বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : গত ২৪ ঘণ্টায় প্রানঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও ৪৩ জনের মৃত্যূ হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মোট ১ হাজার ৩০৫ জনের মৃত্যু হলো। একই সময়ে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৪ হাজার ০৮ জন। যা একদিনে সর্বোচ্চ। দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯৮ হাজার ৪৮৯ জনে।
বুধবার (১৭ জুন) দুপুরে রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। বুলেটিন উপস্থাপন করেন অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
দেশের ৬১টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭ হাজার ৫২৭জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও চার হাজার আটজনের মধ্যে। ফলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৯৮ হাজার ৪৮৯ জনে। এখন পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫ লাখ ৫১ হাজার ২৪৪টি।
ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৪৩ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো এক হাজার ৩০৫ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও এক হাজার ৯২৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগী। সব মিলিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা এখন ৩৮ হাজার ১৮৯ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৩৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ২৮ জন এবং নারী ১৫ জন। এদের মধ্যে ২ থেকে ১০ বছরের একজন, ১১ থেকে ২০ বছরের একজন, ২১ থেকে ৩০ বছরের একজন, ত্রিশোর্ধ্ব চারজন, চল্লিশোর্ধ্ব চারজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব নয়জন, ষাটোর্ধ্ব ১২ জন, সত্তরোর্ধ্ব নয়জন এবং ৮০ বছরের বেশি বয়সী দুজন রয়েছেন।
২১ জন ঢাকা বিভাগের, ১২ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, চারজন রাজশাহী বিভাগের, দুজন করে খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের এবং একজন করে সিলেট ও রংপুর বিভাগের।
বরাবরের মতো আজও করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পরা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে নানা সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে; যার মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। মানুষকে ঘরে রাখতে পাড়া-মহল্লায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী, র্যাব ও পুলিশ। করোনার বিস্তাররোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।
উল্লেখ্য, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। সবশেষ হিসাবে দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৯৮ হাজার ৪৮৯ জনে। মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৩০৫ জনের। দেশে মোট সুস্থ হয়েছেন ৩৮ হাজার ১৮৯ জন।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন গোটা বিশ্বে তাণ্ডব চালাচ্ছে। চীন পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দিয়ে উঠলেও এখন ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ৮১ লাখের বেশী মানুষ। মৃত প্রায় সাড়ে ৪ লাখ। সুস্থ হয়েছেন ৪২ লাখ ৫০ হাজারের বেশি মানুষ।
বিজনেস আওয়ার/১৭ জুন, ২০২০/এ