ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিধিনিষেধে দুর্ভোগে পড়েছেন পোশাকশ্রমিকরা

  • পোস্ট হয়েছে : ১০:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ এপ্রিল ২০২১
  • 93

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক (সাভার) : করোনার সংক্রমণ রোধে আজ বুধবার থেকে চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়েছে দেশ। যা চলবে ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত। সরকারঘোষিত এই নিষেধে বন্ধ ঘোষণা করা হয়সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের প্রতিষ্ঠান। শুধু খোলা রয়েছে জরুরি সেবাদানকারী পরিবহন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও পোশাকশিল্প কারখানা।

এদিকে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় শ্রমিক পরিবহনের কথা থাকলেও তা বাস্তবায়ন করেনি কারখানা মালিকরা। ফলে শ্রমিকদের কারখানায় কাজে যোগ দিতে পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে। কেউ যাচ্ছেন হেঁটে আবার কেউ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায়।

এতে করে একদিকে শ্রমিকদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। অন্যদিকে অটোরিকশায় গাদাগাদি করে যাওয়ায় বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের ঝুঁকি। বুধবার (১৪ এপ্রিল) লকডাউনের প্রথম প্রহরে সাভারের বিভিন্ন এলাকায়, অটোরিকশা ও পায়ে হেঁটে কারখানায় যেতে দেখা গেছে শ্রমিকদের।

একদিকে গণপরিবহন বন্ধ, অন্যদিকে পোশাক কারখানা খোলা। এতে পরিবহন-সংকটে ভোগান্তির শিকার পোশাক শ্রমিকরা। পরিবহন সংকট থাকায় সময়মতো কারখানায় পৌঁছতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে অটোরিকশায় গাদাগাদি করেই ছুটে চলেছেন রফতানিযোদ্ধারা।

এক নারী পোশাকশ্রমিক বলেন, লকডাউন হলেই অফিস যেতে সমস্যা হয়। গাড়ি পাওয়া যায় না, রিকশাভাড়া ডাবল হয়ে যায়। আমাদের খরচ বেড়ে যায়। কিন্তু কারখানা কিংবা সরকার তো এই টাকা আমাদের দেবে না। একই কারখানায় ২ থেকে ৩ হাজার শ্রমিক কাজ করি। কার বাড়িতে কার যাতায়াত, এটা বলা কঠিন।

তিনি আরও বলেন,করোনা সংক্রমণের রোগী যদি কোনো এক বাড়িতে আসে তাহলে আমাদেরও করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে। করোনার ঝুঁকি নিয়েই ভয়ে ভয়ে কারখানায় যাচ্ছি। সবার জন্য পরিবহন ব্যবস্থা নেই। তবে কিছু কিছু পোশাক কারখানা আগে থেকেই ব্যক্তিগত পরিবহনে দূরের শ্রমিকদের আনা নেওয়া করে। তবে দুই তিন কিলোমিটারের মধ্যে যেসব শ্রমিক বসবাস করেন, তারা ব্যক্তিগতভাবে যাতায়াত করে থাকেন।

আশুলিয়া সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি লায়ন মোহাম্মদ ইমাম বলেন, পোশাকশিল্প দেশের অর্থনীতির বড় একটা জায়গাজুড়ে রয়েছে। তাই কারখানায় শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে পরিবহন ব্যবস্থা করতে হবে। শুধু পরিবহন ব্যবস্থাই নয়, পরিবহনেও স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। এই খাতে যদি স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা না যায় তাহলে কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ফায়দা হবে বলে আমি মনে করি না।

এ প্রসঙ্গে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা বলেন, পোশাক কারখানায় করোনা নিয়ন্ত্রণ বড় চ্যালেঞ্জ। পরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হলে বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে। কাজেই ব্যক্তিগতভাবে সচেতন হতে হবে। নিজেদের বাঁচাতে নিজেদেরই লড়তে হবে।

বিজনেস আওয়ার/১৪ এপ্রিল, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

বিধিনিষেধে দুর্ভোগে পড়েছেন পোশাকশ্রমিকরা

পোস্ট হয়েছে : ১০:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ এপ্রিল ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক (সাভার) : করোনার সংক্রমণ রোধে আজ বুধবার থেকে চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়েছে দেশ। যা চলবে ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত। সরকারঘোষিত এই নিষেধে বন্ধ ঘোষণা করা হয়সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের প্রতিষ্ঠান। শুধু খোলা রয়েছে জরুরি সেবাদানকারী পরিবহন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও পোশাকশিল্প কারখানা।

এদিকে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় শ্রমিক পরিবহনের কথা থাকলেও তা বাস্তবায়ন করেনি কারখানা মালিকরা। ফলে শ্রমিকদের কারখানায় কাজে যোগ দিতে পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে। কেউ যাচ্ছেন হেঁটে আবার কেউ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায়।

এতে করে একদিকে শ্রমিকদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। অন্যদিকে অটোরিকশায় গাদাগাদি করে যাওয়ায় বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের ঝুঁকি। বুধবার (১৪ এপ্রিল) লকডাউনের প্রথম প্রহরে সাভারের বিভিন্ন এলাকায়, অটোরিকশা ও পায়ে হেঁটে কারখানায় যেতে দেখা গেছে শ্রমিকদের।

একদিকে গণপরিবহন বন্ধ, অন্যদিকে পোশাক কারখানা খোলা। এতে পরিবহন-সংকটে ভোগান্তির শিকার পোশাক শ্রমিকরা। পরিবহন সংকট থাকায় সময়মতো কারখানায় পৌঁছতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে অটোরিকশায় গাদাগাদি করেই ছুটে চলেছেন রফতানিযোদ্ধারা।

এক নারী পোশাকশ্রমিক বলেন, লকডাউন হলেই অফিস যেতে সমস্যা হয়। গাড়ি পাওয়া যায় না, রিকশাভাড়া ডাবল হয়ে যায়। আমাদের খরচ বেড়ে যায়। কিন্তু কারখানা কিংবা সরকার তো এই টাকা আমাদের দেবে না। একই কারখানায় ২ থেকে ৩ হাজার শ্রমিক কাজ করি। কার বাড়িতে কার যাতায়াত, এটা বলা কঠিন।

তিনি আরও বলেন,করোনা সংক্রমণের রোগী যদি কোনো এক বাড়িতে আসে তাহলে আমাদেরও করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে। করোনার ঝুঁকি নিয়েই ভয়ে ভয়ে কারখানায় যাচ্ছি। সবার জন্য পরিবহন ব্যবস্থা নেই। তবে কিছু কিছু পোশাক কারখানা আগে থেকেই ব্যক্তিগত পরিবহনে দূরের শ্রমিকদের আনা নেওয়া করে। তবে দুই তিন কিলোমিটারের মধ্যে যেসব শ্রমিক বসবাস করেন, তারা ব্যক্তিগতভাবে যাতায়াত করে থাকেন।

আশুলিয়া সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি লায়ন মোহাম্মদ ইমাম বলেন, পোশাকশিল্প দেশের অর্থনীতির বড় একটা জায়গাজুড়ে রয়েছে। তাই কারখানায় শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে পরিবহন ব্যবস্থা করতে হবে। শুধু পরিবহন ব্যবস্থাই নয়, পরিবহনেও স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। এই খাতে যদি স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা না যায় তাহলে কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ফায়দা হবে বলে আমি মনে করি না।

এ প্রসঙ্গে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা বলেন, পোশাক কারখানায় করোনা নিয়ন্ত্রণ বড় চ্যালেঞ্জ। পরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হলে বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে। কাজেই ব্যক্তিগতভাবে সচেতন হতে হবে। নিজেদের বাঁচাতে নিজেদেরই লড়তে হবে।

বিজনেস আওয়ার/১৪ এপ্রিল, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: