ঢাকা , রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১২ কোম্পানির ক্যাটাগরি পরিবর্তনের বিষয়ে মতামত চায় ডিএসই

  • পোস্ট হয়েছে : ০৭:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • 52

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করেনি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ১২টি কোম্পানি। এখন কোম্পানিগুলোকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে পাঠানো হবে কিনা, তা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। যে কারনে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মতামত চেয়ে চিঠি দিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ।

ডিএসইর লিস্টিং রেগুলেশন অনুযায়ী, কোম্পানিগুলোকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরের বিধান রয়েছে। তবে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) জারি করা একটি নির্দেশনার কারণে কোম্পানিগুলোর ক্যাটাগরি পরিবর্তনের বিষয়ে কিছুটা অস্পষ্টতা রয়েছে।

তাই নিয়মিত এজিএম না করা ১২টি কোম্পানির ক্যাটাগরি পরিবর্তনের বিষয়ে বিএসইসির কাছে মতামত চেয়েছে ডিএসই। তবে এ বিষয়ে বিএসইসি এখনও কোনো মতামত জানায়নি বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) আব্দুল মতিন পাটোয়ারী বিএসইসির কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

নির্ধারিত সময়ে এজিএম না করা কোম্পানিগুলো হলো- আমান কটন, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং, আমান ফিড, অ্যামবি ফার্মাসিউটিক্যালস, কনফিডেন্স সিমেন্ট, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, লিবরা ইনফিউশন, রিং সাইন টেক্সটাইলস, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, একটিভ ফাইন কেমিক্যাল ও অ্যাপোলো ইস্পাত।

এর মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানি রয়েছে- ১০টি। আর বাকি দুটি ‘বি’ ক্যটাগরির।

জানা গেছে, ডিএসইর লিস্টিং রুলস ২৪(২) অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত কোম্পানি প্রতি কেলেন্ডার বছরে বার্ষিক সাধারন সভা (এজিএম) আয়োজন করতে হবে। আর কোম্পানি আইনে ওই এজিএমে বিস্তারিত আলোচনা করার কথা বলা হয়েছে।

এদিকে বিএসইসির গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর জারি করা নির্দেশনায় বলা রয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ে এজিএম করতে ব্যর্থ হলে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হবে। তবে আইনগত জটিলতার ক্ষেত্রে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে পাঠানোর জন্য সর্বোচ্চ ২ বছর বিবেচনা করা হবে।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, আমান কটন, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ ও আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং ২০২০ সালের ৩০ জুন হিসাব বছরের এজিএম করে নাই। তবে এজিএম না করার কারণ ডিএসইকে অবহিত করেনি কোম্পানি দু’টি।

এদিকে আমান ফিড ও রিং সাইন টেক্সটাইলসের ২০২০ সালের এজিএম বাতিল করা হয়েছে। বৈশ্বয়িক মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রভাবে একটিভ ফাইন কেমিক্যালও একই বছর এজিএম করেনি। সাময়িকভাবে উৎপাদন বন্ধ থাকার কারণ একই বছর এজিএম করেনি সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ। বার্ষিক হিসাব সংক্রান্ত পর্ষদ সভা বাতিল হওয়ায় ২০১৯ ও ২০২০ সালের এজিএম করেনি লিবরা ইনফিউশনস।

এছাড়া আদালতের সিদ্ধান্ত না আসায় কনফিডেন্স সিমেন্ট ২০২০ সালে এবং ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও অ্যাপোলো ইস্পাত ২০১৯ ও ২০২০ সালের এজিএম করে নাই।

এদিকে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, লিবরা ইনফিউশন ও অ্যাপোলো ইস্পাত পরপর দুই বছর ধরে এজিএম করেনি। ফলে অ্যাপোলো ইস্পাত ও লিবরা ইনফিউশনকে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর বিএসইসি এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা। ওই নির্দেশনার আলোকে ২ সেপ্টেম্বর অ্যাপোলো ইস্পাতকে ‘জেড’ থেকে ‘বি’ ক্যাটাগরি এবং লিবরা ইনফিউশনকে ‘জেড’ থেকে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হয়।

এছাড়া ২০২০ সালের এজিএম না করার কারণে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের বিষয়টি অবহিত করে কোম্পানিগুলোকে গত ৬ জানুয়ারি চিঠি দিয়েছে ডিএসই। মাত্র তিনটি কোম্পানি ডিএসইর ওই চিঠির জবাব দিয়েছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে ডিএসই মনে করে, আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে এজিএম না করার কারণে কোম্পানিগুলো বর্তমান ক্যাটাগরিতে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছে। ফলে কোম্পানিগুলোকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা প্রয়োজন।

তাই কোম্পানিগুলোর ক্যাটাগরি পরিবর্তনে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এ বিষয়ে বিএসইসির মতামত চেয়েছে ডিএসই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্বে) আব্দুল মতিন পাটোয়ারী বলেন, ‘ডিএসই লক্ষ্য করেছে বেশ কিছু কোম্পানি নির্ধারিত সময়ে এজিএম করেনি। ফলে কোম্পানিগুলোর ক্যাটাগরি পরিবর্তন করা প্রয়োজন। তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এ বিষয়ে বিএসইসির মতামত চাওয়া হয়েছে। বিএসইসির দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কোম্পানিগুলোর ক্যাটাগরি পরিবর্তন করা হবে।’

বিজনেস আওয়ার/১৫ জানুয়ারি, ২০২১/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

১২ কোম্পানির ক্যাটাগরি পরিবর্তনের বিষয়ে মতামত চায় ডিএসই

পোস্ট হয়েছে : ০৭:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করেনি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ১২টি কোম্পানি। এখন কোম্পানিগুলোকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে পাঠানো হবে কিনা, তা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। যে কারনে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মতামত চেয়ে চিঠি দিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ।

ডিএসইর লিস্টিং রেগুলেশন অনুযায়ী, কোম্পানিগুলোকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরের বিধান রয়েছে। তবে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) জারি করা একটি নির্দেশনার কারণে কোম্পানিগুলোর ক্যাটাগরি পরিবর্তনের বিষয়ে কিছুটা অস্পষ্টতা রয়েছে।

তাই নিয়মিত এজিএম না করা ১২টি কোম্পানির ক্যাটাগরি পরিবর্তনের বিষয়ে বিএসইসির কাছে মতামত চেয়েছে ডিএসই। তবে এ বিষয়ে বিএসইসি এখনও কোনো মতামত জানায়নি বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) আব্দুল মতিন পাটোয়ারী বিএসইসির কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

নির্ধারিত সময়ে এজিএম না করা কোম্পানিগুলো হলো- আমান কটন, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং, আমান ফিড, অ্যামবি ফার্মাসিউটিক্যালস, কনফিডেন্স সিমেন্ট, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, লিবরা ইনফিউশন, রিং সাইন টেক্সটাইলস, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, একটিভ ফাইন কেমিক্যাল ও অ্যাপোলো ইস্পাত।

এর মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানি রয়েছে- ১০টি। আর বাকি দুটি ‘বি’ ক্যটাগরির।

জানা গেছে, ডিএসইর লিস্টিং রুলস ২৪(২) অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত কোম্পানি প্রতি কেলেন্ডার বছরে বার্ষিক সাধারন সভা (এজিএম) আয়োজন করতে হবে। আর কোম্পানি আইনে ওই এজিএমে বিস্তারিত আলোচনা করার কথা বলা হয়েছে।

এদিকে বিএসইসির গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর জারি করা নির্দেশনায় বলা রয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ে এজিএম করতে ব্যর্থ হলে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হবে। তবে আইনগত জটিলতার ক্ষেত্রে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে পাঠানোর জন্য সর্বোচ্চ ২ বছর বিবেচনা করা হবে।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, আমান কটন, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ ও আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং ২০২০ সালের ৩০ জুন হিসাব বছরের এজিএম করে নাই। তবে এজিএম না করার কারণ ডিএসইকে অবহিত করেনি কোম্পানি দু’টি।

এদিকে আমান ফিড ও রিং সাইন টেক্সটাইলসের ২০২০ সালের এজিএম বাতিল করা হয়েছে। বৈশ্বয়িক মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রভাবে একটিভ ফাইন কেমিক্যালও একই বছর এজিএম করেনি। সাময়িকভাবে উৎপাদন বন্ধ থাকার কারণ একই বছর এজিএম করেনি সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ। বার্ষিক হিসাব সংক্রান্ত পর্ষদ সভা বাতিল হওয়ায় ২০১৯ ও ২০২০ সালের এজিএম করেনি লিবরা ইনফিউশনস।

এছাড়া আদালতের সিদ্ধান্ত না আসায় কনফিডেন্স সিমেন্ট ২০২০ সালে এবং ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও অ্যাপোলো ইস্পাত ২০১৯ ও ২০২০ সালের এজিএম করে নাই।

এদিকে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, লিবরা ইনফিউশন ও অ্যাপোলো ইস্পাত পরপর দুই বছর ধরে এজিএম করেনি। ফলে অ্যাপোলো ইস্পাত ও লিবরা ইনফিউশনকে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর বিএসইসি এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা। ওই নির্দেশনার আলোকে ২ সেপ্টেম্বর অ্যাপোলো ইস্পাতকে ‘জেড’ থেকে ‘বি’ ক্যাটাগরি এবং লিবরা ইনফিউশনকে ‘জেড’ থেকে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হয়।

এছাড়া ২০২০ সালের এজিএম না করার কারণে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের বিষয়টি অবহিত করে কোম্পানিগুলোকে গত ৬ জানুয়ারি চিঠি দিয়েছে ডিএসই। মাত্র তিনটি কোম্পানি ডিএসইর ওই চিঠির জবাব দিয়েছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে ডিএসই মনে করে, আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে এজিএম না করার কারণে কোম্পানিগুলো বর্তমান ক্যাটাগরিতে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছে। ফলে কোম্পানিগুলোকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা প্রয়োজন।

তাই কোম্পানিগুলোর ক্যাটাগরি পরিবর্তনে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এ বিষয়ে বিএসইসির মতামত চেয়েছে ডিএসই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্বে) আব্দুল মতিন পাটোয়ারী বলেন, ‘ডিএসই লক্ষ্য করেছে বেশ কিছু কোম্পানি নির্ধারিত সময়ে এজিএম করেনি। ফলে কোম্পানিগুলোর ক্যাটাগরি পরিবর্তন করা প্রয়োজন। তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এ বিষয়ে বিএসইসির মতামত চাওয়া হয়েছে। বিএসইসির দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কোম্পানিগুলোর ক্যাটাগরি পরিবর্তন করা হবে।’

বিজনেস আওয়ার/১৫ জানুয়ারি, ২০২১/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: