ঢাকা , বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনাকালে কমেছে ওষুধ বিক্রি!

  • পোস্ট হয়েছে : ১২:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুন ২০২০
  • 39

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : রাজধানীর সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সামনে এখন আর দেখা যায় না ওষুধ বিক্রয় প্রতিনিধিদের জটলা। ডাক্তাররা চেম্বারে বসছেন না নিয়মিত তাই ভিড় নেই ডাক্তারদের চেম্বারের বাইরে। রোগীরা ভয়ে যেতে চান না হাসপাতালে। স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব পড়েছে ওষুধ বিক্রিতে।

ওষুধ বিক্রির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনার সময় নির্দিষ্ট কিছু ওষুধের ব্যবহার বাড়লেও সার্বিকভাবে কমেছে ওষুধ বিক্রি। তাদের মতে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এই বিক্রি ৫০ শতাংশের বেশী হ্রাস পেয়েছে।

চার মাস আগে পিত্তথলিতে পাথর শনাক্ত হয় ষাটোর্ধ্ব নুর নাহার খানের। তার অপরাশেন করা জরুরি হয়ে পড়লেও তিনি ভয়ে হাসপাতালে যেতে চাচ্ছেন না। টেলিফোনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেলেও ডাক্তার জরুরি ভিত্তিতে তাকে অপারেশনের পরামর্শ দিয়েছেন।

হলি ফ্যামেলি হাসপাতালে নিয়মিত দাঁতের চেকআপ করাতেন আজমেরি কুমকুম। সম্প্রতি হাসপাতালটি করোনা রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট করাতে সেখানে যেতে পারছেন না। অন্য ডাক্তারদেরও কেউ বসছেন না চেম্বারে। করোনার ভয়ে যেতে পারছেন না বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়েও (বিএসএমএমইউ)।

এরকম অনেক রোগীই এখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কায় হাসপাতালে যাচ্ছেন না। একই আশঙ্কায় অনেক ডাক্তারও বন্ধ রেখেছেন তাদের চেম্বার।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসকেএফ এর এক বিক্রয় প্রতিনিধি বলেন, ওটিসি জাতীয় ওষুধ যেমন- নাপা/প্যারাসিটামল, ওর স্যালাইন, জিংক, ভিটামিন সি, গ্যাসট্রিক, জ্বর বা মাথা ব্যথার মতো কিছু ওষুধের বিক্রি আগের তুলনায় কিছুটা বাড়লেও অন্যসব ওষুধের বিক্রি বেশ কমে গেছে।

কারণ ওষুধের দোকানগুলোতে আগের মতো ওষুধ বিক্রি হচ্ছে না। ডাক্তাররাও আগের মতো চেম্বারে বা ক্লিনিকে যাচ্ছেন না। যেহেতু এন্টিবায়োটিক বা অন্য রোগের ওষুধ চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ব্যবহার করা যায় না। তাই ওষুধ বিক্রি আগের তুলনায় ২৫ শতাংশে নেমে এসেছে।

আজিজ কো অপারেটিভ মেডিসিন মার্কেটের এক্সেল ফার্মা এন্ড ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী শাহ নেওয়াজ খান শাওন বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কায় হাসপাতালে আসছেন না। ওষুধ বিক্রি আগের তুলনায় বেশ কমে গেছে। ওটিসি (ওভার দ্য কাউনটার) জাতীয় ওষুধের বিক্রি বেড়েছে।

শাওন বলেন, রোগীরা হাসপাতালে না আসায় নতুন প্রেসক্রিপশন না হওয়ায় ওষুধও বিক্রি হচ্ছে না। সিরিয়াস ধরনের রোগীদের কেউ কেউ পুরাতন প্রেসক্রিপশন দেখে ওষুধ কিনছেন। বলা যায় স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ওষুধ বিক্রি ৩০ শতাংশে নেমে এসেছে।

শাওন আরও বলেন, আমার দোকানে পাঁচ জন স্টাফ ছিলো। বিক্রি কমে যাওয়ার কারনে তিনজন স্টাফকে ছুটি দিতে বাধ্য হয়েছি। তারপরেও আমি দোকান ভাড়া, স্টাফদের বেতন তিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছি। বলতে পারেন বেশ কষ্টেই যাচ্ছে আমাদের দিন।

বিজনেস আওয়ার/২৭ জুন, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

করোনাকালে কমেছে ওষুধ বিক্রি!

পোস্ট হয়েছে : ১২:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুন ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : রাজধানীর সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সামনে এখন আর দেখা যায় না ওষুধ বিক্রয় প্রতিনিধিদের জটলা। ডাক্তাররা চেম্বারে বসছেন না নিয়মিত তাই ভিড় নেই ডাক্তারদের চেম্বারের বাইরে। রোগীরা ভয়ে যেতে চান না হাসপাতালে। স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব পড়েছে ওষুধ বিক্রিতে।

ওষুধ বিক্রির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনার সময় নির্দিষ্ট কিছু ওষুধের ব্যবহার বাড়লেও সার্বিকভাবে কমেছে ওষুধ বিক্রি। তাদের মতে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এই বিক্রি ৫০ শতাংশের বেশী হ্রাস পেয়েছে।

চার মাস আগে পিত্তথলিতে পাথর শনাক্ত হয় ষাটোর্ধ্ব নুর নাহার খানের। তার অপরাশেন করা জরুরি হয়ে পড়লেও তিনি ভয়ে হাসপাতালে যেতে চাচ্ছেন না। টেলিফোনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেলেও ডাক্তার জরুরি ভিত্তিতে তাকে অপারেশনের পরামর্শ দিয়েছেন।

হলি ফ্যামেলি হাসপাতালে নিয়মিত দাঁতের চেকআপ করাতেন আজমেরি কুমকুম। সম্প্রতি হাসপাতালটি করোনা রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট করাতে সেখানে যেতে পারছেন না। অন্য ডাক্তারদেরও কেউ বসছেন না চেম্বারে। করোনার ভয়ে যেতে পারছেন না বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়েও (বিএসএমএমইউ)।

এরকম অনেক রোগীই এখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কায় হাসপাতালে যাচ্ছেন না। একই আশঙ্কায় অনেক ডাক্তারও বন্ধ রেখেছেন তাদের চেম্বার।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসকেএফ এর এক বিক্রয় প্রতিনিধি বলেন, ওটিসি জাতীয় ওষুধ যেমন- নাপা/প্যারাসিটামল, ওর স্যালাইন, জিংক, ভিটামিন সি, গ্যাসট্রিক, জ্বর বা মাথা ব্যথার মতো কিছু ওষুধের বিক্রি আগের তুলনায় কিছুটা বাড়লেও অন্যসব ওষুধের বিক্রি বেশ কমে গেছে।

কারণ ওষুধের দোকানগুলোতে আগের মতো ওষুধ বিক্রি হচ্ছে না। ডাক্তাররাও আগের মতো চেম্বারে বা ক্লিনিকে যাচ্ছেন না। যেহেতু এন্টিবায়োটিক বা অন্য রোগের ওষুধ চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ব্যবহার করা যায় না। তাই ওষুধ বিক্রি আগের তুলনায় ২৫ শতাংশে নেমে এসেছে।

আজিজ কো অপারেটিভ মেডিসিন মার্কেটের এক্সেল ফার্মা এন্ড ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী শাহ নেওয়াজ খান শাওন বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কায় হাসপাতালে আসছেন না। ওষুধ বিক্রি আগের তুলনায় বেশ কমে গেছে। ওটিসি (ওভার দ্য কাউনটার) জাতীয় ওষুধের বিক্রি বেড়েছে।

শাওন বলেন, রোগীরা হাসপাতালে না আসায় নতুন প্রেসক্রিপশন না হওয়ায় ওষুধও বিক্রি হচ্ছে না। সিরিয়াস ধরনের রোগীদের কেউ কেউ পুরাতন প্রেসক্রিপশন দেখে ওষুধ কিনছেন। বলা যায় স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ওষুধ বিক্রি ৩০ শতাংশে নেমে এসেছে।

শাওন আরও বলেন, আমার দোকানে পাঁচ জন স্টাফ ছিলো। বিক্রি কমে যাওয়ার কারনে তিনজন স্টাফকে ছুটি দিতে বাধ্য হয়েছি। তারপরেও আমি দোকান ভাড়া, স্টাফদের বেতন তিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছি। বলতে পারেন বেশ কষ্টেই যাচ্ছে আমাদের দিন।

বিজনেস আওয়ার/২৭ জুন, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: