রেজোয়ান আহমেদ : গত বছরের শুরুতে করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হওয়ার পরে অল্প সময়ের ব্যবধানে শেয়ারবাজার তলানিতে গিয়ে ঠেকে। আর সেই অবস্থায় অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নেতৃত্বভার তুলে দেওয়া হয়। যার নেতৃত্ব করোনা মহামারিকে দূরে সড়িয়ে শেয়ারবাজারকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে নতুন কমিশনের বেশ কিছু কার্যকরি ও দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।
করোনাভাইরাসের কারনে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের শেয়ারবাজারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তবে সেটা ভয়াবহ রূপ ধারন করে গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে রোগী শনাক্ত হওয়ার পরে। এরপরই বিনিয়োগকারীরা যার যার অবস্থান থেকে শুধু বিক্রি করার চেষ্টাই করে গেছেন। বাজারে দেখা দেয় ক্রেতার ভয়াবহ সংকট। তবে এখন করোনাভাইরাস নিয়ে সেই আতঙ্ক নেই। এছাড়া নতুন কমিশনের বেশ পদক্ষেপ বাড়তি আস্থা যুগিয়েছে। যাতে করে শেয়ারবাজার এগিয়ে যাচ্ছে।
দেখা গেছে, গত বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচকটি ৪৭৬৮ পয়েন্টে ছিল। যেটা করোনা আতঙ্কে কমতে কমতে ৮ মার্চ এসে দাড়াঁয় ৪২৮৭ পয়েন্ট। আর ওইদিন দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পরে ৯ মার্চ একদিনেই ২৭৯ পয়েন্ট কমে যায়। যা ১৮ মার্চ করোনাভাইরাসে বাংলাদেশে ১ম রোগী মারা যাওয়ার দিন নেমে যায় ৩৬০৪ পয়েন্টে। আতঙ্কিত শেয়ারবাজারের এমন পতন ঠেকাতে ১৯ মার্চ চালু করা হয় ফ্লোর প্রাইস।
এই ফ্লোর প্রাইস চালুর পরে লেনদেন ও সূচকে ধীরগতি আসে। এরমধ্যে ওই বছরের ১৭ মে কমিশনে চেয়ারম্যান হিসেবে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের যোগদানের মাধ্যমে পরিবর্তন আসে। এছাড়া ২০ মে কমিশনার হিসেবে ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ ও ড. মোঃ মিজানুর রহমান এবং ২ জুন মোঃ আব্দুল হালিম যোগদান করেন।
কমিশনের এই পরিবর্তনের পরেও করোনাভাইরাস আতঙ্কে শেয়ারবাজার গত বছরের ২৩ জুলাই পর্যন্ত অনেকটা একইবৃত্তে ঘুরাফেরা করে। এরপরে ২৯ জুলাই পর্যন্ত ধীর গতিতে এগোয়। তবে ওইদিন মুদ্রানীতি ঘোষণার পরে ৩০ জুলাই থেকে বাজারে বড় গতি আসে। সুদ হার ও রেপো হার কমানোয় এই গতি আসে। এরসঙ্গে কমিশনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে বড় আর্থিক জরিমানা ও কিছু কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) বাতিলসহ নানা পদক্ষেপ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা বাড়িয়েছে। আর ব্যাংকের সুদের হার তলানিতে নেমে আসায় শেয়ারবাজারে নগদ অর্থের প্রবাহ বেড়েছে। যাতে করে শেয়ারবাজারে মূল্যসূচক, বাজার মূলধন ও আর্থিক লেনদেনে বড় উন্নতি হয়েছে।
শিবলী কমিশনের নেতৃত্বাধীন গত ১ বছরের ব্যবধানে লেনদেন, মূল্যসূচক ও বাজার মূলধনে অনেক উন্নতি হয়েছে। এই সময়ের (২৩ মে পর্যন্ত) ব্যবধানে ডিএসইএক্স ৪০৬০ থেকে বেড়ে ৫৭৮৮ পয়েন্টে, ১৪৩.২৯ কোটি টাকার লেনদেন ১৪৮৬ কোটিতে ও ৩ লাখ ১৬ হাজার ১৭৬ কোটি টাকার বাজার মূলধন বেড়ে ৪ লাখ ৯১ হাজার ২২৫ কোটিতে উন্নিত হয়েছে। অর্থাৎ এই কমিশনের সময়ে মূল্যসূচক বেড়েছে ১৭২৮ পয়েন্ট বা ৪৩ শতাংশ। আর লেনদেন বেড়েছে ১৩৪২.৭১ কোটি বা ৯৩৭ শতাংশ এবং বাজার মূলধন বেড়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৯ কোটি বা ৫৫ শতাংশ।
এই উত্থানের মাধ্যমে শিবলী কমিশন বিগত ১ বছরে শেয়ারবাজারকে যে করোনাকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। তবে দেশের শেয়ারবাজার এখনো কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌছাতে পারেনি। বর্তমানে সূচক ৫৮০০ পয়েন্টের কাছে থাকলেও ২০১৭ সালের ২৬ নভেম্বরেই স্বাভাবিক বাজারে ছিল ৬৩৩৬ পয়েন্টে। এরপরে গত সাড়ে ৩ বছরে অনেক কোম্পানি সূচকে যুক্ত হয়েছে। যেগুলোর ইতিবাচক প্রভাব বিবেচনায় ২০১৭ সালের তুলনায় বর্তমান বাজারের সূচক অনেক তলানিতে।
গত ১ বছরে বাজারের উন্নয়নের পেছনে বর্তমান কমিশনের বেশ কিছু পদক্ষেপের পাশাপাশি কালোটাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ ইতিবাচক প্রভাব রেখেছে। এছাড়া আমদানি বন্ধ থাকায় মানুষের কাছে অলস অর্থের পরিমাণ বেড়েছে। যা থেকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ আসছে। এছাড়া কিছু ব্যাংকেরও তারল্য সারপ্লাস হয়ে গেছে। এখন আর আগের ন্যায় তারল্যের সংকট নেই।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান বিজনেস আওয়ারকে বলেন, কমিশন একটি নতুন এবং দক্ষ নেতৃত্ব পেয়েছে। যারা বিভিন্ন কার্যকরি পদক্ষেপের মাধ্যমে দক্ষতার প্রমাণ দিচ্ছেন। যে কারনে সবাই তাদের প্রতি আশাবাদি। যাতে করে করোনাভাইরাসের আতঙ্ককে দূরে সড়িয়ে শেয়ারবাজারে গতি ফিরেছে।
প্রায় ২ মাস বন্ধ থাকার পর গত বছরের ৩১ মে শেয়ারবাজারে লেনদেন চালু হওয়ার পর বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে শুরু করেন শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন। তারা বিভিন্ন অনিয়মের কারনে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে কোটি কোটি টাকা জরিমানা করেছে। এরমাধ্যমে বাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠার একটি বার্তা দিয়েছে।
ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) এর সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন বিজনেস আওয়ারকে বলেন, বিএসইসির নতুন নেতৃত্ব কথার চেয়ে কাজ বেশি করছে। যার ইতিবাচক প্রভাব শেয়ারবাজারে পড়ছে। তারা অনেকদিন ধরে আলোচনা হওয়া ‘জেড’ ক্যাটাগরি সমাধানেও এই কমিশন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এই কমিশন শেয়ারবাজারের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি অন্যায়কারীদেরকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনছেন। যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সৃষ্টি করছে।
শিবলীর কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য বেশ কিছু নির্দেশনা থেকে শেয়ারবাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানকে অব্যাহতি দিয়েছে। গত বছরের ২ জুন কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সরকার কর্তৃক ঘোষিত সাধারণ ছুটির সময় (২৬ মার্চ-৩০ মে) সময়ে কোন কোন সিকিউরিটিজের ইস্যুয়ার, কমিশনে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান, ডিপজিটরি, স্টক এক্সচেঞ্জ বা পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট অন্য কোন ব্যক্তি কমিশনে বা স্টক এক্সচেঞ্জে বা শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের নিকট বিভিন্ন বিবরণী বা প্রতিবেদন বা রিটার্ন বা ডকুমেন্ট বা তথ্য জমাদানে, বা মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ব্যতীত অন্য কোন নির্দেশনা বা আদেশ পরিপালনে, বা কোন সভা নির্ধারিত সময়ে করতে ব্যর্থ হয়েছে। উক্ত কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য নির্ধারিত সময় গণনার ক্ষেত্রে উল্লিখিত সাধারণ ছুটির সময়টি বাদ দেন৷
এই কমিশন শেয়ারবাজারের তালিকাভুক্ত দূর্বল মৌল ভিত্তি কোম্পানির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে ‘জেড’ শ্রেণিভুক্ত কোম্পানির অবস্থার উন্নতির পাশাপাশি সুশাসন নিশ্চিত করতে বর্তমান কমিশন নতুন করে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করে৷ যা কোম্পানিগুলোকে ব্যবসায় উন্নতি করতে সহযোগিতা করবে। এরমধ্যে উদ্যোক্তা/পরিচালকদের ধারনকৃত শেয়ারে বিক্রি, হস্তান্তর ও বন্ধকী দেওয়ার সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া পর্ষদ পূণর্গঠন, বিশেষ নিরীক্ষক নিয়োগ, পর্যবেক্ষক বসানো ও পয়তাল্লিশ কর্মদিবসের মধ্যে বিদ্যমান বোর্ড পূনর্গঠন করতে ব্যর্থ হলে, বর্তমান পরিচালক ও উদ্যোক্তাদেরকে শেয়ারবাজারে কোন তালিকাভুক্ত কোম্পানি বা মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানে পরিচালক হিসেবে থাকার সুযোগ বন্ধ করেছে। কমিশনের এসব সিদ্ধান্ত ‘জেড’ ক্যাটাগরির সংস্কারে কার্যকরি পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়া শিবলীর নেতৃত্বাধীন কমিশন তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের এককভাবে ন্যূনতম ২ শতাংশ এবং সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের কঠোরতা আরোপ করেছে। তাদের গৃহিত পদক্ষেপগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে-
# দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষমান থাকা আইপিও আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তি এবং মানহীন ও দূর্বল কোম্পানির আইপিও আবেদন বাতিল।
# রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) সক্ষমতা বাড়ানোর পদক্ষেপ নেয়া।
# দূর্বল ভিত্তির ‘জেড’ শ্রেণীভুক্ত কোম্পানিগুলোর আর্থিক ও ব্যবসায়িক অবস্থা পর্যালোচনা করে কোম্পানিগুলোর অবস্থা উন্নয়নে পদক্ষেপ নেয়া।
# যে সব কোম্পানির উদ্যোক্তারা লোকসান দেখিয়ে নিজেরা লাভবান হচ্ছেন এবং বিনিয়োগকারীদেরকে ঠকাচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা।
# সেকেন্ডারি বাজারে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং আইপিওতে অধিকতর অংশগ্রহণের জন্য সেকেন্ডারি বাজারে ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ বাধ্যতামূলক করে আইপিও লটারি পদ্ধতি তুলে দেয়া।
# মার্জিণ ঋণ নিয়ে যেসব বিনিয়োগকারী বাজারে বিনিয়োগ করেছে, তাদের স্বার্থে শেয়ারবাজারের ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান স্টক ব্রোকার এবং মার্চেন্ট ব্যাংক কর্তৃক প্রথমবারের মতো মার্জিন ঋণের বিপরীতে সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ সুদ নির্ধারণ করে দেয়া।
# শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের সুযোগ করে দিতে ব্রোকারেজ হাউজের শাখা অফিস খোলার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার।
# ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে দেশের বাইরে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর ডিজিটাল বুথ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ।
# বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে প্রবাসী বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীদের (এনআরবি) জন্য দেশের বাইরে রোড-শো’র আয়োজন।
# শেয়ারবাজারে লেনদেনের জন্য অনলাইনে বিও হিসাব খোলার উদ্যোগ।
# শেয়ারবাজার উন্নয়নে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অবণ্ঠিত বা দাবিহীন লভ্যাংশ নিয়ে শেয়ারবাজার স্থিতিশীলকরণ তহবিল গঠন।
# দেশে প্রথমবারের মতো বিদেশি কোম্পানিকে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের উদ্যোক্তা হিসেবে যুক্ত করার উদ্যোগ।
# দেশের প্রধান নেতৃত্বদানকারী স্টক এক্সচেঞ্জ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সিকিউরিটিজ লেনদেন কার্যক্রম বাড়ানোর জন্য ‘ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট (ট্রেক)’ ইস্যু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এছাড়া ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দেওয়ায় বেশ কিছু তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজ ফ্লোর প্রাইসে এসে আটকে ছিল। এতে বিনিয়োগকারীগণ লেনদেন করতে পারছিল না। বিনিয়োগারীদের স্বার্থে লেনদেনে ফিরিয়ে আনতে ওইসব কোম্পানিগুলোকর মধ্যে তালিকাভুক্ত ৬২ কোম্পানি এবং চারটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডকে ফ্লোর প্রাইস থেকে অব্যাহতি দেয় বর্তমান কমিশন। একই সাথে ফ্লোর প্রাইস (সর্বনিম্ন সীমা) তুলে নেওয়া ৬৬ কোম্পানির শেয়ারের দর পতনের ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার সীমা ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশে নির্ধারণ করে দেয়।
এই কমিশন ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স এর সাথে সমন্বয় রেখে বিনিয়োগকারীদেরর ঋণ সুবিধা প্রদান, ফেইসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএসইসি, ডিএসই এবং সিএসইর নাম ও লোগো ব্যবহার করে শেয়ার দরে গুজব রটালে সিকিউরিটিজ আইনের পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার উদ্যোগ, সর্বাত্মক কঠোর লকডাউনের মধ্যেও ব্যাংকের সাথে সমন্বয় রেখে শেয়ারবাজার খোলা রাখার মতো পদক্ষেপ নিয়েছে।
কমিশনের এসব উদ্যোগকে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের টেকসই উন্নয়নে সময়োপযোগী কর্মপরিকল্পনা বলে মনে করছে ডিএসই। এইসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের ভিত্তি আগামীতে আরো বেশী শক্তিশালী হবে।
এসএমই বা স্বল্প মূলধনী কোম্পানির তালিকাভুক্তিকরণ ও লেনদেনের জন্য একটি পৃথক বোর্ড চূড়ান্তও করেছে শিবলী কমিশন। তারা সরকারি ট্রেজারি বন্ডের লেনেদেন চালু, ডেরিভেটিভসের মত এডভান্সড প্রোডাক্ট চালুর জন্য কাজ করছে। এছাড়া ওটিসি মার্কেটের আধুনিকায়নের কাজ অব্যাহত রয়েছে। এই সকল কার্যক্রম দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
শিবলী কমিশনের গত ১ বছরের সাফল্যে ডিএসইর চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান বলেন, বর্তমান কমিশন প্রজ্ঞা ও মেধা দিয়ে স্বল্পতম সময়ে শেয়ারবাজার উন্নয়ন, নিয়ন্ত্রণ ও বিভিন্ন সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে৷ এই সময়ে কমিশনের বেশকিছু উদ্যোগ বিনিয়োগকারী এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের আস্থা বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে৷ আমরা ইতিমধ্যে কমিশনের অসামান্য এবং গতিশীল সিদ্ধান্তের ফলে শেয়ারবাজারের ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করছি৷ এই কমিশনের নিরলস প্রচেষ্টা সামনের দিনগুলোতে বাজারে আরও অধিকতর টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করবে।
বিগত ১ বছরে শিবলীর নেতৃত্বে আইনভিত্তিক ও প্রযুক্তি নির্ভর যে শেয়ারবাজার গড়ে উঠেছে, তা বিনিয়োগকারীসহ সকল স্টেকহোল্ডারদের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদ বিশ্বাস করে।
বিজনেস আওয়ার/২৪ মে, ২০২১/আরএ
One thought on “শিবলী কমিশনের নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে শেয়ারবাজার”