ঢাকা , রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাঈদ খোকনসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন ৩ মার্চ

  • পোস্ট হয়েছে : ১১:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • 50

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেট-২ এ দোকান বরাদ্দে ৩৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৩ মার্চ দিন ধার্য করেছেন আদালত।

বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রতিবেদন দাখিল করেনি। এজন্য ঢাকা মহানগর হাকিম শহিদুল ইসলাম প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন এ দিন ধার্য করেন। আদালতের পেশকার আতিক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আশেক ইমামের আদালতে মার্কেটের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন এ মামলা করেন। ৩০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আশেক ইমাম আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন- ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরদার, সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলী মাজেদ, কামরুল হাসান, হেলেনা আক্তার, আতিকুর রহমান ও ওয়ালিদ।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি সাঈদ খোকন, ইউসুফ আলী সরদার ও মাজেদ পরস্পর যোগসাজশে ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেট-২ এর মূলভবনের নকশাবহির্ভূত অংশে স্থাপনা তৈরি করেন এবং দোকান বরাদ্দের ঘোষণা দেন। ঘোষণা শুনে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা দোকান বরাদ্দ নেয়ার জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

এরপর ব্যবসায়ীরা আসামি কামরুল হাসান, হেলেনা আক্তার, আতিকুর রহমান স্বপন ও ওয়ালিদের কাছে যান। তখন তারা বলেন, আপনার টাকা জমাদানের ব্যবস্থা করুন। আমরা আপনাদের দোকান বরাদ্দ দিয়ে দেব।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেট-২ এর মূল মার্কেটে যাদের নামে দোকান বরাদ্দ রয়েছে তাদের কামরুল হাসান, হেলেনা আক্তার, আতিকুর রহমান স্বপন ও ওয়ালিদ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ভুল বুঝিয়ে এ মার্কেটে দোকান বরাদ্দ নিতে বাধ্য করেন। আসামি সাঈদ খোকন ও মাজেদসহ অন্যরা মিলে প্রতারণা করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন এবং ব্যবসায়ীদের নকশাবহির্ভূত দোকান বরাদ্দ দেন।

দোকান বরাদ্দের অনৈতিক আইনবহির্ভূত বিষয় জেনে মামলার বাদী দেলোয়ার হোসেন দুলু আসামিদের দোকান বরাদ্দের প্রক্রিয়া বন্ধ এবং ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে কোটি কোটি টাকা লেনদেনে বাধা দেন। এরপর আসামিরা দেলোয়ারকে বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দেন।

২০১৭ সালের ২০ আগস্ট আসামি ইউসুফ আলী সরদার, আতিকুর রহমান স্বপন ও ওয়ালিদ বাদী দেলোয়ারকে বনানীতে ডেকে বলেন, ‘তুই ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেট-২, এর এক্সটেনশন ব্লক- এ, বি, সি এর দোকান বরাদ্দে বাধা দেয়া বন্ধ কর, নইলে খুব খারাপ হবে।’

এ সময় তিনি নিজের ও পরিবারের কথা চিন্তা করে তাদের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে সাহস পাননি। আসামি সাঈদ খোকন, ইউসুফ আলী সরদার ও মাজেদের নির্দেশে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আসামি কামরুল হাসান, হেলেনা আক্তার, আতিকুর রহমান স্বপন ও ওয়ালিদ দোকান বরাদ্দের কথা বলে বিনা রসিদে কোটি কোটি টাকা গ্রহণ করেন।

সাধারণ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বিনা রশিদে বা কোনো প্রকার ডকুমেন্টস ব্যতীত আসামিদের কাছে বরাদ্দের বিষয়ে টাকা জমা দিয়ে প্রতারণা ভয়ে ভীত হয়ে মামলার বাদী দেলোয়ারের কাছে পরামর্শের জন্য এলে তিনি তাদের বলেন যে, যেহেতু আপনারা অনেক টাকা ইতোমধ্যে বিনা রসিদে নগদ প্রদান করেছেন এবং ভবিষ্যতেও টাকা জমা দেবেন, সেহেতু আইনগত প্রমাণ রাখার জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বৃহৎ স্বার্থের কথা চিন্তা করে ব্যবসায়ীদের অনুরোধে তার প্রতিষ্ঠানের নামে ফুলবাড়িয়া উত্তরা ব্যাংক লিমিটেডের অ্যাকাউন্টে টাকা জমার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর ভুক্তভোগীরা আসামি সাঈদ খোকনের অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন সময় ৩৪ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ টাকা জমা দেন।

বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস তার এখতিয়ারাধীন এলাকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানের অংশ হিসেবে ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেট-২ এর এক্সটেনশন ব্লক এ, বি, সি এর স্থাপনা ভেঙে উচ্ছেদ অভিযান চালান।

এই উচ্ছেদের বিষয়ে বাদী দেলোয়ারসহ অপর ব্যবসায়ীরা জানতে পারেন যে, সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনসহ অন্য আসামিরা ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেট-২ এর এক্সটেনশন ব্লক এ, বি, সি এর মূল ভবনের নকশাবহির্ভূত এবং অবৈধ উপায়ে অনৈতিকভাবে অর্থ আত্মসাৎ করার জন্য প্রতারণা করে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করেন।

আসামিরা অবৈধভাবে অনৈতিক উপায়ে পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে জালিয়াতি করেন। অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শন করায় দণ্ডবিধি ১৮৬০ সালের ৩৪/১০৯/১২০(খ)/৪০৬/৪১৭/৪৬৮/৪৭৭(ক) এবং ৫০৬ বিধান লঙ্ঘন করায় বাদী আদালতে এসে মামলা করেন।

বিজনেস আওয়ার/২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

সাঈদ খোকনসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন ৩ মার্চ

পোস্ট হয়েছে : ১১:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেট-২ এ দোকান বরাদ্দে ৩৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৩ মার্চ দিন ধার্য করেছেন আদালত।

বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রতিবেদন দাখিল করেনি। এজন্য ঢাকা মহানগর হাকিম শহিদুল ইসলাম প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন এ দিন ধার্য করেন। আদালতের পেশকার আতিক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আশেক ইমামের আদালতে মার্কেটের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন এ মামলা করেন। ৩০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আশেক ইমাম আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন- ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরদার, সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলী মাজেদ, কামরুল হাসান, হেলেনা আক্তার, আতিকুর রহমান ও ওয়ালিদ।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি সাঈদ খোকন, ইউসুফ আলী সরদার ও মাজেদ পরস্পর যোগসাজশে ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেট-২ এর মূলভবনের নকশাবহির্ভূত অংশে স্থাপনা তৈরি করেন এবং দোকান বরাদ্দের ঘোষণা দেন। ঘোষণা শুনে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা দোকান বরাদ্দ নেয়ার জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

এরপর ব্যবসায়ীরা আসামি কামরুল হাসান, হেলেনা আক্তার, আতিকুর রহমান স্বপন ও ওয়ালিদের কাছে যান। তখন তারা বলেন, আপনার টাকা জমাদানের ব্যবস্থা করুন। আমরা আপনাদের দোকান বরাদ্দ দিয়ে দেব।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেট-২ এর মূল মার্কেটে যাদের নামে দোকান বরাদ্দ রয়েছে তাদের কামরুল হাসান, হেলেনা আক্তার, আতিকুর রহমান স্বপন ও ওয়ালিদ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ভুল বুঝিয়ে এ মার্কেটে দোকান বরাদ্দ নিতে বাধ্য করেন। আসামি সাঈদ খোকন ও মাজেদসহ অন্যরা মিলে প্রতারণা করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন এবং ব্যবসায়ীদের নকশাবহির্ভূত দোকান বরাদ্দ দেন।

দোকান বরাদ্দের অনৈতিক আইনবহির্ভূত বিষয় জেনে মামলার বাদী দেলোয়ার হোসেন দুলু আসামিদের দোকান বরাদ্দের প্রক্রিয়া বন্ধ এবং ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে কোটি কোটি টাকা লেনদেনে বাধা দেন। এরপর আসামিরা দেলোয়ারকে বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দেন।

২০১৭ সালের ২০ আগস্ট আসামি ইউসুফ আলী সরদার, আতিকুর রহমান স্বপন ও ওয়ালিদ বাদী দেলোয়ারকে বনানীতে ডেকে বলেন, ‘তুই ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেট-২, এর এক্সটেনশন ব্লক- এ, বি, সি এর দোকান বরাদ্দে বাধা দেয়া বন্ধ কর, নইলে খুব খারাপ হবে।’

এ সময় তিনি নিজের ও পরিবারের কথা চিন্তা করে তাদের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে সাহস পাননি। আসামি সাঈদ খোকন, ইউসুফ আলী সরদার ও মাজেদের নির্দেশে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আসামি কামরুল হাসান, হেলেনা আক্তার, আতিকুর রহমান স্বপন ও ওয়ালিদ দোকান বরাদ্দের কথা বলে বিনা রসিদে কোটি কোটি টাকা গ্রহণ করেন।

সাধারণ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বিনা রশিদে বা কোনো প্রকার ডকুমেন্টস ব্যতীত আসামিদের কাছে বরাদ্দের বিষয়ে টাকা জমা দিয়ে প্রতারণা ভয়ে ভীত হয়ে মামলার বাদী দেলোয়ারের কাছে পরামর্শের জন্য এলে তিনি তাদের বলেন যে, যেহেতু আপনারা অনেক টাকা ইতোমধ্যে বিনা রসিদে নগদ প্রদান করেছেন এবং ভবিষ্যতেও টাকা জমা দেবেন, সেহেতু আইনগত প্রমাণ রাখার জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বৃহৎ স্বার্থের কথা চিন্তা করে ব্যবসায়ীদের অনুরোধে তার প্রতিষ্ঠানের নামে ফুলবাড়িয়া উত্তরা ব্যাংক লিমিটেডের অ্যাকাউন্টে টাকা জমার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর ভুক্তভোগীরা আসামি সাঈদ খোকনের অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন সময় ৩৪ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ টাকা জমা দেন।

বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস তার এখতিয়ারাধীন এলাকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানের অংশ হিসেবে ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেট-২ এর এক্সটেনশন ব্লক এ, বি, সি এর স্থাপনা ভেঙে উচ্ছেদ অভিযান চালান।

এই উচ্ছেদের বিষয়ে বাদী দেলোয়ারসহ অপর ব্যবসায়ীরা জানতে পারেন যে, সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনসহ অন্য আসামিরা ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেট-২ এর এক্সটেনশন ব্লক এ, বি, সি এর মূল ভবনের নকশাবহির্ভূত এবং অবৈধ উপায়ে অনৈতিকভাবে অর্থ আত্মসাৎ করার জন্য প্রতারণা করে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করেন।

আসামিরা অবৈধভাবে অনৈতিক উপায়ে পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে জালিয়াতি করেন। অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শন করায় দণ্ডবিধি ১৮৬০ সালের ৩৪/১০৯/১২০(খ)/৪০৬/৪১৭/৪৬৮/৪৭৭(ক) এবং ৫০৬ বিধান লঙ্ঘন করায় বাদী আদালতে এসে মামলা করেন।

বিজনেস আওয়ার/২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: