ঢাকা , শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে

  • পোস্ট হয়েছে : ০১:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • 1

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে অনুষ্ঠিত কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির ৫ দিনব্যাপী বৈঠকের সমাপনী দিনে এলডিসি থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে পদার্পণের সুপারিশ করা হয়।

ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এ বৈঠক স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বর্তমান অবস্থান নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ সময় বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সুপারিশ করা হয়। এর ফলে ২০২৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জানানো হয়, মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ সূচক এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা এ তিনটি সূচকে শর্ত অনুযায়ী উন্নতি করায় জাতিসংঘের সুপারিশ পেয়েছে বাংলাদেশ। এর ফলে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পাবে বাংলাদেশ। যদিও চূড়ান্ত স্বীকৃতি পেতে কয়েক বছর সময় লাগতে পরে।

বর্তমানে বিশ্বের ৪৬টি দেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় রয়েছে। ১৯৭৫ সাল থেকে এ তালিকায় ছিল বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে প্রথম এবং শুক্রবার কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে চূড়ান্ত সুপারিশ পাওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ কার্যত উন্নয়নশীল দেশের কাতারে প্রবেশ করলো বলে মত সংশ্লিষ্টদের।

স্বাধীনতার ৫০ বছরের মধ্যেই দুর্বার গতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। গত দুই দশকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বা সামাজিক উন্নয়ন- যে কোনো সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতি অভূতপূর্ব। সামাজিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, দারিদ্র্যতা হ্রাস, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি সব ক্ষেত্রই বিশ্বে বাংলাদেশ এক বিস্ময়ের নাম।

আশির দশকে স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে থাকা বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে পৌঁছে গেল উন্নয়নশীলের কাতারে। এ জন্য পেরুতে হয়েছে বন্ধুর পথ। ২০২০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল এক হাজার ৮২৭ ডলার। মানবসম্পদ সূচকে বাংলাদেশের পয়েন্ট ৭৫ দশমিক ৩ কিন্তু উন্নয়নশীল হতে প্রয়োজন ছিল আরো কম-৬৬।

অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকের বাংলাদেশের অর্জন ২৫ দশমিক ২ পয়েন্ট। বলা যায় সব মানদণ্ডে গতিশীল বাংলাদেশ। আর এসব পর্যালোচনা শেষে ইউএন-সিডিপির সভায় বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ আসে।

উল্লেখ্য, স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বের হতে দ্বিতীয় দফায় জাতিসংঘের আনুষ্ঠানিক পর্যালোচনার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। ২২-২৫ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) এলডিসিগুলোর জন্য ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা বৈঠক করে। সিডিপি দ্বিতীয় দফায় এলডিসি থেকে বের হওয়ার প্রয়োজনীয় মানদণ্ড বাংলাদেশ পূরণ করতে পেরেছে কিনা তা নিয়ে পর্যালোচনা হয়। বাংলাদেশের পক্ষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেন।

প্রথম দফায় ২০১৮ সালের মার্চে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বের হওয়ার যোগ্য হিসেবে সিডিপির সুপারিশ লাভ করে। নিয়ম হচ্ছে এলডিসি থেকে বের হতে সিডিপির পরপর দুটি পর্যালোচনায় উত্তরণের স্বীকৃতি পেতে হয়। এ স্বীকৃতি পাওয়ার পর আরো তিন বছর এলডিসি হিসেবে থাকে একটি দেশ। তারপর উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যাত্রা শুরু হয়।

বিজনেস আওয়ার/২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে

পোস্ট হয়েছে : ০১:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে অনুষ্ঠিত কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির ৫ দিনব্যাপী বৈঠকের সমাপনী দিনে এলডিসি থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে পদার্পণের সুপারিশ করা হয়।

ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এ বৈঠক স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বর্তমান অবস্থান নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ সময় বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সুপারিশ করা হয়। এর ফলে ২০২৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জানানো হয়, মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ সূচক এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা এ তিনটি সূচকে শর্ত অনুযায়ী উন্নতি করায় জাতিসংঘের সুপারিশ পেয়েছে বাংলাদেশ। এর ফলে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পাবে বাংলাদেশ। যদিও চূড়ান্ত স্বীকৃতি পেতে কয়েক বছর সময় লাগতে পরে।

বর্তমানে বিশ্বের ৪৬টি দেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় রয়েছে। ১৯৭৫ সাল থেকে এ তালিকায় ছিল বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে প্রথম এবং শুক্রবার কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে চূড়ান্ত সুপারিশ পাওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ কার্যত উন্নয়নশীল দেশের কাতারে প্রবেশ করলো বলে মত সংশ্লিষ্টদের।

স্বাধীনতার ৫০ বছরের মধ্যেই দুর্বার গতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। গত দুই দশকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বা সামাজিক উন্নয়ন- যে কোনো সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতি অভূতপূর্ব। সামাজিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, দারিদ্র্যতা হ্রাস, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি সব ক্ষেত্রই বিশ্বে বাংলাদেশ এক বিস্ময়ের নাম।

আশির দশকে স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে থাকা বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে পৌঁছে গেল উন্নয়নশীলের কাতারে। এ জন্য পেরুতে হয়েছে বন্ধুর পথ। ২০২০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল এক হাজার ৮২৭ ডলার। মানবসম্পদ সূচকে বাংলাদেশের পয়েন্ট ৭৫ দশমিক ৩ কিন্তু উন্নয়নশীল হতে প্রয়োজন ছিল আরো কম-৬৬।

অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকের বাংলাদেশের অর্জন ২৫ দশমিক ২ পয়েন্ট। বলা যায় সব মানদণ্ডে গতিশীল বাংলাদেশ। আর এসব পর্যালোচনা শেষে ইউএন-সিডিপির সভায় বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ আসে।

উল্লেখ্য, স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বের হতে দ্বিতীয় দফায় জাতিসংঘের আনুষ্ঠানিক পর্যালোচনার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। ২২-২৫ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) এলডিসিগুলোর জন্য ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা বৈঠক করে। সিডিপি দ্বিতীয় দফায় এলডিসি থেকে বের হওয়ার প্রয়োজনীয় মানদণ্ড বাংলাদেশ পূরণ করতে পেরেছে কিনা তা নিয়ে পর্যালোচনা হয়। বাংলাদেশের পক্ষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেন।

প্রথম দফায় ২০১৮ সালের মার্চে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বের হওয়ার যোগ্য হিসেবে সিডিপির সুপারিশ লাভ করে। নিয়ম হচ্ছে এলডিসি থেকে বের হতে সিডিপির পরপর দুটি পর্যালোচনায় উত্তরণের স্বীকৃতি পেতে হয়। এ স্বীকৃতি পাওয়ার পর আরো তিন বছর এলডিসি হিসেবে থাকে একটি দেশ। তারপর উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যাত্রা শুরু হয়।

বিজনেস আওয়ার/২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: