ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চালু হলো ডিএনসিসি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল

  • পোস্ট হয়েছে : ০১:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২১
  • 91

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে দেশের বৃহত্তর হাসপাতালের উদ্বোধন করা হয়েছে। রাজধানীর মহাখালীতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পাইকারি কাঁচাবাজারের ভবনে স্থাপিত হাজার বেডের হাসপাতালের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডিএনসিসি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল’। রোববার (১৮ এপ্রিল) স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক হাসপাতালটির উদ্বোধন করেন।

হাসপাতাল উদ্বোধন প্রসঙ্গে এর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন বলেন, আজ রোববার হাসপাতালটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে। আজ আংশিক চালু হলেও এ মাসের শেষ নাগাদ এর কার্যক্রম পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হবে।

তিনি বলেন, হাসপাতালটিতে ২১২ শয্যার আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) থাকছে। এছাড়া ২৫০ শয্যার এইচডিইউ (উচ্চ নির্ভরতা ইউনিট), ৫০ বেডের জরুরি বিভাগ (৩০টি পুরুষ, ২০ নারী) ও ৫৪০ (সিঙ্গেল) রুমের আইসোলেশন ব্যবস্থা এখানে রয়েছে। এই রুমগুলো হবে অনেকটা কেবিনের মতো। দ্রুতই বেডের সংখ্যা আরও বাড়বে। আইসিইউ সাপোর্টের যে ফেইজ আছে তার অধিকাংশই এরইমধ্যে প্রস্তুত হয়ে গেছে। সেগুলো যুক্ত করে খুব দ্রুত কাজ শুরু করতে পারব।

একেএম নাসির উদ্দিন বলেন, উদ্বোধনের পর দ্রুত চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু হবে। পুরো কাজ শেষ হওয়ার পরে সবাই বুঝতে পারবে যে কত বড় মানের একটা কিছু হলো। আমাদের কিছু জনবলও প্রয়োজন। হঠাৎ করে এত বড় হাসপাতাল সম্পূর্ণ জনবল দিয়ে চালু করাটা বাংলাদেশে চ্যালেঞ্জের। সেখানে কিছুটা সময় লাগলেও খুব দ্রুতই তা পূরণ হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছেন বা উপসর্গ আছে- এমন রোগীদের এখানে চিকিৎসা দেওয়া হবে। তারা প্রথমে আমাদের ট্রায়াজে প্রবেশ করবেন। সেখানে দুটি জোন আছে। যাদের মৃদু উপসর্গ আছে বা হেঁটেই আসতে পারছে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য তাদের যদি ভর্তি প্রয়োজন না হয় তবে ভর্তি করা হবে না। সেক্ষেত্রে অবশ্যই তাকে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হবে। পরে এসে তিনি আবার রিপোর্ট করতে পারবেন।

নাসির উদ্দিন বলেন, যারা করোনা সংক্রমিত হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আসবে তারা ট্রায়াজ-২ এ চলে যাবে। সেখানে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা আছে। ছয় বেডের একটি আইসিইউ সেটআপ থাকবে নিচ তলাতেই। সেখানে ভেন্টিলেটরের সুযোগও থাকছে। আর তাই ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডেই ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের স্ট্যাবল হওয়ার সুযোগ আছে। সেখানে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে পাঠিয়ে দেওয়া হবে দ্বিতীয় তলার ওয়ার্ডে। সেখানে যদি কারও অবস্থা খারাপ হয় তবে তাকে আমরা পাঠিয়ে দেবো আইসিইউ বা এইচডিইউতে। আর যদি একটু স্ট্যাবল হয় বা ঝুঁকির মাত্রা কমে আসে তবে আমরা তাদের কেবিনে দিয়ে দেবো।

এই কেবিনগুলোতে সেন্ট্রাল অক্সিজেনসহ হাই-ফ্লো নজেল ক্যানোলা সুবিধা থাকবে। এক্ষেত্রে মনিটরের ব্যবস্থাও করা হবে খুব দ্রুত। ওখানে তারা কিছুটা স্ট্যাবল হলে তাদের ধীরে ধীরে ডিসচার্জ হওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এটাই আমাদের আপাতত স্টেপ-১ ও স্টেপ-২ পরিকল্পনা।

হাসপাতালটির পরিচালক আরও বলেন, এটা আসলে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন হাসপাতাল হতে যাচ্ছে। এখানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আর্মড ফোর্সেস ডিভিশন কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের জনবল, আর্থিক সহায়তা, ওষুধসহ বিভিন্ন কিছু দিয়ে সর্বাত্মক সহায়তা দিচ্ছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। আর্মড ফোর্সেস থেকেও চিকিৎসক, নার্সসহ কিছু থাকছে। ডিএনসিসি তাদের জায়গা দিয়েছে এবং একই সঙ্গে অন্যান্য কিছু সাপোর্ট দিয়ে আমাদের সাহায্য করে যাচ্ছে। মূলত এই তিনটি প্রতিষ্ঠান মিলেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

বিজনেস আওয়ার/১৮ এপ্রিল, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

চালু হলো ডিএনসিসি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল

পোস্ট হয়েছে : ০১:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে দেশের বৃহত্তর হাসপাতালের উদ্বোধন করা হয়েছে। রাজধানীর মহাখালীতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পাইকারি কাঁচাবাজারের ভবনে স্থাপিত হাজার বেডের হাসপাতালের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডিএনসিসি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল’। রোববার (১৮ এপ্রিল) স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক হাসপাতালটির উদ্বোধন করেন।

হাসপাতাল উদ্বোধন প্রসঙ্গে এর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন বলেন, আজ রোববার হাসপাতালটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে। আজ আংশিক চালু হলেও এ মাসের শেষ নাগাদ এর কার্যক্রম পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হবে।

তিনি বলেন, হাসপাতালটিতে ২১২ শয্যার আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) থাকছে। এছাড়া ২৫০ শয্যার এইচডিইউ (উচ্চ নির্ভরতা ইউনিট), ৫০ বেডের জরুরি বিভাগ (৩০টি পুরুষ, ২০ নারী) ও ৫৪০ (সিঙ্গেল) রুমের আইসোলেশন ব্যবস্থা এখানে রয়েছে। এই রুমগুলো হবে অনেকটা কেবিনের মতো। দ্রুতই বেডের সংখ্যা আরও বাড়বে। আইসিইউ সাপোর্টের যে ফেইজ আছে তার অধিকাংশই এরইমধ্যে প্রস্তুত হয়ে গেছে। সেগুলো যুক্ত করে খুব দ্রুত কাজ শুরু করতে পারব।

একেএম নাসির উদ্দিন বলেন, উদ্বোধনের পর দ্রুত চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু হবে। পুরো কাজ শেষ হওয়ার পরে সবাই বুঝতে পারবে যে কত বড় মানের একটা কিছু হলো। আমাদের কিছু জনবলও প্রয়োজন। হঠাৎ করে এত বড় হাসপাতাল সম্পূর্ণ জনবল দিয়ে চালু করাটা বাংলাদেশে চ্যালেঞ্জের। সেখানে কিছুটা সময় লাগলেও খুব দ্রুতই তা পূরণ হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছেন বা উপসর্গ আছে- এমন রোগীদের এখানে চিকিৎসা দেওয়া হবে। তারা প্রথমে আমাদের ট্রায়াজে প্রবেশ করবেন। সেখানে দুটি জোন আছে। যাদের মৃদু উপসর্গ আছে বা হেঁটেই আসতে পারছে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য তাদের যদি ভর্তি প্রয়োজন না হয় তবে ভর্তি করা হবে না। সেক্ষেত্রে অবশ্যই তাকে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হবে। পরে এসে তিনি আবার রিপোর্ট করতে পারবেন।

নাসির উদ্দিন বলেন, যারা করোনা সংক্রমিত হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আসবে তারা ট্রায়াজ-২ এ চলে যাবে। সেখানে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা আছে। ছয় বেডের একটি আইসিইউ সেটআপ থাকবে নিচ তলাতেই। সেখানে ভেন্টিলেটরের সুযোগও থাকছে। আর তাই ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডেই ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের স্ট্যাবল হওয়ার সুযোগ আছে। সেখানে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে পাঠিয়ে দেওয়া হবে দ্বিতীয় তলার ওয়ার্ডে। সেখানে যদি কারও অবস্থা খারাপ হয় তবে তাকে আমরা পাঠিয়ে দেবো আইসিইউ বা এইচডিইউতে। আর যদি একটু স্ট্যাবল হয় বা ঝুঁকির মাত্রা কমে আসে তবে আমরা তাদের কেবিনে দিয়ে দেবো।

এই কেবিনগুলোতে সেন্ট্রাল অক্সিজেনসহ হাই-ফ্লো নজেল ক্যানোলা সুবিধা থাকবে। এক্ষেত্রে মনিটরের ব্যবস্থাও করা হবে খুব দ্রুত। ওখানে তারা কিছুটা স্ট্যাবল হলে তাদের ধীরে ধীরে ডিসচার্জ হওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এটাই আমাদের আপাতত স্টেপ-১ ও স্টেপ-২ পরিকল্পনা।

হাসপাতালটির পরিচালক আরও বলেন, এটা আসলে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন হাসপাতাল হতে যাচ্ছে। এখানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আর্মড ফোর্সেস ডিভিশন কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের জনবল, আর্থিক সহায়তা, ওষুধসহ বিভিন্ন কিছু দিয়ে সর্বাত্মক সহায়তা দিচ্ছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। আর্মড ফোর্সেস থেকেও চিকিৎসক, নার্সসহ কিছু থাকছে। ডিএনসিসি তাদের জায়গা দিয়েছে এবং একই সঙ্গে অন্যান্য কিছু সাপোর্ট দিয়ে আমাদের সাহায্য করে যাচ্ছে। মূলত এই তিনটি প্রতিষ্ঠান মিলেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

বিজনেস আওয়ার/১৮ এপ্রিল, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: