ঢাকা , শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জুনে শনাক্ত ৯৮ হাজারের বেশি, মৃত্যু প্রায় ১২শ!

  • পোস্ট হয়েছে : ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ জুলাই ২০২০
  • 78

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বিশ্বের অনেক দেশেই প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার কমে এলেও বাংলাদেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণের হার বাড়ছেই। আরও বেশি বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, মারা যাচ্ছেন আগের চেয়েও বেশি মানুষ।

এমন পরিস্থিতিতে জুন মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কেবল এই মাসেই দেশজুড়ে ৯৮ হাজারের বেশি সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। আর আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেনও প্রায় ১২শ মানুষ। মৃত্যু ও সংক্রমণ শনাক্তের এই পরিমাণ এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ও শনাক্ত— উভয়েরই প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ।

মঙ্গলবার (৩০ জুন) স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোভিড-১৯ সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে বলা হয়, শেষ ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৬৮২, এই সময়ে মারা গেছেন ৬৪ জন। এর আগে একদিনে এত বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাননি।

জুনের ৩০ দিনের তথ্য বলছে, এই মাসে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৯৮ হাজার ৩৩০ জন। অর্থাৎ ৮ মার্চ প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত যত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন, তার তিন ভাগের দুই ভাগই শনাক্ত হয়েছেন এই জুন মাসে। এর পরিমাণ ৬৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

এদিকে, ৩০ জুন পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৮৪৭ জনে। অন্যদিকে, কেবল জুন মাসেই মারা গেছেন ১ হাজার ১৯৭ জন। এ ক্ষেত্রেও দেখা গেছে, করোনায় মোট মৃত্যুর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ঘটেছে এই জুন মাসে। ৬৪ দশমিক ৮১ শতাংশ মৃত্যুর ঘটনাই ঘটেছে এই মাসে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ৮ মার্চ করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার ওই মাসের বাকি ২৩ দিন মিলিয়ে মোট শনাক্ত হয়েছিলেন ৫১ জন। তবে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে এপ্রিলে। ওই মাসে ৭ হাজার ৬১৬ জনের শরীরে সংক্রম শনাক্ত হয়েছিল।

মে মাসে গিয়ে এক লাফে সংক্রমণের সংখ্যা হয়ে যায় ৩৯ হাজার ৪৮৬টি, যা ছিল আগের মাসের পাঁচ গুণেরও বেশি। জুন মাসে সংক্রমণের সংখ্যা তো আগেই বলা হয়েছে ৯৮ হাজার ৩৩০। সে হিসাবে দেখা যায়, মে মাসের তুলনায় জুনে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে প্রায় আড়াই গুণ।

এদিকে, ১৮ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর পর ওই মাসে আরও চার জন মারা যান। এপ্রিল মাসে এই ভাইরাস কেড়ে নেয় ১৬৩ জনের প্রাণ। মে মাসে মারা যান ৪৮২ জন। মৃত্যুর মিছিল বাড়তে থাকে জুনেও। এই মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান ১ হাজার ১৯৭ জন, যা মে মাসের মৃত্যুর প্রায় আড়াই গুণ।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণ শনাক্তের হার দিন দিন বাড়ছেই। মার্চ মাসের তথ্য বাদ দিলে এপ্রিলে ৬২ হাজার ২০৬টি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল ৭ হাজার ৬১৬টি। সে হিসাবে সংক্রমণ শনাক্তের হার ছিল ১২ দশমিক ২৪ শতাংশ।

মে মাসে দেখা গেছে, মোট ২ লাখ ৪৩ হাজার ৮৭০টি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল ৩৯ হাজার ৪৮৬টি। সংক্রমণ শনাক্তের হার ছিল ১৬ দশমিক ১৯ শতাংশ। জুন মাসে মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৫৩৪টি। এর বিপরীতে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ৯৮ হাজার ৩৩০টি।

হিসাব বলছে, জুন মাসে সংক্রমণ শনাক্তের হার আগের দুই মাসের চেয়েই অনেকটা বেশি— ২১ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এখন পর্যন্ত সার্বিক সংক্রমণ শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৯৮ শতাংশের (৭ লাখ ৬৬ হাজার ৪৬০টি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে ৯৮ হাজার ৩৩০টি সংক্রমণ শনাক্ত) চেয়েও জুনের শনাক্তের হার অনেকটাই বেশি।

বিজনেস আওয়ার/০১ জুলাই, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

জুনে শনাক্ত ৯৮ হাজারের বেশি, মৃত্যু প্রায় ১২শ!

পোস্ট হয়েছে : ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ জুলাই ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বিশ্বের অনেক দেশেই প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার কমে এলেও বাংলাদেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণের হার বাড়ছেই। আরও বেশি বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, মারা যাচ্ছেন আগের চেয়েও বেশি মানুষ।

এমন পরিস্থিতিতে জুন মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কেবল এই মাসেই দেশজুড়ে ৯৮ হাজারের বেশি সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। আর আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেনও প্রায় ১২শ মানুষ। মৃত্যু ও সংক্রমণ শনাক্তের এই পরিমাণ এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ও শনাক্ত— উভয়েরই প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ।

মঙ্গলবার (৩০ জুন) স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোভিড-১৯ সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে বলা হয়, শেষ ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৬৮২, এই সময়ে মারা গেছেন ৬৪ জন। এর আগে একদিনে এত বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাননি।

জুনের ৩০ দিনের তথ্য বলছে, এই মাসে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৯৮ হাজার ৩৩০ জন। অর্থাৎ ৮ মার্চ প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত যত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন, তার তিন ভাগের দুই ভাগই শনাক্ত হয়েছেন এই জুন মাসে। এর পরিমাণ ৬৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

এদিকে, ৩০ জুন পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৮৪৭ জনে। অন্যদিকে, কেবল জুন মাসেই মারা গেছেন ১ হাজার ১৯৭ জন। এ ক্ষেত্রেও দেখা গেছে, করোনায় মোট মৃত্যুর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ঘটেছে এই জুন মাসে। ৬৪ দশমিক ৮১ শতাংশ মৃত্যুর ঘটনাই ঘটেছে এই মাসে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ৮ মার্চ করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার ওই মাসের বাকি ২৩ দিন মিলিয়ে মোট শনাক্ত হয়েছিলেন ৫১ জন। তবে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে এপ্রিলে। ওই মাসে ৭ হাজার ৬১৬ জনের শরীরে সংক্রম শনাক্ত হয়েছিল।

মে মাসে গিয়ে এক লাফে সংক্রমণের সংখ্যা হয়ে যায় ৩৯ হাজার ৪৮৬টি, যা ছিল আগের মাসের পাঁচ গুণেরও বেশি। জুন মাসে সংক্রমণের সংখ্যা তো আগেই বলা হয়েছে ৯৮ হাজার ৩৩০। সে হিসাবে দেখা যায়, মে মাসের তুলনায় জুনে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে প্রায় আড়াই গুণ।

এদিকে, ১৮ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর পর ওই মাসে আরও চার জন মারা যান। এপ্রিল মাসে এই ভাইরাস কেড়ে নেয় ১৬৩ জনের প্রাণ। মে মাসে মারা যান ৪৮২ জন। মৃত্যুর মিছিল বাড়তে থাকে জুনেও। এই মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান ১ হাজার ১৯৭ জন, যা মে মাসের মৃত্যুর প্রায় আড়াই গুণ।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণ শনাক্তের হার দিন দিন বাড়ছেই। মার্চ মাসের তথ্য বাদ দিলে এপ্রিলে ৬২ হাজার ২০৬টি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল ৭ হাজার ৬১৬টি। সে হিসাবে সংক্রমণ শনাক্তের হার ছিল ১২ দশমিক ২৪ শতাংশ।

মে মাসে দেখা গেছে, মোট ২ লাখ ৪৩ হাজার ৮৭০টি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল ৩৯ হাজার ৪৮৬টি। সংক্রমণ শনাক্তের হার ছিল ১৬ দশমিক ১৯ শতাংশ। জুন মাসে মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৫৩৪টি। এর বিপরীতে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ৯৮ হাজার ৩৩০টি।

হিসাব বলছে, জুন মাসে সংক্রমণ শনাক্তের হার আগের দুই মাসের চেয়েই অনেকটা বেশি— ২১ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এখন পর্যন্ত সার্বিক সংক্রমণ শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৯৮ শতাংশের (৭ লাখ ৬৬ হাজার ৪৬০টি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে ৯৮ হাজার ৩৩০টি সংক্রমণ শনাক্ত) চেয়েও জুনের শনাক্তের হার অনেকটাই বেশি।

বিজনেস আওয়ার/০১ জুলাই, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: