বিজনেস আওয়ার ডেস্ক : আব্দুল্লাহ বিন ‘আমর (রা.) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, رِضَى الرَّبِّ فِى رِضَى الْوَالِدِ وَسَخَطُ الرَّبِّ فِى سَخَطِ الْوَالِدِ ‘পিতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং পিতার ক্রোধে আল্লাহর ক্রোধ’। (তিরমিযী হা/১৮৯৯; মিশকাত হা/৪৯২৭; সহিহাহ হা/৫১৬)।
আবুদ্দারদা (রা.) হতে বর্ণিত, জনৈক ব্যক্তি শামে তার নিকটে এসে বলল, আমার মা, অন্য বর্ণনায় আমার পিতা বা মাতা (রাবীর সন্দেহ) আমাকে বারবার তাকীদ দিয়ে বিয়ে করালেন। এখন তিনি আমাকে আমার স্ত্রীকে তালাক দানের নির্দেশ দিচ্ছেন। এমতাবস্থায় আমি কি করব?
জবাবে আবুদ্দারদা বলেন, আমি তোমার স্ত্রীকে ছাড়তেও বলব না, রাখতেও বলব না। আমি কেবল অতটুকু বলব, যতটুকু আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) এর নিকট থেকে শুনেছি। তিনি বলেছেন,الْوَالِدُ أَوْسَطُ أَبوابِ الْجَنَّةِ، فَحَافِظْ إِنْ شِئْتَ أَوْ ضَيِّعْ ‘পিতা হলেন জান্নাতের মধ্যম দরজা। এক্ষণে তুমি চাইলে তা রেখে দিতে পার অথবা বিনষ্ট করতে পার’। (শারহুস সুন্নাহ হা/৩৪২১; আহমাদ হা/২৭৫৫১; তিরমিযী হা/১৯০০; ইবনু মাজাহ হা/২০৮৯; মিশকাত হা/৪৯২৮; সহিহাহ হা/৯১৪)।
আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রা.) বলেন, আমার স্ত্রীকে আমি ভালবাসতাম। কিন্তু আমার পিতা তাকে অপসন্দ করতেন। তিনি তাকে তালাক দিতে বলেন। আমি তাতে অস্বীকার করি। তখন বিষয়টি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলা হলে তিনি বলেন, أَطِعْ أَبَاكَ وَطَلِّقْهَا، فَطَلَّقْتُهَا ‘তুমি তোমার পিতার আনুগত্য কর এবং তাকে তালাক দাও। অতঃপর আমি তাকে তালাক দিলাম’। (হাকেম হা/২৭৯৮; সহিহহ ইবনু হিববান হা/৪২৬; সহিহাহ হা/৯১৯)।
ঈমানদার ও দূরদর্শী পিতার আদেশ মান্য করা ঈমানদার সন্তানের জন্য অবশ্য কর্তব্য। কিন্তু পুত্র ও তার স্ত্রী উভয়ে ধার্মিক ও আনুগত্যশীল হলে ফাসেক পিতা-মাতার নির্দেশ এক্ষেত্রে মানা যাবে না। একইভাবে সন্তান সহিহ হাদিসপন্থী হলে বেদাতী পিতা-মাতার ধর্মীয় নির্দেশও মানা চলবে না। কারণ সর্ব ক্ষেত্রে পবিত্র কোরআন ও সহিহ হাদিসের বিধান অগ্রাধিকার পাবে।
আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ثَلاَثُ دَعَوَاتٍ مُسْتَجَابَاتٌ لاَ شَكَّ فِيهِنَّ : دَعْوَةُ الْوَالِدِ وَدَعْوَةُ الْمُسَافِرِ وَدَعْوَةُ الْمَظْلُومِ ‘তিনটি দোয়া কবুল হয়। যাতে কোনরূপ সন্দেহ নেই। পিতার দোয়া, মুসাফিরের দোয়া ও মজলূমের দোয়া’ (আবুদাউদ হা/১৫৩৬)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, وَدَعْوَةُ الْوَالِدَيْنِ ‘পিতা-মাতার দোয়া’ (আল-আদাবুল মুফরাদ হা/৩২)। আরেক বর্ণনায় এসেছে,وَدَعْوَةُ الْوَالِدِ عَلَى وَلَدِهِ ‘পিতার বদদোয়া তার সন্তানের বিরুদ্ধে’ (তিরমিযী হা/১৯০৫)।
এক কথায় সন্তানের জন্য বা সন্তানের বিরুদ্ধে পিতা-মাতার যেকোনো দোয়া বা বদদোয়া নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট কবুল হয়ে যায়। অতএব, এ ব্যাপারে পিতা-মাতা ও সন্তানদের সর্বদা সাবধান থাকতে হবে। যেন সন্তানের কোনো আচরণে পিতা-মাতার অন্তর থেকে ‘উহ্’ শব্দ বেরিয়ে না আসে। অথবা সন্তানের প্রতি রুষ্ট হয়ে পিতা-মাতা যেন মনে বা মুখে কোন বদদোয়া না করে বসেন।
বিজনেস আওয়ার/২১ জুন, ২০২০/এ