বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চডুবির ঘটনায় ১২ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার হওয়া সুমন বেপারী (৩৭) ভালো আছেন। তাকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালে জরুরি বিভাগ থেকে মেডিসিন বিভাগে নেওয়া হয়েছে। সেখানেই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা এই ব্যক্তি।
সুমন বলেন, লঞ্চটা সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে যায়। লঞ্চ ছাড়ার পর থেকে আমার চোখে কিছুটা ঘুম ছিল, তখন হঠাৎ দেখি লঞ্চটিতে আরেকটি লঞ্চ ধাক্কা দিয়েছে। এটি ডুবে যাচ্ছে। ধাক্কা দেয়ার পর এক সাইড ডুবে যাচ্ছিল, আমি দৌড়ে লঞ্চের আরেক প্রান্তে গেলাম কিছুক্ষণ পর সেই সাইডও ডুবে গেল। এরপর আমি ওখানেই ঘোরাঘুরি করছিলাম। আল্লাহ আমাকে কোন জায়গায় রেখেছে আমি নিজেও বলতে পারব না।
তবে মনে আছে যে পানির নিচে যাওয়ার পর আমি লঞ্চের একটা রড ধরে ছিলাম। লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার পরেই আমি পানির ভেতরে ছিলাম। পরে আল্লাহ আস্তে আস্তে আমাকে একটি জায়গায় নিয়ে আসছে সেখানে পা পর্যন্ত একটু পানি ছিল, আমি সেই পানি দিয়ে ওযু করেছি এরপর দোয়া-দুরুদ পড়েছি।
আমার শরীরে যে পোশাক ছিল সেটা ভেসে গেছে শুধুমাত্র গেঞ্জিটা ছিল লঞ্চটি ডুবার পরেই আমি আমার গেঞ্জিটা খুলে কোমরে বেঁধে নেই যাতে হাঁটু পর্যন্ত ঢাকা থাকে। আমি যেখানে ছিলাম সেখান থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করিনি। চেষ্টা করলে হয়তো বের হতে পারতাম আবার নাও পারতাম। তাই আমি সেখানেই ছিলাম। যতদূর মনে আছে লঞ্চের ইঞ্জিন রুমের পাশের একটি রুমে ছিলাম। রাতে আমাকে উদ্ধার করা হয়েছে।
সুমনের স্বাস্থ্যের বিষয়ে মিটফোর্ড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. রাশীদ উন নবী বলেন, সুমন বেপারী এখন অনেক ভালো আছেন। তাকে জরুরি বিভাগ থেকে মেডিসিন ওয়ার্ডে নেওয়া হয়েছে। তিনি মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন। কথাবার্তা বলছেন।
উল্লেখ্য, সোমবার (২৯ জুন) মুন্সিগঞ্জ কাঠপট্টি থেকে প্রায় ৫০ জন যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি ঢাকায় আসছিল। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ফরাশগঞ্জ ঘাট সংলগ্ন কুমিল্লা ডক এরিয়ায় ময়ূর-২ লঞ্চ পেছনের দিকে ধাক্কা দিলে মর্নিং বার্ড লঞ্চটি ডুবে যায়। মোট ৩৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বিজনেস আওয়ার/৩০ জুন, ২০২০/এ