ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তালিকাভুক্ত ফান্ডগুলোর ৪২৬ কোটি টাকার লভ্যাংশ ঘোষণা

শেয়ারবাজারের চলমান উত্থানে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর মুনাফায় বড় ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। যাতে করে ফান্ডগুলো থেকে এ বছর রেকর্ড ৪২৬ কোটি টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। যার ৫২ শতাংশ এসেছে রেস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট পরিচালিত ফান্ডগুলো থেকে।

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৭টি ফান্ড রয়েছে। এরমধ্যে ভ্যানগার্ড এএমএল ফান্ড ওয়ান ও এলআর গ্লোবাল ফান্ড ওয়ান সেপ্টেম্বর ক্লোজিং হওয়ায় এখনো লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারেনি। এছাড়া সাউথইস্ট ফার্স্ট ফান্ড বে-মেয়াদিতে রুপান্তর প্রক্রিয়ায় থাকায় লভ্যাংশ ঘোষণা বন্ধ রয়েছে। বাকি ৩৪টি ফান্ড থেকে এ বছর ৪২৬ কোটি টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে।

এই লভ্যাংশের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে রেস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের পরিচালিত ফান্ডগুলো। এই সম্পদ ব্যবস্থাপকটির পরিচালিত ১০টি ফান্ড থেকে ২২১.২৪ কোটি টাকা বা মোট লভ্যাংশের ৫২ শতাংশ ঘোষণা করা হয়েছে।

ফান্ডগুলো থেকে এ বছর রেকর্ড নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার পরেও তাতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ অনেকটা না বাড়ার মতোই। এই খাতটি ডিভিডেন্ড ইল্ডে (বাজার দরের তুলনায় লভ্যাংশ) অন্যসব খাতের থেকে এগিয়ে থাকলেও তাতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কম। গত কয়েক মাসে অন্যসব খাতের শেয়ার দর যে হারে বেড়েছে, সে তুলনায় ফান্ডের দর খুব কমই বেড়েছে।

এর পেছনে অবশ্য ফান্ডের প্রতি বিনিয়োগকারীদের অনাস্থা অন্যতম কারন বলে মনে করেন ভিআইপিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা (সিইও) শহীদুল ইসলাম। তিনি জানান, গত কয়েক বছর ধরে এই খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের অনাস্থা রয়েছে। তবে বর্তমান কমিশন এই খাতের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।

তবে এই খাতে ক্যাপিটাল গেইন কম হওয়াকে বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহের কারন বলে মনে করেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, এই খাতের সব তথ্যই উন্মুক্ত থাকে। যা চাইলেই সবাই জানতে পারে। এছাড়া এই খাতে অন্যসব খাতের ন্যায় যেকোন সময় যেকোন ঘটনা ঘটা এবং পিএসআই আসার সুযোগ নেই। এটাও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ফান্ডে অনাগ্রহের কারন। কিন্তু অন্যসব খাতে পিএসআই নিয়ে অনেক কিছুই ঘটে থাকে। কিন্তু ফান্ডের ব্যবসায় এমনটি হওয়ার সুযোগ নেই বলা যায়।

এ বছর ফান্ডগুলোর রেকর্ড পরিমাণ লভ্যাংশ ঘোষণা করার পেছনে কারন হিসেবে রয়েছে শেয়ারবাজারের বড় উত্থান। কারণ ফান্ডগুলোকে তাদের আকারের কমপক্ষে ৬০ শতাংশ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যাতে ফান্ডের আয় মূলত শেয়ারবাজারের সঙ্গে জড়িত।

তবে লভ্যাংশের পরিমাণ আরও বাড়তে পারত। কারণ লভ্যাংশ ঘোষণা করা ফান্ডগুলোর মধ্যে ৩টি ডিসেম্বর ক্লোজিং ও ২টি মার্চ ক্লোজিং রয়েছে। যেগুলো ওই সময়ের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। তবে এর পরবর্তীতে শেয়ারবাজার আরও ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। যে কারনে ওই ফান্ডগুলোও জুন ক্লোজিং হলে হয়তো লভ্যাংশের পরিমাণ বাড়তে পারত।

তবে জুন ক্লোজিংয়ের পরের ২ মাস (জুলাই, আগস্ট) শেয়ারবাজারে রেকর্ড উত্থান হয়েছে। যা স্বাভাবিকভাবেই ফান্ডগুলোর চলতি অর্থবছরের ১ম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর ২১) মুনাফার উত্থানেও বড় ভূমিকা রাখবে।

ফান্ডগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হারে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে এনএলআই ফার্স্ট ফান্ড। এই ফান্ডটি থেকে ১৭.৫০% হারে লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। এরপরের অবস্থানে থাকা এসইএমএল গ্রোথ ফান্ড, এশিয়ান টাইগার গ্রোথ ফান্ড ও এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ফান্ড থেকে ১৫% হারে লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে।

তবে সবচেয়ে বেশি লভ্যাংশ বিতরন করা হবে ফার্স্ট জনতা ব্যাংক ফান্ড থেকে। এ ফান্ড থেকে ১৩% হারে মোট ৩৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হবে। এরপরের অবস্থানে থাকা ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ফান্ড থেকে ৪% হারে ৩১ কোটি ৪ লাখ টাকা ও ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট ফান্ড থেকে ৯% হারে ২৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা। ৩টি ফান্ডই রেস ম্যানেজমেন্টের পরিচালিত।

নিম্নে চলতি বছরে লভ্যাংশ ঘোষণা করা ফান্ডগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরা হল-

ফান্ডের নামলভ্যাংশের হারলভ্যাংশের পরিমাণ (কোটি টাকা)ইউনিট দর (টাকা)
এনএলআই ফার্স্ট ফান্ড১৭.৫%৮.৮১১৪.৮০
এসইএমএল গ্রোথ ফান্ড১৫%১০.৯৪১০.৮০
এশিয়ান টাইগার গ্রোথ ফান্ড১৫%৯.২৭১৩.১০
এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ফান্ড১৫%৭.৫০১১
সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামিক ফান্ড১৩.৫%৯.০৩১৯.৫০
ফার্স্ট জনতা ব্যাংক ফান্ড১৩%৩৭.৬৯
গ্রামীন ওয়ান : স্কীম টু১৩%২৩.৭১১৭.৯০
ইবিএল ফার্স্ট ফান্ড১৩%১৮.৮২৯.৩০
সিএপিএম বিডিবিএল ফান্ড১৩%৬.৫২১২.৭০
এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক ফান্ড১২.২৫%১২.২৫৯.১০
গ্রীণ ডেল্টা ফান্ড১২%১৮৮.১০
ডিবিএইচ ফার্স্ট ফান্ড১২%১৪.৪০৮.৩০
এমবিএল ফার্স্ট ফান্ড১১.৫%১১.৫০৮.২০
রিল্যায়েন্স ওয়ান ফান্ড১০.৫%৬.৩৫১২.৬০
এসইএমএল আইবিবিএল শরীয়াহ ফান্ড১০%১০১০.৮০
ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট ফান্ড৯%২৭.৩২৭.৪০
পপুলার লাইফ ফার্স্ট ফান্ড৮.৫%২৫.৪২৬.৮০
পিএইচপি ফার্স্ট ফান্ড৮.৫%২৩.৯৬
এবি ব্যাংক ফার্স্ট ফান্ড৮%১৯.১৩
আইসিবি এমএমসিএল ২য় ফান্ড৮%১২.৫০
প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট ফান্ড৮%১.৬০২০.২০
আইএফআইসি ফার্স্ট ফান্ড৭.৫%১৩.৬৬৬.৮০
এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট ফান্ড৭.৫%১০.৭৪৭.৮০
প্রাইম ব্যাংক ফার্স্ট আইসিবি ফান্ড৭.৫%৭.৫০৭.৪০
এনসিসিবিএল ফান্ড ওয়ান৭.২৫%৭.৮৭৮.৬০
আইসিবি ৩য় এনআরবি ফান্ড৭%৭.১০
আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফার্স্ট ফান্ড৭%৮.৬০
আইসিবি এএমসিএল ফার্স্ট অগ্রনি ফান্ড৭%৬.৮৭৯.২০
ইবিএল এনআরবি ফান্ড৬%১৩.৪৬৬.৯০
আইসিবি এমপ্লয়ীজ ফান্ড ১: স্কিম ১৬%৪.৫০৭.৮০
ফনিক্স ফাইন্যান্স ফার্স্ট ফান্ড৬%৩.৬০৯.৫০
ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ফান্ড৪%৩১.০৪
আইএফআইএল ইসলামিক ফান্ড ১৪%৬.৮০
ভ্যানগার্ড রূপালি ব্যাংক ফান্ড১.৬০%২.৫৪৮.৭০
মোট ৩৪টি ফান্ড৪২৬ কোটি টাকা

এদিকে সবচেয়ে কম হারে লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে ভ্যানগার্ড রূপালি ব্যাংক ফান্ড থেকে। ডিসেম্বর ক্লোজিং এই ফান্ড থেকে ২০২০ সালের জন্য ১.৬০% হারে লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। এরপরে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন ৪% হারে লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে আইএফআইএল ইসলামিক ফান্ড ১ ও ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ফান্ড থেকে।

তবে টাকার পরিমাণে সবচেয়ে কম লভ্যাংশ বিতরন করা হয়েছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট ফান্ড থেকে। ডিসেম্বর ক্লোজিং এই ফান্ডটি থেকে ৮% হারে মোট ১ কোটি ৬০ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হয়েছে। এরপরে ভ্যানগার্ড রূপালি ব্যাংক ফান্ড থেকে ২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা এবং আইসিবি এমএমসিএল ২য় ফান্ড ও আইএফআইএল ইসলামিক ফান্ড ১ থেকে ৪ কোটি টাকা করে দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, ৩৭টি ফান্ডের মধ্যে এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক ফান্ড ও এমবিএল ফার্স্ট ফান্ড মার্চ ক্লোজিং। এছাড়া ভ্যানগার্ড রূপালি ব্যাংক ফান্ড, প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট ফান্ড ও এনসিসিবিএল ফান্ড ওয়ান ডিসেম্বর ক্লোজিং। আর ভ্যানগার্ড এএমএল ফান্ড ওয়ান ও এলআর গ্লোবাল ফান্ড ওয়ান সেপ্টেম্বর ক্লোজিং। বাকি সব ফান্ড জুন ক্লোজিং।

বিজনেস আওয়ার/০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

4 thoughts on “তালিকাভুক্ত ফান্ডগুলোর ৪২৬ কোটি টাকার লভ্যাংশ ঘোষণা

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

তালিকাভুক্ত ফান্ডগুলোর ৪২৬ কোটি টাকার লভ্যাংশ ঘোষণা

পোস্ট হয়েছে : ১১:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

শেয়ারবাজারের চলমান উত্থানে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর মুনাফায় বড় ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। যাতে করে ফান্ডগুলো থেকে এ বছর রেকর্ড ৪২৬ কোটি টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। যার ৫২ শতাংশ এসেছে রেস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট পরিচালিত ফান্ডগুলো থেকে।

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৭টি ফান্ড রয়েছে। এরমধ্যে ভ্যানগার্ড এএমএল ফান্ড ওয়ান ও এলআর গ্লোবাল ফান্ড ওয়ান সেপ্টেম্বর ক্লোজিং হওয়ায় এখনো লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারেনি। এছাড়া সাউথইস্ট ফার্স্ট ফান্ড বে-মেয়াদিতে রুপান্তর প্রক্রিয়ায় থাকায় লভ্যাংশ ঘোষণা বন্ধ রয়েছে। বাকি ৩৪টি ফান্ড থেকে এ বছর ৪২৬ কোটি টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে।

এই লভ্যাংশের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে রেস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের পরিচালিত ফান্ডগুলো। এই সম্পদ ব্যবস্থাপকটির পরিচালিত ১০টি ফান্ড থেকে ২২১.২৪ কোটি টাকা বা মোট লভ্যাংশের ৫২ শতাংশ ঘোষণা করা হয়েছে।

ফান্ডগুলো থেকে এ বছর রেকর্ড নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার পরেও তাতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ অনেকটা না বাড়ার মতোই। এই খাতটি ডিভিডেন্ড ইল্ডে (বাজার দরের তুলনায় লভ্যাংশ) অন্যসব খাতের থেকে এগিয়ে থাকলেও তাতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কম। গত কয়েক মাসে অন্যসব খাতের শেয়ার দর যে হারে বেড়েছে, সে তুলনায় ফান্ডের দর খুব কমই বেড়েছে।

এর পেছনে অবশ্য ফান্ডের প্রতি বিনিয়োগকারীদের অনাস্থা অন্যতম কারন বলে মনে করেন ভিআইপিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা (সিইও) শহীদুল ইসলাম। তিনি জানান, গত কয়েক বছর ধরে এই খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের অনাস্থা রয়েছে। তবে বর্তমান কমিশন এই খাতের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।

তবে এই খাতে ক্যাপিটাল গেইন কম হওয়াকে বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহের কারন বলে মনে করেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, এই খাতের সব তথ্যই উন্মুক্ত থাকে। যা চাইলেই সবাই জানতে পারে। এছাড়া এই খাতে অন্যসব খাতের ন্যায় যেকোন সময় যেকোন ঘটনা ঘটা এবং পিএসআই আসার সুযোগ নেই। এটাও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ফান্ডে অনাগ্রহের কারন। কিন্তু অন্যসব খাতে পিএসআই নিয়ে অনেক কিছুই ঘটে থাকে। কিন্তু ফান্ডের ব্যবসায় এমনটি হওয়ার সুযোগ নেই বলা যায়।

এ বছর ফান্ডগুলোর রেকর্ড পরিমাণ লভ্যাংশ ঘোষণা করার পেছনে কারন হিসেবে রয়েছে শেয়ারবাজারের বড় উত্থান। কারণ ফান্ডগুলোকে তাদের আকারের কমপক্ষে ৬০ শতাংশ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যাতে ফান্ডের আয় মূলত শেয়ারবাজারের সঙ্গে জড়িত।

তবে লভ্যাংশের পরিমাণ আরও বাড়তে পারত। কারণ লভ্যাংশ ঘোষণা করা ফান্ডগুলোর মধ্যে ৩টি ডিসেম্বর ক্লোজিং ও ২টি মার্চ ক্লোজিং রয়েছে। যেগুলো ওই সময়ের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। তবে এর পরবর্তীতে শেয়ারবাজার আরও ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। যে কারনে ওই ফান্ডগুলোও জুন ক্লোজিং হলে হয়তো লভ্যাংশের পরিমাণ বাড়তে পারত।

তবে জুন ক্লোজিংয়ের পরের ২ মাস (জুলাই, আগস্ট) শেয়ারবাজারে রেকর্ড উত্থান হয়েছে। যা স্বাভাবিকভাবেই ফান্ডগুলোর চলতি অর্থবছরের ১ম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর ২১) মুনাফার উত্থানেও বড় ভূমিকা রাখবে।

ফান্ডগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হারে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে এনএলআই ফার্স্ট ফান্ড। এই ফান্ডটি থেকে ১৭.৫০% হারে লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। এরপরের অবস্থানে থাকা এসইএমএল গ্রোথ ফান্ড, এশিয়ান টাইগার গ্রোথ ফান্ড ও এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ফান্ড থেকে ১৫% হারে লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে।

তবে সবচেয়ে বেশি লভ্যাংশ বিতরন করা হবে ফার্স্ট জনতা ব্যাংক ফান্ড থেকে। এ ফান্ড থেকে ১৩% হারে মোট ৩৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হবে। এরপরের অবস্থানে থাকা ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ফান্ড থেকে ৪% হারে ৩১ কোটি ৪ লাখ টাকা ও ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট ফান্ড থেকে ৯% হারে ২৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা। ৩টি ফান্ডই রেস ম্যানেজমেন্টের পরিচালিত।

নিম্নে চলতি বছরে লভ্যাংশ ঘোষণা করা ফান্ডগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরা হল-

ফান্ডের নামলভ্যাংশের হারলভ্যাংশের পরিমাণ (কোটি টাকা)ইউনিট দর (টাকা)
এনএলআই ফার্স্ট ফান্ড১৭.৫%৮.৮১১৪.৮০
এসইএমএল গ্রোথ ফান্ড১৫%১০.৯৪১০.৮০
এশিয়ান টাইগার গ্রোথ ফান্ড১৫%৯.২৭১৩.১০
এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ফান্ড১৫%৭.৫০১১
সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামিক ফান্ড১৩.৫%৯.০৩১৯.৫০
ফার্স্ট জনতা ব্যাংক ফান্ড১৩%৩৭.৬৯
গ্রামীন ওয়ান : স্কীম টু১৩%২৩.৭১১৭.৯০
ইবিএল ফার্স্ট ফান্ড১৩%১৮.৮২৯.৩০
সিএপিএম বিডিবিএল ফান্ড১৩%৬.৫২১২.৭০
এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক ফান্ড১২.২৫%১২.২৫৯.১০
গ্রীণ ডেল্টা ফান্ড১২%১৮৮.১০
ডিবিএইচ ফার্স্ট ফান্ড১২%১৪.৪০৮.৩০
এমবিএল ফার্স্ট ফান্ড১১.৫%১১.৫০৮.২০
রিল্যায়েন্স ওয়ান ফান্ড১০.৫%৬.৩৫১২.৬০
এসইএমএল আইবিবিএল শরীয়াহ ফান্ড১০%১০১০.৮০
ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট ফান্ড৯%২৭.৩২৭.৪০
পপুলার লাইফ ফার্স্ট ফান্ড৮.৫%২৫.৪২৬.৮০
পিএইচপি ফার্স্ট ফান্ড৮.৫%২৩.৯৬
এবি ব্যাংক ফার্স্ট ফান্ড৮%১৯.১৩
আইসিবি এমএমসিএল ২য় ফান্ড৮%১২.৫০
প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট ফান্ড৮%১.৬০২০.২০
আইএফআইসি ফার্স্ট ফান্ড৭.৫%১৩.৬৬৬.৮০
এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট ফান্ড৭.৫%১০.৭৪৭.৮০
প্রাইম ব্যাংক ফার্স্ট আইসিবি ফান্ড৭.৫%৭.৫০৭.৪০
এনসিসিবিএল ফান্ড ওয়ান৭.২৫%৭.৮৭৮.৬০
আইসিবি ৩য় এনআরবি ফান্ড৭%৭.১০
আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফার্স্ট ফান্ড৭%৮.৬০
আইসিবি এএমসিএল ফার্স্ট অগ্রনি ফান্ড৭%৬.৮৭৯.২০
ইবিএল এনআরবি ফান্ড৬%১৩.৪৬৬.৯০
আইসিবি এমপ্লয়ীজ ফান্ড ১: স্কিম ১৬%৪.৫০৭.৮০
ফনিক্স ফাইন্যান্স ফার্স্ট ফান্ড৬%৩.৬০৯.৫০
ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ফান্ড৪%৩১.০৪
আইএফআইএল ইসলামিক ফান্ড ১৪%৬.৮০
ভ্যানগার্ড রূপালি ব্যাংক ফান্ড১.৬০%২.৫৪৮.৭০
মোট ৩৪টি ফান্ড৪২৬ কোটি টাকা

এদিকে সবচেয়ে কম হারে লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে ভ্যানগার্ড রূপালি ব্যাংক ফান্ড থেকে। ডিসেম্বর ক্লোজিং এই ফান্ড থেকে ২০২০ সালের জন্য ১.৬০% হারে লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। এরপরে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন ৪% হারে লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে আইএফআইএল ইসলামিক ফান্ড ১ ও ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ফান্ড থেকে।

তবে টাকার পরিমাণে সবচেয়ে কম লভ্যাংশ বিতরন করা হয়েছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট ফান্ড থেকে। ডিসেম্বর ক্লোজিং এই ফান্ডটি থেকে ৮% হারে মোট ১ কোটি ৬০ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হয়েছে। এরপরে ভ্যানগার্ড রূপালি ব্যাংক ফান্ড থেকে ২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা এবং আইসিবি এমএমসিএল ২য় ফান্ড ও আইএফআইএল ইসলামিক ফান্ড ১ থেকে ৪ কোটি টাকা করে দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, ৩৭টি ফান্ডের মধ্যে এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক ফান্ড ও এমবিএল ফার্স্ট ফান্ড মার্চ ক্লোজিং। এছাড়া ভ্যানগার্ড রূপালি ব্যাংক ফান্ড, প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট ফান্ড ও এনসিসিবিএল ফান্ড ওয়ান ডিসেম্বর ক্লোজিং। আর ভ্যানগার্ড এএমএল ফান্ড ওয়ান ও এলআর গ্লোবাল ফান্ড ওয়ান সেপ্টেম্বর ক্লোজিং। বাকি সব ফান্ড জুন ক্লোজিং।

বিজনেস আওয়ার/০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: