বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : দেশের পুরো শেয়ারবাজারকে একটি আইটি ভিত্তিক প্লাটফর্মে আনবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
শুক্রবার (১৯ জুন) বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলী লিস্টেড কোম্পানিজ (বিএপিএলসি) আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
শিবলী রুবাইয়াত বলেন, আমাদের সরকার চাচ্ছে শেয়ারবাজারকে একটি আইটি বেস প্লাটফর্মে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমি জয়েন করার পরেই সব কিছু খেয়াল করেছি। আমাদের এখানে অল্প এক্সপার্ট লোক আছে। আইটি রুমেও আমি খুব একটা সন্তুষ্ট না।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের টোটাল মার্কেটটাকে আইটি প্লাটফর্মে নিয়ে যাব। এটাই আমাদের প্ল্যান। এর জন্য আমরা এমন কোয়ালিটির লোক খুঁজছি, যাকে আমরা ভালো বেতন দিয়ে নিয়ে আসব। যার আন্তর্জাতিক কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে এবং আমাদের পুরো মার্কেটটাকে এ ব্যাপারে সাহায্য করবে।
এ সময় ডিএসইর প্রতি কিছুটা বিরক্ত প্রকাশ করে বলেন, আমি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) প্রথম দিন থেকেই বলে আসছি ডিএসইর আইটি প্ল্যাটফর্ম কেন এখনো ইমপ্লিমেন্টেশন (বাস্তবায়ন) হয়নি। কোথায় সমস্যা? কেন দেরি হচ্ছে? এটা নিয়ে আমি বারবার কথা বলেছি। এমনকি ডিএসইর বোর্ডের সবার সঙ্গে কথা বলেছি।
‘কেন মানুষ এখনো অ্যাপ দিয়ে পার্টিসিপেন্ট করতে পারেনা, ট্রেড করতে পারে না? ওএমএস সিস্টেমটা কেন এখনো ব্রোকারদের কাছে ঠিকমত ডিস্ট্রিবিউট হয়নি? কেন আমাদের ডিজিটাল আউটলেটগুলো দেশের রিমোট এলাকায় চলে যায়নি? আমাদের দেশের সব কর্ণার থেকে মানুষকে এখনো কেন ট্রেড করতে পারে না? এগুলো আসলে অনেক আগে হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। এগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমার সঙ্গে যারা কাজ করছেন তাদেরকে খুব চাপের মধ্যে রাখছি’ বলেন বিএসইসির চেয়ারম্যান।
একই সঙ্গে শেয়াবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, এখন থেকে কোম্পানিগুলোকে আর মাসে মাসে শেয়ারহোল্ডারদের অবস্থান বিএসইসিকে জানাতে হবে না। চার মাস বা ছয় মাস পর পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে এ সংক্রান্ত সামারি সংগ্রহ করা হবে। এছাড়া এবারই প্রথম ভার্চুয়ালে বার্ষিক সাধারন সভা (এজিএম) করার কারণে, এই এজিএম করতে কোন ভুলত্রুটি হলে তার জন্য ছাড় দেয়া হবে। এবার কাউকে এজিএম’র ভুলত্রুটির জন্য জরিমানা করা হবে না।
তিনি বলেন, দেশের আইন বা দেশের কাউকে বিপদে না ফেলে, ঝামেলায় না ফেলে এমন কিছু করলে আপনাদের (কোম্পানির) কাজ করাটা সহজ হয়, আমাদেরকে ইমেইল করে জানালেই হবে। আমরা পর্যালোচনা করে দেখবো যদি কারো কোন সমস্যা না হয় আমরা সেই সুবিধা দিয়ে দেব।
ভার্চুয়ালে এজিএম করার বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে আমরা ভার্চুয়ালে এজিএম করার সুযোগ দিয়েছি। এটা সব সময় করা যায় কিনা আমরা আলোচনা করে দেখছি। আমরা প্রত্যেকটা এজিএমের টেপরেকর্ডার চেয়েছি। সেগুলো আমরা পর্যালোচনা করে দেখব। যদি দেখি তেমন কোন সমস্যা নেই, ৫-৬ জনকে নিয়ে দুষ্টুমি করার প্রবণতা না থাকে, তাহলে হয়তো আমরা কন্টিনিউ করতে পারি।
বন্ড মার্কেটে উন্নয়নে গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, বন্ড যদি শেয়ারবাজারে লেনদেন হয় তাহলে একদিকে লেনদেনের ভলিউম বাড়বে, অন্যদিকে মার্কেটের গভীরতা বাড়বে।
তিনি বলেন, শেয়ারহোল্ডারদের পজিশন, তাদের সিআইবি পজিশন মাসে একবার করে আমাদের কাছে পাঠাতে হয়। প্রচুর পেপার। এটা পরিবর্তন করে দেয়া হচ্ছে। আমরা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে একটা সামারি নেব। চার মাস বা ছয় মাস পর পর আমরা এটা নেব। মাসে মাসে আমাদের কাছে পাঠানোর এখন আর দরকার হবে না। এতে আপনাদের (কোম্পানির) অনেক পেপার ওয়ার্ক কমে যাবে।
বিজনেস আওয়ার/১৯ জুন, ২০২০/আরএ