বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে অপ্রদর্শিত বা কালো টাকা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাজেটে ৩ বছরের লক-ইন এর প্রস্তাবিত শর্ত প্রত্যাহারের দাবি করেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।
বুধবার (১৭ জুন) ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় অনলাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানিয়েছেন সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম।
তিনি বলেন, তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর কর হার ব্যবধান ১০ শতাংশ ছিল। তবে বাজেটে অতালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার ২.৫০ শতাংশ কমানোর মাধ্যমে সেই ব্যবধান ৭.৫০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। এতে করে ভালো ভালো কোম্পানিগুলো শেয়ারবাজারে আসতে নিরুৎসাহিত হবে। তাই তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর কর হার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন তিনি। এতে করে ভালো ভালো কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসতে উৎসাহিত হবে বলে মনে করেন তিনি।
সিএসই এখনো আইন অনুযায়ী কৌশলগত বিনিয়োগকারী নির্ধারণ করতে পারেনি। কৌশলগত বিনিয়োগকারীর কাছে শেয়ার বিক্রির জন্য চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে (সিএসই) ৫ বছরের জন্য কর অব্যাহতির সুবিধা দেওয়া হলে ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন অনুযায়ী কৌশলগত বিনিয়োগকারী পেতে সহায়ক হবে এবং একই সঙ্গে তুলনামূলক ছোট এক্সচেঞ্জ হিসাবে দেশের পুঁজিবাজারে যথাযথ ভূমিকা পালনে সক্ষম হবে।
স্টক ব্রোকারদের উৎসে কর কর্তনের হার পুনর্নির্ধারণের জন্য বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও এই হার পূর্ববর্তী ০.০৫ শতাংশ বহাল রাখা হয়েছে। অধিকাংশ ব্রোকার হাউজ বর্তমানে লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তিত হওয়া সত্ত্বেও এসব ব্রোকারেজ হাউজগুলো থেকে বর্তমান হারে কর আদায় আয়করের মৌলিক নীতিরও পরিপন্থী বলে আমরা মনে করি। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে স্টক ব্রোকারদের উৎসে কর কর্তনের হার ২০০৬ সালে চালু করা হারে অর্থাৎ ০.০১৫ শতাংশ পুনর্নির্ধারণের জোর দাবি জানানো হয়।
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিনিয়োগ আগ্রহ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে বর্তমানে মূলধনী লাভের ওপর কর হার ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭.৫০ শতাংশ নির্ধারণ করার দাবি করেছেন তিনি।
সিএসইর অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. মিজানুর রহমান বলেন, একটি বিশেষ পরিস্থিতির কারনে ফ্লোর প্রাইসের নির্দেশনাটি দেওয়া হয়। তবে অন্যান্যদের মতো আমরাও শেয়ারবাজারে অবাধ ও উন্মুক্ত লেনদেন চাই। তাই আশা করি অচিরেই বিনিয়োগকারীরা সেই সুযোগ পাবে।
এর আগে গতকাল (১৭ জুন) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষদ বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সঙ্গে (বিএসইসি) আলোচনায় অপ্রদর্শিত অর্থ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকৃত অর্থ সম্পূর্ণভাবে লকইন ফ্রি এবং কর হার ৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে। এলক্ষ্যে কমিশনকে দাবিগুলো বাস্তবায়নে করণীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান করে।
এছাড়া ব্রোকার হাউজগুলোকে শেয়ার লেনদেনের ওপর উৎসে কর ০.০৫ শতাংশের পরিবর্তে ০.০১৫ শতাংশ করা, লভ্যাংশ আয়ের করমুক্ত সীমা ৫০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ টাকা করা, তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর্পোরেট কর হার বিদ্যমান ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ এবং তালিকাভুক্ত ব্যাংক, ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বীমা কোম্পানির কর হার ৩৭.৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩২.৫০ শতাংশ নির্ধারণ করা, দুই মাসের মার্জিন ঋণের সুদ মওকুফ ও চলতি অর্থবছরের সিডিবিএল বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব রক্ষনাবেক্ষণ ফি মওকুফের দাবী জানিয়েছে ডিএসই।
অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন সিএসইর পরিচালক মো: ছায়েদুর রহমান, সোহেল মাহমুদ শাকুর, মো. লিয়াকত হোসাইন চৌধুরী, ব্যারিস্টার আনিতা গাজী ইসলাম, মেজর (অব:) এমদাদুল ইসলাম ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুন-উর-রশীদ।
বিজনেস আওয়ার/১৭ জুন, ২০২০/আরএ