1. [email protected] : anjuman : anjuman
  2. [email protected] : user : user
  3. [email protected] : Admin : Admin
  4. [email protected] : Nayan Babu : Nayan Babu
ওটিসি থেকে ফেরা ৪ কোম্পানির সার্বিক অবস্থা তদন্তে ডিএসইকে নির্দেশ
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৪ পূর্বাহ্ন

ওটিসি থেকে ফেরা ৪ কোম্পানির সার্বিক অবস্থা তদন্তে ডিএসইকে নির্দেশ

ইব্রাহিম হোসাইন (রেজোয়ান)
  • পোস্ট হয়েছে : সোমবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১
print sharing button

ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেট থেকে মূল মার্কেটে ফিরেই লাগামহীন বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিং, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল মিলস, মুন্নু ফেব্রিকসের শেয়ার দর। ব্যবসায় বড় পতনের পরেও মূল মার্কেটে ফেরার মাত্র ৩ মাসের ব্যবধানে কোম্পানিগুলোর গড় শেয়ার দর বেড়েছে ৮০০ শতাংশ করে। এই অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির কারন অনুসন্ধানে কোম্পানিগুলোর সার্বিক পরিস্থিতি তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এ লক্ষ্যে সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি।

এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বিজনেস আওয়ারকে বলেন, ওটিসি থেকে ফেরা কোম্পানিগুলোর সার্বিক পরিস্থিতি যাচাই করার জন্য ডিএসইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে আগামি ২০ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, ডিএসই ওটিসি থেকে ফেরা কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক বাস্তব চিত্র তুলে ধরবে। এছাড়া প্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল (পিএসআই) তথ্যের সত্যতা যাচাই করবে। একইসঙ্গে কোম্পানিগুলোর দর বৃদ্ধির কারন অনুসন্ধান করবে। এর পেছনে কোন ধরনের অনিয়ম হয়েছে কিনা, তা খুজে বের করতে বলা হয়েছে।

বিএসইসির আরেকটি সূত্রে জানিয়েছে, ওটিসি থেকে ফেরা কোম্পানিগুলোর অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধি নিয়ে কমিশন চিন্তিত। এই দর বৃদ্ধিকে স্বাভাবিক মনে করছে না কমিশন। তাই এর পেছনে কারসাজির সঙ্গে কেউ জড়িত আছে কিনা, তা খুজে বের করা হবে। যদি কাউকে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সে যেই হোক না কেনো।

বিএসইসির নির্দেশনায় গত ১৩ জুন ওটিসি থেকে ফেরা ৪টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন মূল মার্কেটে শুরু হয়। যার পর থেকেই টানা দর বাড়তে থাকে কোম্পানিগুলো। এরমধ্যে কোম্পানিগুলোর ব্যবসার পতনের খবর প্রকাশও তাতে বাধা হয়ে দাড়াঁতে পারেনি। এমনকি দর বৃদ্ধির পেছনে কোন কারন নেই বলে ডিএসই থেকে সচেতনতামূলক তথ্য প্রকাশের পরে টানা দর বাড়তে থাকে।

এই স্বল্প সময়ের মধ্যে গড়ে ৮০০ শতাংশ করে দর বৃদ্ধিকে স্বাভাবিক মনে করছেন না বাজার সংশ্লিষ্টরাও। তাদের মতে, স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ৩ মাসের ব্যবধানে ৮০০ শতাংশ করে দর পাওয়া সম্ভব না। নিশ্চয় এর পেছনে কোন একটি গোষ্ঠী কাজ করছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, ৩ মাসের ব্যবধানে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ৮০০ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়া সম্ভব না। এছাড়া ব্যবসায় পতন সত্ত্বেও শেয়ার দর টানা বৃদ্ধি পাওয়াও স্বাভাবিক লক্ষণ না।

লেনদেন শুরু হওয়ার পরে অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধি পাওয়ায় ৪ কোম্পানি নিয়ে সন্দেহ তৈরী হয় ডিএসই কর্তৃপক্ষের কাছে। যে কারনে তারা কারন অনুসন্ধান করে। কিন্তু কোম্পানি ৪টির মধ্যে ১টিরও টানা দর বৃদ্ধির পেছনে কোন কারন খুজেঁ পায়নি ডিএসই।

এ নিয়ে গত ২১ জুন মুন্নু ফেব্রিকসের শেয়ার দর বাড়ার পেছনে কোন কারন নেই বলে সচেতনতামূলক তথ্য প্রকাশ করে ডিএসই। এছাড়া ২২ জুন মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিং, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ও তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল মিলসের দর বৃদ্ধির কারন নেই বলে জানায়।

নিম্নে ‍ওটিসি থেকে ফেরা ৪ কোম্পানির শেয়ার দর বৃদ্ধির তথ্য তুলে ধরা হল-

কোম্পানির নামওটিসি থেকে ফেরার দর১৩ সেপ্টেম্বরের দরবৃদ্ধির হার
পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং১৬ টাকা২১৫.৯০ টাকা১২৪৯%
তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল মিলস১২ টাকা১৮০.৪০ টাকা১৪০৩%
মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিং৫০ টাকা২২৩.৯০ টাকা৩৪৮%
মুন্নু ফেব্রিকস১০ টাকা২৯.৯০ টাকা১৯৯%
গড় দর বৃদ্ধি  ৮০০%

এই অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধি পেলেও কোম্পানিগুলোর ব্যবসায় হয়েছে বড় পতন। ৪টি কোম্পানির মধ্যে ৩টিরই মুনাফা তলানিতে নেমে এসেছে। বাকি ১টি কোম্পানির মুনাফা কিছুটা বেড়েছে। তবে ব্যবসার এই পতন বাধা হয়ে দাড়াঁতে পারেনি। যদিও যেকোন কোম্পানির দর উত্থান-পতনের পেছনে সবচেয়ে বড় কারন হওয়ার কথা ব্যবসায়িক অবস্থা। তবে সেটা সম্ভব, যদি গেম্বলাররা কৃত্রিমভাবে না বাড়ায়।

নিম্নে কোম্পানিগুলোর শেয়ারপ্রতি মুনাফার (ইপিএস) তথ্য তুলে ধরা হল-

কোম্পানির নাম২০-২১ অর্থবছরের ৯ মাসের ইপিএস (টাকা)১৯-২০ অর্থবছরের ৯ মাসের ইপিএস (টাকা)হ্রাস-বৃদ্ধির হার
মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিং০.২৮৫.০৬(৯৪%)
পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং০.৪৪৩.৫৩(৮৮%)
মুন্নু ফেব্রিকস০.০৪০.০৬(৩৩%)
তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল মিলস০.৯৮০.৮১২১%

কতটা ঝুঁকিতে বিনিয়োগ-

ব্যবসায় এই পতন কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগকে অতি ঝুঁকিতে নিয়ে গেছে। যা কোম্পানিগুলোর মূল্য-আয় অনুপাত (পি/ই) দেখলেই সহজে বোঝা যায়। যে কারনে সবকয়টি কোম্পানিতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় মার্জিণ ঋণ বন্ধ হয়ে গেছে।

যেখানে ৪০ পিই-কে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় মার্জিণ ঋণ বন্ধ করে দেওয়া হয়, সেখানে মুন্নু ফেব্রিকসের পিই ৫৬০.৬৩, মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের পিই ৫৯৯.৭৩, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের পিই ৩৬৮.০১ ও তমিজউদ্দিন টেক্সটাইলের পিই ১৩৮.০৬।

অর্থাৎ মুন্নু ফেব্রিকস থেকে বিনিয়োগ ফেরত পেতে অপেক্ষা করতে হবে ৫৬০.৬৩ বছর। এছাড়া মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিং থেকে ৫৯৯.৭৩ বছর, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং থেকে ৩৬৮.০১ বছর ও তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল থেকে বিনিয়োগ ফেরতে ১৩৮.০৬ বছর অপেক্ষা করতে হবে।

তবে মৌলভিত্তির হিসাবের বাহিরে গিয়ে কারসাজির মাধ্যমে কেউ কেউ দ্রুত বিনিয়োগ ফেরত পেতে পারে। সেক্ষেত্রে জুয়ার ন্যায় বাজি ধরার মতো হবে। এতে একটি পক্ষ হারবে এবং অপরপক্ষ জিতবে।

নিম্নে কোম্পানিগুলোর পিই এর তথ্য তুলে ধরা হল-

কোম্পানির নামপিই
মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিং৫৯৯.৭৩
মুন্নু ফেব্রিকস৫৬০.৬৩
পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং৩৬৮.০১
তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল মিলস১৩৮.০৬

যে কারনে টানা দর বৃদ্ধি সহজ হচ্ছে-

মূল মার্কেটে ফেরা কোম্পানিগুলোর টানা বা অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির পেছনে স্বল্প পরিশোধিত মূলধন একটি কারন হয়ে থাকতে পারে। পরিশোধিত মূলধন কম হলে সহজেই বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরী করা যায়। এতে করে দর বাড়ে দ্রুত।

কোম্পানিগুলোর পরিশোধিত মূলধন

কোম্পানির নামপরিশোধিত মূলধন (কোটি টাকা)
মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিং৩.২৯
পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং৩.৭৩
তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল মিলস৩০.০৭
মুন্নু ফেব্রিকস১১৫

বিজনেস আওয়ার/১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের আরো সংবাদ