ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কার্টুনিস্ট কিশোরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

  • পোস্ট হয়েছে : ০৫:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুন ২০২১
  • 54

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : ফেসবুকে সরকারবিরোধী পোস্ট দেয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। রোববার (১৩ জুন) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আফছর আহমেদ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলার অন্যতম আসামি লেখক মুশতাক আহম্মেদ মারা যাওয়ায় চার্জশিট থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এজাহারভুক্ত আরও তিন আসামিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক নিজাম উদ্দিন তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রতিবেদনভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- রাষ্ট্রচিন্তার ঢাকার সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান, নেত্র নিউজের এডিটর ইন চিফ তাসনিম খলিল, আশিক ইমরান ও স্বপন ওয়াহিদ। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় লেখক মুশতাক আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সাংবাদিক সাহেদ আলম, জার্মান প্রবাসী ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন ও ফিলিপ শুমাখার।

এর আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। রাষ্ট্রপক্ষের মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য আবেদন করেন। পরে ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটকে (সিটিটিসি) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

১৩ জানুয়ারি এ মামলার চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। সেখানে তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়। তারা হলেন- কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার ঢাকার সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া ও লেখক মুশতাক আহমেদ।

প্রমাণ না পাওয়ায় এজাহারভুক্ত আট আসামিকে অব্যাহতির আবেদন করে পুলিশ। তারা হলেন- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান, নেত্র নিউজের এডিটর ইন চিফ তাসনিম খলিল, যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সাংবাদিক সাহেদ আলম, জার্মানপ্রবাসী ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন, জুলকারনাইন সায়ের খান, আশিক ইমরান, স্বপন ওয়াহিদ ও ফিলিপ শুমাখার।

২০২০ সালের ৫ মে র‍্যাব-৩ সিপিসি-১ এর ওয়ারেন্ট অফিসার মো. আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে ১১ জনের নামে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ‘আই এম বাংলাদেশি’ নামে একটি ফেসবুক পেজে আসামিরা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুণ্ন করতে বা বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে অপপ্রচার বা গুজবসহ বিভিন্ন ধরনের পোস্ট করেন, যা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়।

ওই পেজের অ্যাডমিন সায়ের জুলকারনাইন এবং আমি কিশোর, আশিক ইমরান, ফিলিপ শুমাখার, স্বপন ওয়াহিদ, মুশতাক আহমেদ নামীয় ফেসবুক আইডিসহ পাঁচজন এডিটর পরস্পর যোগসাজশে ফেসবুক পেজটি দীর্ঘদিন পরিচালনা করছেন।
আহমেদ কবির কিশোর, তাসনিম খলিল, জুলকারনাইন সায়ের খান, সাহেদ আলম ও আসিফ মহিউদ্দিনের মধ্যে ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিং’র প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়।

তাদের ব্যবহৃত স্যামসাং মোবাইল ফোনে ‘আমি কিশোর’ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট লগইন অবস্থায় পাওয়া যায়। আলামত পর্যালোচনা করে রাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট, মহামারি করোনাভাইরাস, সরকারদলীয় বিভিন্ন নেতার কার্টুন দিয়ে গুজব ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির প্রমাণ পাওয়া যায়।

এছাড়াও হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে তাসনিম খলিল, সায়ের জুলকারনাইন (জুলকারনাইন সায়ের খান), সাহেদ আলম, আসিফ মহিউদ্দিনের সঙ্গে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে মামলার এজাহারে বলা হয়।

বিজনেস আওয়ার/১৩ জুন, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

কার্টুনিস্ট কিশোরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

পোস্ট হয়েছে : ০৫:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুন ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : ফেসবুকে সরকারবিরোধী পোস্ট দেয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। রোববার (১৩ জুন) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আফছর আহমেদ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলার অন্যতম আসামি লেখক মুশতাক আহম্মেদ মারা যাওয়ায় চার্জশিট থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এজাহারভুক্ত আরও তিন আসামিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক নিজাম উদ্দিন তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রতিবেদনভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- রাষ্ট্রচিন্তার ঢাকার সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান, নেত্র নিউজের এডিটর ইন চিফ তাসনিম খলিল, আশিক ইমরান ও স্বপন ওয়াহিদ। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় লেখক মুশতাক আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সাংবাদিক সাহেদ আলম, জার্মান প্রবাসী ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন ও ফিলিপ শুমাখার।

এর আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। রাষ্ট্রপক্ষের মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য আবেদন করেন। পরে ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটকে (সিটিটিসি) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

১৩ জানুয়ারি এ মামলার চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। সেখানে তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়। তারা হলেন- কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার ঢাকার সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া ও লেখক মুশতাক আহমেদ।

প্রমাণ না পাওয়ায় এজাহারভুক্ত আট আসামিকে অব্যাহতির আবেদন করে পুলিশ। তারা হলেন- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান, নেত্র নিউজের এডিটর ইন চিফ তাসনিম খলিল, যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সাংবাদিক সাহেদ আলম, জার্মানপ্রবাসী ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন, জুলকারনাইন সায়ের খান, আশিক ইমরান, স্বপন ওয়াহিদ ও ফিলিপ শুমাখার।

২০২০ সালের ৫ মে র‍্যাব-৩ সিপিসি-১ এর ওয়ারেন্ট অফিসার মো. আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে ১১ জনের নামে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ‘আই এম বাংলাদেশি’ নামে একটি ফেসবুক পেজে আসামিরা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুণ্ন করতে বা বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে অপপ্রচার বা গুজবসহ বিভিন্ন ধরনের পোস্ট করেন, যা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়।

ওই পেজের অ্যাডমিন সায়ের জুলকারনাইন এবং আমি কিশোর, আশিক ইমরান, ফিলিপ শুমাখার, স্বপন ওয়াহিদ, মুশতাক আহমেদ নামীয় ফেসবুক আইডিসহ পাঁচজন এডিটর পরস্পর যোগসাজশে ফেসবুক পেজটি দীর্ঘদিন পরিচালনা করছেন।
আহমেদ কবির কিশোর, তাসনিম খলিল, জুলকারনাইন সায়ের খান, সাহেদ আলম ও আসিফ মহিউদ্দিনের মধ্যে ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিং’র প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়।

তাদের ব্যবহৃত স্যামসাং মোবাইল ফোনে ‘আমি কিশোর’ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট লগইন অবস্থায় পাওয়া যায়। আলামত পর্যালোচনা করে রাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট, মহামারি করোনাভাইরাস, সরকারদলীয় বিভিন্ন নেতার কার্টুন দিয়ে গুজব ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির প্রমাণ পাওয়া যায়।

এছাড়াও হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে তাসনিম খলিল, সায়ের জুলকারনাইন (জুলকারনাইন সায়ের খান), সাহেদ আলম, আসিফ মহিউদ্দিনের সঙ্গে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে মামলার এজাহারে বলা হয়।

বিজনেস আওয়ার/১৩ জুন, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: