ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে মানুষ আরও আগে উন্নত জীবন পেতো

  • পোস্ট হয়েছে : ০২:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ অগাস্ট ২০২১
  • 0

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে থাকলে দেশের প্রত্যেকটা মানুষ আরও আগেই উন্নত জীবন পেতো বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।‌ মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) গণভবন থেকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে ‘সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ঢাকায় নির্মিত ২৪৭৪ ফ্ল্যাটের ৫টি আবাসন প্রকল্প’ ও ‘মাদারীপুরে নির্মিত সমন্বিত অফিস ভবন উদ্বোধন’ এবং ‘জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের স্ব-অর্থায়নে বস্তিবাসীদের জন্য মিরপুরে নির্মিত ভাড়াভিত্তিক ৩০০ ফ্ল্যাট’ হস্তান্তরে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার এই বাংলাদেশে প্রত্যেকটা মানুষ সুন্দর ও উন্নত জীবন পাবে। জাতির পিতা বেঁচে থাকলে আরও আগেই সেটা পেতো। আমাদের দুর্ভাগ্য তাকে আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়ার ফলে সেটা পেলাম না। তবে আমরা তার সেই কাজই করে যাচ্ছি। জাতির পিতার এই দেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না। পিছিয়ে থাকবে না।

তিনি বলেন, জাতির পিতার তার জীবন উৎসর্গ করেছেন দেশের জন্য। তিনি সব সময় একটি কথাই বলতেন, আমার জীবনের একমাত্র কামনা বাংলাদেশের মানুষ অন্ন পাবে, বস্ত্র পাবে, তারা উন্নত জীবনের অধিকারী হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বাংলাদেশের মানুষ রোগ-শোকে ছিল। শিক্ষার আলো পেত না। তাদের ভাগ্যন্নোয়ন করাই ছিল বঙ্গবন্ধুর মূল লক্ষ্য। এজন্য ছাত্রজীবন থেকেই বঙ্গবন্ধু সংগ্রাম করেছেন। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবি থেকে তিনি ধাপে ধাপে বাঙালি জাতিকে মুক্ত ও স্বাধীন করেছেন। আর এই দাবির সংগ্রামের মধ্যেই তাকে জেলে নিয়েছে, নির্যাতন করেছে, হত্যা করতে চেয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে ভূমিহীনদের ঘর করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। সাড়ে তিন বছর একটা রাষ্ট্রের জন্য কম সময়। তখন তো একটা প্রদেশ ছিল। সেটা দেশে উন্নীত করা ও তার গঠন করা; এটা তিনি করে গেছেন। কিছু বেঈমান মুনাফেকের জন্য তার ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গঠন সম্ভব হয়নি।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আজকে আমরা ক্ষমতায়। সরকারে থেকে তৃণমূল মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা, তাদের জীবন মান উন্নত করা এবং সংবিধানের আলোকের মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছি। সরকারি কর্মকর্তাদের দিয়ে আমরা কাজ করাবো, তাদের ভালোমন্দও তো দেখতে হবে। আমি সরকার গঠন করে উদ্যোগ নিয়েছিলাম, সবাইকে ফ্ল্যাট করে দেবো। যাতে কর্মকর্তারা ভালোভাবে কাজ করতে পারে।

তিনি বলেন, আমি যখন সরকারে আসি তখন এই বস্তির ছোট ছোট বাচ্চারা যারা রাস্তায় ঘুরে বেড়াতো। যারা রাস্তার টোকাই, আমি তাদের গণভবনে ডেকে নিয়ে এসে তাদের সঙ্গে আলোচনা করি, কেন তারা বস্তিতে থাকে? কেন এলো নিজের বাড়ি ছেড়ে, ভিটে-মাটি ছেড়ে? অনেক ধরনের তথ্য আমি পাই।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কতগুলো প্রোগ্রাম নিয়েছিলাম। যে বস্তিবাসী যারা নিজের গ্রামে ফিরে যেতে চায় তাদের জন্য একটা কর্মসূচি আমি নিয়েছিলাম যে ঘরে ফেরা কর্মসূচি। একজন বস্তিবাসী যদি নিজে গ্রামে ফিরে যায়, তার যদি ভিটে-মাটি থাকে সেখানে বিনা পয়সায় ঘর বাড়ি তৈরি করে দেওয়া। তাকে ঋণের ব্যবস্থা করে দেওয়া, স্বল্প সুদে ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়া। পাশাপাশি ছয় মাসের খাবার বিনাপয়সায় দেওয়া এবং সে যাতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে সে ব্যবস্থা করে দেওয়া।

তিনি বলেন, প্রায় ১৮ হাজার পরিবার নিজ গ্রামে ফিরে গিয়েছিল। এভাবে আমরা তাদের উদ্বুদ্ধ করেছিলাম। ঢাকায় যারা থাকে আসলে এ রকম নিম্ন আয়ের মানুষ আমাদের প্রয়োজন আছে। দৈনন্দিন কাজের জন্যও প্রয়োজন আছে। বিভিন্ন ধরনের নির্মাণ কাজের জন্য প্রয়োজন আছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বস্তিতে তারা মানবেতর জীবন যাপন করে। এটি অস্বাস্থ্যকর ও বসবাসের অনুপযোগী। তাদের জন্য সুন্দর ও আধুনিক ব্যবস্থাপনায় থাকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। আজকে ৩০০ পরিবারকে দিচ্ছি ৩০০ ফ্ল্যাট। পর্যায়ক্রমে সবাইকে ফ্ল্যাট দেবো।

তিনি বলেন, কেউ গ্রামে যেতে চাইলে সে ব্যবস্থাও করবো। গ্রামে ঘরবাড়ি করে দেবো। ঢাকায় ফ্ল্যাটে থাকলে মাসে ভাড়া দিয়ে থাকতে হবে। গ্রামে গেলে সব বিনামূল্যে করে দেওয়া হবে। আমাদের লক্ষ্য, একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না।

বিজনেস আওয়ার/০৩ আগস্ট, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে মানুষ আরও আগে উন্নত জীবন পেতো

পোস্ট হয়েছে : ০২:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ অগাস্ট ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে থাকলে দেশের প্রত্যেকটা মানুষ আরও আগেই উন্নত জীবন পেতো বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।‌ মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) গণভবন থেকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে ‘সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ঢাকায় নির্মিত ২৪৭৪ ফ্ল্যাটের ৫টি আবাসন প্রকল্প’ ও ‘মাদারীপুরে নির্মিত সমন্বিত অফিস ভবন উদ্বোধন’ এবং ‘জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের স্ব-অর্থায়নে বস্তিবাসীদের জন্য মিরপুরে নির্মিত ভাড়াভিত্তিক ৩০০ ফ্ল্যাট’ হস্তান্তরে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার এই বাংলাদেশে প্রত্যেকটা মানুষ সুন্দর ও উন্নত জীবন পাবে। জাতির পিতা বেঁচে থাকলে আরও আগেই সেটা পেতো। আমাদের দুর্ভাগ্য তাকে আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়ার ফলে সেটা পেলাম না। তবে আমরা তার সেই কাজই করে যাচ্ছি। জাতির পিতার এই দেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না। পিছিয়ে থাকবে না।

তিনি বলেন, জাতির পিতার তার জীবন উৎসর্গ করেছেন দেশের জন্য। তিনি সব সময় একটি কথাই বলতেন, আমার জীবনের একমাত্র কামনা বাংলাদেশের মানুষ অন্ন পাবে, বস্ত্র পাবে, তারা উন্নত জীবনের অধিকারী হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বাংলাদেশের মানুষ রোগ-শোকে ছিল। শিক্ষার আলো পেত না। তাদের ভাগ্যন্নোয়ন করাই ছিল বঙ্গবন্ধুর মূল লক্ষ্য। এজন্য ছাত্রজীবন থেকেই বঙ্গবন্ধু সংগ্রাম করেছেন। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবি থেকে তিনি ধাপে ধাপে বাঙালি জাতিকে মুক্ত ও স্বাধীন করেছেন। আর এই দাবির সংগ্রামের মধ্যেই তাকে জেলে নিয়েছে, নির্যাতন করেছে, হত্যা করতে চেয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে ভূমিহীনদের ঘর করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। সাড়ে তিন বছর একটা রাষ্ট্রের জন্য কম সময়। তখন তো একটা প্রদেশ ছিল। সেটা দেশে উন্নীত করা ও তার গঠন করা; এটা তিনি করে গেছেন। কিছু বেঈমান মুনাফেকের জন্য তার ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গঠন সম্ভব হয়নি।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আজকে আমরা ক্ষমতায়। সরকারে থেকে তৃণমূল মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা, তাদের জীবন মান উন্নত করা এবং সংবিধানের আলোকের মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছি। সরকারি কর্মকর্তাদের দিয়ে আমরা কাজ করাবো, তাদের ভালোমন্দও তো দেখতে হবে। আমি সরকার গঠন করে উদ্যোগ নিয়েছিলাম, সবাইকে ফ্ল্যাট করে দেবো। যাতে কর্মকর্তারা ভালোভাবে কাজ করতে পারে।

তিনি বলেন, আমি যখন সরকারে আসি তখন এই বস্তির ছোট ছোট বাচ্চারা যারা রাস্তায় ঘুরে বেড়াতো। যারা রাস্তার টোকাই, আমি তাদের গণভবনে ডেকে নিয়ে এসে তাদের সঙ্গে আলোচনা করি, কেন তারা বস্তিতে থাকে? কেন এলো নিজের বাড়ি ছেড়ে, ভিটে-মাটি ছেড়ে? অনেক ধরনের তথ্য আমি পাই।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কতগুলো প্রোগ্রাম নিয়েছিলাম। যে বস্তিবাসী যারা নিজের গ্রামে ফিরে যেতে চায় তাদের জন্য একটা কর্মসূচি আমি নিয়েছিলাম যে ঘরে ফেরা কর্মসূচি। একজন বস্তিবাসী যদি নিজে গ্রামে ফিরে যায়, তার যদি ভিটে-মাটি থাকে সেখানে বিনা পয়সায় ঘর বাড়ি তৈরি করে দেওয়া। তাকে ঋণের ব্যবস্থা করে দেওয়া, স্বল্প সুদে ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়া। পাশাপাশি ছয় মাসের খাবার বিনাপয়সায় দেওয়া এবং সে যাতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে সে ব্যবস্থা করে দেওয়া।

তিনি বলেন, প্রায় ১৮ হাজার পরিবার নিজ গ্রামে ফিরে গিয়েছিল। এভাবে আমরা তাদের উদ্বুদ্ধ করেছিলাম। ঢাকায় যারা থাকে আসলে এ রকম নিম্ন আয়ের মানুষ আমাদের প্রয়োজন আছে। দৈনন্দিন কাজের জন্যও প্রয়োজন আছে। বিভিন্ন ধরনের নির্মাণ কাজের জন্য প্রয়োজন আছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বস্তিতে তারা মানবেতর জীবন যাপন করে। এটি অস্বাস্থ্যকর ও বসবাসের অনুপযোগী। তাদের জন্য সুন্দর ও আধুনিক ব্যবস্থাপনায় থাকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। আজকে ৩০০ পরিবারকে দিচ্ছি ৩০০ ফ্ল্যাট। পর্যায়ক্রমে সবাইকে ফ্ল্যাট দেবো।

তিনি বলেন, কেউ গ্রামে যেতে চাইলে সে ব্যবস্থাও করবো। গ্রামে ঘরবাড়ি করে দেবো। ঢাকায় ফ্ল্যাটে থাকলে মাসে ভাড়া দিয়ে থাকতে হবে। গ্রামে গেলে সব বিনামূল্যে করে দেওয়া হবে। আমাদের লক্ষ্য, একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না।

বিজনেস আওয়ার/০৩ আগস্ট, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: