ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ছাত্রলীগ নেতার সহযোগিতায় মিনা পাগলি এখন সুস্থ

  • পোস্ট হয়েছে : ০৬:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ মার্চ ২০২১
  • 112

তপু আহম্মেদ, টাঙ্গাইল : মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় গেট দিয়ে প্রবেশের পর হাতের বাম পাশে একটি ঝুপড়ী ঘর। সেই ঘরেই বসবাস করেন মিনা পাগলি। ২০১৮ সাল থেকে ভিক্ষা করে গেটের পাশেই ঘুমাতো সে। হঠাৎই পা ভেঙে যায় তার। যার ফলে উঠে দাঁড়াতে পারতোনা সে। দীর্ঘ ১ বছর অসুস্থতায় আর ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দিন পাড় করায় সারা শরীরে পানি জমে যায় তার। হাসপাতালেও নেয়া হয়েছিল ২/৩ বার, সেখান থেকেও একটু সুস্থ হয়েই পালিয়ে আসে।

মিনা পাগলি অনেকটা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা মানিক শীল। অসুস্থ অবস্থা থেকে অদ্যাবধি তিন বেলা খাবারসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যোগান দিয়ে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ওই নেতা।

মানিকের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. হারুন-অর-রশিদ রাসেল এর সহযোগিতায় নিয়মিত চেকআপে শরীরের পানি কমতে থাকে। এরপর আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়িয়ে হাটা শুরু করেন মিনা পাগলি। এর মাঝেই পাগলির সখ জাগে একটি ঘরের, আবদার করে মানিকের কাছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় একটি চৌকি জোগাড় করে ঝুপড়ী ঘর তুলে থাকার ব্যবস্থা করে দেন মানিক। বর্তমানে মিনা পাগলী সুস্থ ও ঝুপড়ী ঘরে বসবাস করছে।

অসুস্থ থাকাকালীন সময়ে অপরিষ্কার থাকায় কেউ এগিয়ে যায়নি পাগলীর কাছে, এখন অনেকেই বাড়িয়ে দিয়েছে সাহায্যের হাত। পাগলী শুধু এতটুকুই বলতে পারে, তার বাড়ি নোয়াখালী, দুই ভাই তাকে বিক্রি করে দিয়েছিল নিষিদ্ধ পল্লীতে।

মানিক শীল বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ মানবিক কাজে লিপ্ত আছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বুকে লালন করা একজন ছাত্রলীগকর্মীও আমি। জাতির পিতার আদর্শে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একে অপরকে সহযোগিতা করার পাশাপাশি দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নেয়াও আমার দায়িত্ব।

সে জানায়, আমি আমার সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করেছি মিনা আপাকে সহযোগিতা করার। ভারসাম্যহীন হলেও সে মানুষ, তাঁর বাঁচার অধিকার আছে। এ কাজে আমাকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাই সৈকত ভাই, আলামিন, রাফিউল, আকিব, হৃদয়, হামিদুল, শাফিসহ আরো অনেকে।

ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্র পরিচালক প্রফেসর ড. এস.এম সাইফুল্লাহ বলেন, এটি বিশেষ একটি মানবিক গুণাবলী। এ ধরণের কাজে আমাদের সকলেরই এগিয়ে আসা উচিৎ। মানিক শীলের পাশাপাশি আমরাও ব্যক্তিগত ভাবে মিনা পাগলীকে সহযোগিতা করবো

বিজনেস আওয়ার/০৯ মার্চ, ২০২১/টিএ/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ছাত্রলীগ নেতার সহযোগিতায় মিনা পাগলি এখন সুস্থ

পোস্ট হয়েছে : ০৬:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ মার্চ ২০২১

তপু আহম্মেদ, টাঙ্গাইল : মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় গেট দিয়ে প্রবেশের পর হাতের বাম পাশে একটি ঝুপড়ী ঘর। সেই ঘরেই বসবাস করেন মিনা পাগলি। ২০১৮ সাল থেকে ভিক্ষা করে গেটের পাশেই ঘুমাতো সে। হঠাৎই পা ভেঙে যায় তার। যার ফলে উঠে দাঁড়াতে পারতোনা সে। দীর্ঘ ১ বছর অসুস্থতায় আর ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দিন পাড় করায় সারা শরীরে পানি জমে যায় তার। হাসপাতালেও নেয়া হয়েছিল ২/৩ বার, সেখান থেকেও একটু সুস্থ হয়েই পালিয়ে আসে।

মিনা পাগলি অনেকটা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা মানিক শীল। অসুস্থ অবস্থা থেকে অদ্যাবধি তিন বেলা খাবারসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যোগান দিয়ে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ওই নেতা।

মানিকের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. হারুন-অর-রশিদ রাসেল এর সহযোগিতায় নিয়মিত চেকআপে শরীরের পানি কমতে থাকে। এরপর আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়িয়ে হাটা শুরু করেন মিনা পাগলি। এর মাঝেই পাগলির সখ জাগে একটি ঘরের, আবদার করে মানিকের কাছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় একটি চৌকি জোগাড় করে ঝুপড়ী ঘর তুলে থাকার ব্যবস্থা করে দেন মানিক। বর্তমানে মিনা পাগলী সুস্থ ও ঝুপড়ী ঘরে বসবাস করছে।

অসুস্থ থাকাকালীন সময়ে অপরিষ্কার থাকায় কেউ এগিয়ে যায়নি পাগলীর কাছে, এখন অনেকেই বাড়িয়ে দিয়েছে সাহায্যের হাত। পাগলী শুধু এতটুকুই বলতে পারে, তার বাড়ি নোয়াখালী, দুই ভাই তাকে বিক্রি করে দিয়েছিল নিষিদ্ধ পল্লীতে।

মানিক শীল বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ মানবিক কাজে লিপ্ত আছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বুকে লালন করা একজন ছাত্রলীগকর্মীও আমি। জাতির পিতার আদর্শে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একে অপরকে সহযোগিতা করার পাশাপাশি দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নেয়াও আমার দায়িত্ব।

সে জানায়, আমি আমার সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করেছি মিনা আপাকে সহযোগিতা করার। ভারসাম্যহীন হলেও সে মানুষ, তাঁর বাঁচার অধিকার আছে। এ কাজে আমাকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাই সৈকত ভাই, আলামিন, রাফিউল, আকিব, হৃদয়, হামিদুল, শাফিসহ আরো অনেকে।

ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্র পরিচালক প্রফেসর ড. এস.এম সাইফুল্লাহ বলেন, এটি বিশেষ একটি মানবিক গুণাবলী। এ ধরণের কাজে আমাদের সকলেরই এগিয়ে আসা উচিৎ। মানিক শীলের পাশাপাশি আমরাও ব্যক্তিগত ভাবে মিনা পাগলীকে সহযোগিতা করবো

বিজনেস আওয়ার/০৯ মার্চ, ২০২১/টিএ/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: