ঢাকা , বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৭২ এর চিনি এখন ৮০ টাকা

  • পোস্ট হয়েছে : ০২:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ অগাস্ট ২০২১
  • 73

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : হঠাৎ করেই দেশের বাজারে বেড়েছে চিনির দাম। গত ৩ দিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি চিনির দাম বেড়েছে ৬ থেকে ৮ টাকা। ৭২ টাকার খোলা চিনি খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭৮ থেকে ৮০ টাকায়। আর প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮২ টাকার মধ্যে।

ব্যবসায়ীরা বলেছেন, উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম হু হু করে বাড়ছে। ফলে দেশের বাজারেও সেই প্রভাব পড়েছে। দাম আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সরকার যদি দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে চায়, তাহলে ডিউটিতে একটু ছাড় দিলে ভোক্তারা সুবিধা পেতে পারে।

জানা গেছে, মৌলভীবাজারে প্রতিবস্তা (৫০ কেজি) চিনি বিক্রি হচ্ছে ৩৬৯০ থেকে ৩৭৫০ টাকা, প্রতিকেজি ৭৩ দশমিক ৮০ টাকা থেকে ৭৫ টাকা, যা দুই মাস আগেও ছিলো ৩১০০ টাকা বস্তা, প্রতিকেজি ৬২ টাকা। সে হিসেবে দুই মাসের ব্যবধানে চিনির দাম বস্তায় বেড়েছে ৬০০ টাকা এবং কেজিতে বেড়েছে ১৩.৮০ থেকে ১৫ টাকা। আর খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭৮ থেকে ৮০ টাকা, যা তিন দিন আগেও ছিলো ৭২ টাকা।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, এক সপ্তাহ আগে বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম ৬৮ থেকে ৭০ টাকা ছিল। এখন তা ৭৭ থেকে ৭৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজারের মা ট্রেডিং কর্পোরেশনের ম্যানেজার বলেন, আমরা মিলগেট থেকে যে দামে কিনি তার চেয়ে ১০ টাকা বেশি দামে বিক্রি করি। বর্তমানে ৫০ কেজির এক বস্তা চিনি কিনছি ৩৬৮০ টাকা, বিক্রি করছি ৩৬৯০ টাকায়। বস্তায় প্রায় ৬০০ টাকা বেড়েছে। শুনেছি বিশ্ববাজারে চিনির দাম অনেকটাই বেড়ে গেছে। এ কারণে মিলগেটে দাম বেশি।

সূত্রাপুরের খুচরা চিনি ব্যবসায়ী বলেন, আজকে ৩৭৫০ টাকায় ৫০ কেজির এক বস্তা চিনি আনছি। আমাদের কেনা দাম পড়েছে ৭৫ টাকা প্রতি কেজি। এর সাথে লেবার খরচ, পরিবহন খরচ, দোকানভাড়া সব কিছু মিলিয়ে ৮০ টাকায় বিক্রি না করলে কোনো লাভ হবে না। আমরা আগের কেনা প্রতি কেজি চিনি ৭৬ টাকায় বিক্রি করছি।

এ বিষয়ে সিটি গ্রুপের পরিচালক (করপোরেট ও রেগুলেশনের অ্যাফেয়ার্স) বিশ্বজিত সাহা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পেট্রোলের দাম বেড়ে যাওয়ায় চিনির দামও অনেক বেড়ে গেছে। কারণ চিনি উৎপাদনে পেট্রোল ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে প্রতিটন চিনির দাম ৫৪০ ডলার হয়েছে, যেটা দুই মাস আগেও ছিলো ৩২০ ডলার। দুই মাসের ব্যবধানে চিনির দাম প্রতিটনে বেড়েছে ২২০ ডলার।

তিনি বলেন, আমি এক কেজি চিনি কিনলে সরকার ৩০ টাকা ডিউটি পাচ্ছে। যেহেতু আন্তর্জাতিক বাজার খুব বাড়তি। এ দাম কতো দিন থাকবে তাও জানি না। যদি ডিউটিতে যদি সরকার ছাড় দেয় তাহলে ভোক্তারা একটু সুবিধা পাবে। বর্তমানে পাইকারি বাজারে ৭৫ টাকা কেজি চিনি, সেখান থেকে ডিউটি ৩০ টাকা বাদ দিলে ৪৫ টাকা হয়।

বাংলাদেশ চিনি ডিলার ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সাধারণ আনোয়ার হোসেন বলেন, দেশে কয়েক হাজার ডিলার থাকলেও তারা চাহিদা মতো চিনি পাচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে ডিলাররা লোকসানে থাকলেও বর্তমানে দেশে চিনি সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সরকারি মিলগুলোর উৎপাদন কমে যাওয়া, চিনিকল বন্ধ হয়ে যাওয়ার গুজব ছাড়াও ডিলার বহির্ভূত প্রতিষ্ঠানের কাছে চিনি বিক্রির কারণে দেশে চিনির দাম নিয়ে নতুন অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/২৩ আগস্ট, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

৭২ এর চিনি এখন ৮০ টাকা

পোস্ট হয়েছে : ০২:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ অগাস্ট ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : হঠাৎ করেই দেশের বাজারে বেড়েছে চিনির দাম। গত ৩ দিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি চিনির দাম বেড়েছে ৬ থেকে ৮ টাকা। ৭২ টাকার খোলা চিনি খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭৮ থেকে ৮০ টাকায়। আর প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮২ টাকার মধ্যে।

ব্যবসায়ীরা বলেছেন, উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম হু হু করে বাড়ছে। ফলে দেশের বাজারেও সেই প্রভাব পড়েছে। দাম আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সরকার যদি দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে চায়, তাহলে ডিউটিতে একটু ছাড় দিলে ভোক্তারা সুবিধা পেতে পারে।

জানা গেছে, মৌলভীবাজারে প্রতিবস্তা (৫০ কেজি) চিনি বিক্রি হচ্ছে ৩৬৯০ থেকে ৩৭৫০ টাকা, প্রতিকেজি ৭৩ দশমিক ৮০ টাকা থেকে ৭৫ টাকা, যা দুই মাস আগেও ছিলো ৩১০০ টাকা বস্তা, প্রতিকেজি ৬২ টাকা। সে হিসেবে দুই মাসের ব্যবধানে চিনির দাম বস্তায় বেড়েছে ৬০০ টাকা এবং কেজিতে বেড়েছে ১৩.৮০ থেকে ১৫ টাকা। আর খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭৮ থেকে ৮০ টাকা, যা তিন দিন আগেও ছিলো ৭২ টাকা।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, এক সপ্তাহ আগে বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম ৬৮ থেকে ৭০ টাকা ছিল। এখন তা ৭৭ থেকে ৭৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজারের মা ট্রেডিং কর্পোরেশনের ম্যানেজার বলেন, আমরা মিলগেট থেকে যে দামে কিনি তার চেয়ে ১০ টাকা বেশি দামে বিক্রি করি। বর্তমানে ৫০ কেজির এক বস্তা চিনি কিনছি ৩৬৮০ টাকা, বিক্রি করছি ৩৬৯০ টাকায়। বস্তায় প্রায় ৬০০ টাকা বেড়েছে। শুনেছি বিশ্ববাজারে চিনির দাম অনেকটাই বেড়ে গেছে। এ কারণে মিলগেটে দাম বেশি।

সূত্রাপুরের খুচরা চিনি ব্যবসায়ী বলেন, আজকে ৩৭৫০ টাকায় ৫০ কেজির এক বস্তা চিনি আনছি। আমাদের কেনা দাম পড়েছে ৭৫ টাকা প্রতি কেজি। এর সাথে লেবার খরচ, পরিবহন খরচ, দোকানভাড়া সব কিছু মিলিয়ে ৮০ টাকায় বিক্রি না করলে কোনো লাভ হবে না। আমরা আগের কেনা প্রতি কেজি চিনি ৭৬ টাকায় বিক্রি করছি।

এ বিষয়ে সিটি গ্রুপের পরিচালক (করপোরেট ও রেগুলেশনের অ্যাফেয়ার্স) বিশ্বজিত সাহা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পেট্রোলের দাম বেড়ে যাওয়ায় চিনির দামও অনেক বেড়ে গেছে। কারণ চিনি উৎপাদনে পেট্রোল ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে প্রতিটন চিনির দাম ৫৪০ ডলার হয়েছে, যেটা দুই মাস আগেও ছিলো ৩২০ ডলার। দুই মাসের ব্যবধানে চিনির দাম প্রতিটনে বেড়েছে ২২০ ডলার।

তিনি বলেন, আমি এক কেজি চিনি কিনলে সরকার ৩০ টাকা ডিউটি পাচ্ছে। যেহেতু আন্তর্জাতিক বাজার খুব বাড়তি। এ দাম কতো দিন থাকবে তাও জানি না। যদি ডিউটিতে যদি সরকার ছাড় দেয় তাহলে ভোক্তারা একটু সুবিধা পাবে। বর্তমানে পাইকারি বাজারে ৭৫ টাকা কেজি চিনি, সেখান থেকে ডিউটি ৩০ টাকা বাদ দিলে ৪৫ টাকা হয়।

বাংলাদেশ চিনি ডিলার ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সাধারণ আনোয়ার হোসেন বলেন, দেশে কয়েক হাজার ডিলার থাকলেও তারা চাহিদা মতো চিনি পাচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে ডিলাররা লোকসানে থাকলেও বর্তমানে দেশে চিনি সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সরকারি মিলগুলোর উৎপাদন কমে যাওয়া, চিনিকল বন্ধ হয়ে যাওয়ার গুজব ছাড়াও ডিলার বহির্ভূত প্রতিষ্ঠানের কাছে চিনি বিক্রির কারণে দেশে চিনির দাম নিয়ে নতুন অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/২৩ আগস্ট, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: