ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈদের জামাত এবারও মসজিদে, মানতে হবে ১২টি শর্ত

  • পোস্ট হয়েছে : ০৫:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ এপ্রিল ২০২১
  • 4

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে গতবছরের মতো এবছরও ঈদগাহে বা খোলা জায়গায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাত আদায় করা যাবে না। মসজিদে পড়তে হবে ঈদের নামাজ। একইসঙ্গে জামাত শেষে কোলাকুলি এবং হাত মেলানো পরিহার করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে সরকার।

সোমবার (২৬ এপ্রিল) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত আদায় সংক্রান্ত জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ অনুরোধ জানানো হয়েছে।  বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজ আদায়ে ১২টি শর্ত দেয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অতি জরুরি। ইতোমধ্যে মসজিদে নামাজ আদায়ে কতিপয় নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবজনিত কারণে সারাদেশে জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জারি করা নির্দেশাবলীসহ বিশেষ সতর্কতামূলক বিষয়াদি অনুসরণ করে ১২টি শর্তসাপেক্ষে ২০২১ সালের পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত মসজিদে আদায়ের জন্য অনুরোধ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

মসজিদে ঈদের নামাজ আদায়ে ১২টি শর্ত

১. ইসলামি শরিয়তে ঈদগাহ বা খোলা জায়গায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত আদায়ের ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে সারাবিশ্বসহ আমাদের দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিজনিত কারণে মুসল্লিদের জীবন ঝুঁকি বিবেচনা করে এ বছর ঈদগাহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে ঈদের নামাজের জামাত নিকটস্থ মসজিদে আদায় করার জন্য অনুরোধ করা হলো। প্রয়োজনে একই মসজিদে একাধিক জামায়াত অনুষ্ঠিত করা যাবে।

২. ঈদের নামাজের জামাতের সময় মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। নামাজের আগে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবানুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। মুসল্লিরা প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসতে পারবেন।

৩. করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধ নিশ্চিতে মসজিদে ওজুর স্থানে সাবান/হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে।

৪. মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার/হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে।

৫. প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে ওজু করে মসজিদে আসতে হবে এবং ওজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।

৬. ঈদের নামাজের জামাতে আসা মুসল্লিকে অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না।

৭. ঈদের নামাজ আদায়ের সময় কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে।

৮. শিশু, বয়োবৃদ্ধ, যেকোনো অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি ঈদের নামাজের জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

৯. সর্বসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিতে, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই প্রতিপালন করতে হবে।

১০. করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধ নিশ্চিতে মসজিদে জামাত শেষে কোলাকুলি এবং পরস্পর হাত মেলানো পরিহার করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।

১১. করোনাভাইরাস মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে মহান রাব্বুল আল-আমিনের দরবারে দোয়া করার জন্য খতিব ও ইমামদের অনুরোধ করা যাচ্ছে।

১২. সম্মানিত খতিব, ইমাম এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটি বিষয়গুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন।

এসব নির্দেশনা লঙ্ঘিত হলে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটিকে উপরোক্ত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

হিজরি শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাওয়া সাপেক্ষে আগামী ১৩ বা ১৪ মে দেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। ঈদের দিন মুসলমানরা মসজিদ কিংবা ঈদগাহে দুই রাকাত ঈদের ওয়াজিব নামাজ আদায় করে থাকেন।

বিজনেস আওয়ার/২৬ এপ্রিল, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ঈদের জামাত এবারও মসজিদে, মানতে হবে ১২টি শর্ত

পোস্ট হয়েছে : ০৫:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ এপ্রিল ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে গতবছরের মতো এবছরও ঈদগাহে বা খোলা জায়গায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাত আদায় করা যাবে না। মসজিদে পড়তে হবে ঈদের নামাজ। একইসঙ্গে জামাত শেষে কোলাকুলি এবং হাত মেলানো পরিহার করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে সরকার।

সোমবার (২৬ এপ্রিল) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত আদায় সংক্রান্ত জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ অনুরোধ জানানো হয়েছে।  বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজ আদায়ে ১২টি শর্ত দেয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অতি জরুরি। ইতোমধ্যে মসজিদে নামাজ আদায়ে কতিপয় নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবজনিত কারণে সারাদেশে জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জারি করা নির্দেশাবলীসহ বিশেষ সতর্কতামূলক বিষয়াদি অনুসরণ করে ১২টি শর্তসাপেক্ষে ২০২১ সালের পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত মসজিদে আদায়ের জন্য অনুরোধ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

মসজিদে ঈদের নামাজ আদায়ে ১২টি শর্ত

১. ইসলামি শরিয়তে ঈদগাহ বা খোলা জায়গায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত আদায়ের ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে সারাবিশ্বসহ আমাদের দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিজনিত কারণে মুসল্লিদের জীবন ঝুঁকি বিবেচনা করে এ বছর ঈদগাহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে ঈদের নামাজের জামাত নিকটস্থ মসজিদে আদায় করার জন্য অনুরোধ করা হলো। প্রয়োজনে একই মসজিদে একাধিক জামায়াত অনুষ্ঠিত করা যাবে।

২. ঈদের নামাজের জামাতের সময় মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। নামাজের আগে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবানুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। মুসল্লিরা প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসতে পারবেন।

৩. করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধ নিশ্চিতে মসজিদে ওজুর স্থানে সাবান/হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে।

৪. মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার/হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে।

৫. প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে ওজু করে মসজিদে আসতে হবে এবং ওজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।

৬. ঈদের নামাজের জামাতে আসা মুসল্লিকে অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না।

৭. ঈদের নামাজ আদায়ের সময় কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে।

৮. শিশু, বয়োবৃদ্ধ, যেকোনো অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি ঈদের নামাজের জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

৯. সর্বসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিতে, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই প্রতিপালন করতে হবে।

১০. করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধ নিশ্চিতে মসজিদে জামাত শেষে কোলাকুলি এবং পরস্পর হাত মেলানো পরিহার করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।

১১. করোনাভাইরাস মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে মহান রাব্বুল আল-আমিনের দরবারে দোয়া করার জন্য খতিব ও ইমামদের অনুরোধ করা যাচ্ছে।

১২. সম্মানিত খতিব, ইমাম এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটি বিষয়গুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন।

এসব নির্দেশনা লঙ্ঘিত হলে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটিকে উপরোক্ত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

হিজরি শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাওয়া সাপেক্ষে আগামী ১৩ বা ১৪ মে দেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। ঈদের দিন মুসলমানরা মসজিদ কিংবা ঈদগাহে দুই রাকাত ঈদের ওয়াজিব নামাজ আদায় করে থাকেন।

বিজনেস আওয়ার/২৬ এপ্রিল, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: