ। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি।

শেষ উইকেটে জয়ের স্বপ্ন দেখিয়ে একটা সময় থামতেই হলো মিরাজকে, তিনি আউট হলেন। তীরে এসে তরী ডুবল টাইগারদের। মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট মাত্র ১৭ রানে হারতে হলো বাংলাদেশকে। এতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হলো মুমিনুল হকের দল।

এর আগে পরিসংখ্যান বদলে দেয়ার মিশনে নামা দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকারের ব্যাটে শুরুটা দুর্দান্ত করেছিল বাংলাদেশ। প্রায় দুই বছর পর গড়েছিলেন উদ্বোধনী উইকেটে ৫০ রানের জুটি। তামিম তুলে নেন নিজের ব্যক্তিগত ফিফটি।

কিন্তু এরপরই ছন্দপতন। বল হাতে ট্রাম্পকার্ড হিসেবে আবির্ভূত হন ক্যারিবীয় অধিনায়ক ক্রেইগ ব্রাথওয়েট। নিয়মিত বোলাররা যখন বেধড়ক পিটুনি খাচ্ছিলেন, তখন বল হাতে নিয়েই জাদু দেখান অধিনায়ক।

তার বোলিংয়েই আউট হয়েছেন সৌম্য সরকার ও তামিম ইকবাল। দুর্দান্ত শুরুর পর এ দুই উইকেট হারিয়ে যখন বিপদে বাংলাদেশ, তখন চাপ আরও বাড়ে নাজমুল হোসেন শান্তর বিদায়ের ফলে।

অথচ রান তাড়ার মিশনে শুরুটা দুর্দান্ত ছিল বাংলাদেশের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে চার মেরে ড্রেসিংরুমে ইতিবাচক বার্তা দেন তামিম। ডানহাতি পেসার আলঝারি জোসেফের বিপক্ষে স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে থাকেন তিনি।

চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে দৃষ্টিনন্দন কভার ড্রাইভের পর দ্বিতীয় বলে দারুণ ফ্লিকে জোড়া বাউন্ডারি হাঁকান তামিম। অগ্রজ সতীর্থকে এমন মারমুখী ভঙ্গিতে দেখে অপরপ্রান্ত আগলে রাখেন সৌম্য। অফস্পিনার রাহকিম কর্নওয়াল তাকে বারবার প্রলুব্ধ করেন বড় শটের জন্য। কিন্তু সেই ফাঁদে পা দেননি বাঁহাতি এ ড্যাশিং ওপেনার।

পরে বাঁহাতি স্পিনার জোমেল ওয়ারিকান আক্রমণে এলে প্যাডেল সুইপে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জুটির পঞ্চাশ পূরণ করেন তামিম। যা কি না ১৪ ইনিংস পর উদ্বোধনী উইকেটে বাংলাদেশের পঞ্চাশ রানের জুটির নজির। ঠিক পরের বলে রিভার্স সুইপে চার মেরে ৪০ রানে পৌঁছে যান তামিম।

তিনি ফিফটি করতে সময় নেননি একদমই। মুখোমুখি ৪৪তম বলে ক্যারিয়ারের ২৮তম পঞ্চাশ করেন তামিম। তবে এর আগেই ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। আক্রমণে এসে নিজের প্রথম বলেই সৌম্যর বিদায়ঘণ্টা বাজান ক্যারিবীয় অধিনায়ক। ব্রাথওয়েটের করা ১৩তম ওভারের প্রথম বলটিতে স্লিপে ক্যাচ নেন কর্নওয়াল।

কিন্তু সেটি আউট দেননি আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওর্থ। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের রিভিউ নিয়ে ৩৪ বলে ১৩ রান করা সৌম্যকে ফেরায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ৫৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

ব্রাথওয়েটের ব্যক্তিগত তৃতীয় ওভারে ফাঁদে পা দেন তামিম। তাকে অফস্ট্যাম্পের বাইরে ড্রাইভিং লেন্থে করেন ব্রাথওয়েট। শর্ট মিড অফে ফিল্ডার দেখেও ড্রাইভ খেলেন তামিম। কিন্তু সেই ফিল্ডারকে পরাস্ত করতে পারেননি। আউট হয়েছেন পঞ্চাশ করার ঠিক পরপরই।

দুই ওপেনারকে হারিয়ে সৃষ্ট চাপ আরও বাড়ে চা পানের বিরতির ঠিক আগে কর্নওয়ালের বলে নাজমুল শান্তও (৩১ বলে ১১) ফিরে গেলে।

৩ উইকেটে ৭৮ রান নিয়ে শেষ সেশনে খেলতে নামেন মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহীম। তাদের ব্যাটেই ছিল বড় আশা। কিন্তু দলীয় সংগ্রহ শতক পার করে দিয়েই আগের তিনজনের পথ ধরেন অভিজ্ঞ মুশফিক। ওয়ারিকানের শার্প টার্নিং ডেলিভারিতে কট বিহাইন্ড হওয়ার আগে মুশফিকের ব্যাট থেকে আসে ১৪ রান।

ছয় নম্বরে নেমে মোহাম্মদ মিঠুন দিচ্ছিলেন ইতিবাচক ব্যাটিংয়ের ইঙ্গিত। কর্নওয়ালের বলে উইকেট ছেড়ে এগিয়ে এসে মিডউইকেট দিয়ে হাঁকান ছক্কা। অবশ্য ধরা পড়েন সেই কর্নওয়ালের বলেই। বাড়তি বাউন্সিং ডেলিভারিটি মিঠুনের ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় লেগস্লিপে দাঁড়ানো এনক্রুমাহ বোনারের হাতে। জয়ের লক্ষ্য থেকে ১১৬ রান দূরে থাকে অর্ধেক উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ।

মিঠুন ফিরে যাওয়ার পর লিটন দাসকে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে আশা জাগিয়েছিলেন মুমিনুল। ক্যারিবীয় স্পিনারদের সামলে ভালোভাবেই এগুচ্ছিলেন তারা। কিন্তু এবার আঘাত হানেন ওয়ারিকান। তার ফুল লেন্থের ডেলিভারি পেছনে পায়ে ডিফেন্ড করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড শর্ট লেগে দাঁড়ানো কর্নওয়ালের হাতে তুলে দেন মুমিনুল। তার ব্যাট থেকে আসে ৬৮ বলে ২৬ রান।

দলীয় রান দেড়শ হওয়ার আগেই ছয় উইকেট হারানোর পরই মূলত ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় ক্যারিবীয়দের হাতে। তবু স্বাগতিকদের আশা ছিল লিটন দাস ও মেহেদি হাসান মিরাজের জুটি। যারা প্রথম ইনিংসে সপ্তম উইকেটে যোগ করেছিল ১২৬ রান। কিন্তু এ ইনিংসে আর তা হয়নি। জুটির সংগ্রহ মাত্র ৬ রান হতেই কর্নওয়ালের বলে কট বিহাইন্ড হন ২২ রান করা লিটন।

পরের জুটিতে তাইজুল ইসলাম ও মেহেদি মিরাজ খেলেন প্রায় ৬ ওভার। এ জুটিও ভাঙেন কর্নওয়াল। তার বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন তাইজুল। রিভিউ নিয়েও নিজের উইকেট বাঁচাতে পারেননি ২৫ বলে ৮ রান করা তাইজুল। দিনের তখনও বাকি ৫.৫ ওভার, দলের রান ৮ উইকেটে ১৬৩। নবম উইকেট জুটিতে নাঈম-মিরাজ খেলেন ৫.৩ ওভার।

বল হাতে নিয়ে ফের আঘাত হানেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক ব্রাথওয়েট। উইকেট না পড়লে সেটিই হতে পারত দিনের শেষ ওভার। প্রথম দুই বলে দুইটি বাই চার পায় বাংলাদেশ। তৃতীয় বলে সিঙ্গেল নিয়ে নাঈমকে স্ট্রাইক দেন মিরাজ। আগের তিনটি বল লেগস্ট্যাম্পের বাইরে পিচ করায় চতুর্থ বলটি ব্যাট উঠিয়ে প্যাডআপ করেন নাঈম।

ক্যারিবীয়দের জোরালো আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি নাঈম। পরে প্রাণপন চেষ্টা করেও দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যেতে পারেননি মিরাজ। থামতে হয়েছে জয় থেকে ১৭ রান দূরেই।

বিজনেস আওয়ার/১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের আরো সংবাদ