ঢাকা , সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মহীসোপানে ভারতের দাবি: আপত্তি জানিয়ে জাতিসংঘে চিঠি বাংলাদেশের

  • পোস্ট হয়েছে : ১০:৩৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • 63

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বঙ্গোপসাগরের কন্টিনেন্টাল শেলফ বা মহীসোপানে ভারতের দাবির বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে জাতিসংঘে একটি চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। গত ১৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ মহাসচিবের বরাবর একটি চিঠি দেয় বাংলাদেশ। চিঠিটি জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। খবর বিবিসি।

চিঠিতে বলা হয়, গত এপ্রিলে জাতিসংঘের মহীসোপান নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিশনে (সিএলসিএস) ভারত দাবি করেছিল, বাংলাদেশ যে মহীসোপান নিজেদের বলে দাবি করছে, তা ভারতের মহীসোপানের অংশ। সে সময়ই বাংলাদেশ জানিয়েছিল ভারতের ওই আপত্তির কোনো আইনগত ভিত্তি নেই বলে তারা মনে করে। এ বিষয়ে কমিশনের সামনে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরার কথাও জানায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মহীসোপান নিয়ে বিতর্কের শুরুটা হয় ২০০৯ সালে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স বিভাগের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল খুরশিদ আলম জানান, ২০০৯ সালে ভারত তাদের সমুদ্রসীমা নির্ধারণের জন্য যে ভিত্তিরেখা বা বেইজ পয়েন্ট নির্ধারণ করে, তার মধ্যে দুটি বেইজ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশের আপত্তি ছিল। ২০০৯ সালে তাদের সমুদ্রসীমা নির্ধারণের সময় একটি বেইজ পয়েন্ট ছিল বাংলাদেশের জলসীমার ভেতরে, আরেকটি বেইজ পয়েন্ট ছিল সাড়ে দশ নটিক্যাল মাইল সমুদ্রের ভেতরে।

চিঠিতে বাংলাদেশ উল্লেখ করেছে, ১৯৭৬ সালে ভারত সরকার সমুদ্রবিষয়ক টেরিটোরিয়াল ওয়াটার ও মেরিটাইম জোন আইন প্রণয়ন করে। এই আইন প্রণয়নের ৩৩ বছর পর ২০০৯ সালে ভারত ভিত্তিরেখা নির্ধারণের জন্য সেই আইনে সংশোধনী আনে। ২০০৯ সালের সংশোধনীতে ভারত ‘স্ট্রেট লাইন বেসলাইন’ পদ্ধতি ব্যবহার করছে, যেটা জাতিসংঘের সমুদ্র আইনবিষয়ক কনভেনশনের ৭ নম্বর ধারার পরিপন্থী।

এর আগে বাংলাদেশের দাবি করা মহীসোপান নিয়ে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে জাতিসংঘে আপত্তি জানিয়ে চিঠি দেয় ভারত। দেশটি দাবি করে, সমুদ্রসীমা নিয়ে বাংলাদেশ যেই মহীসোপান নিজেদের বলে দাবি করছে তা ভারতের অংশ।

এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘে আপত্তি তুলে চিঠি দেয় বাংলাদেশ। সেখানে বলা হয়, ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক আদালত যে রায় দিয়েছে, তা অনুসরণ করেই মহীসোপানের দাবি নির্ধারণ করে বাংলাদেশ। ফলে সেই রায়ের পর দুই দেশের মধ্যে সমুদ্রসীমা নিয়ে আর কোনো বিরোধ থাকতে পারে না।

২০১১ সালে নিজেদের সমুদ্রসীমা নির্ধারণ করে জাতিসংঘের মহীসোপান নির্ধারণ বিষয়ক কমিশনে আবেদন করে বাংলাদেশ। এরপর বাংলাদেশ ২০১৪ সালে সমুদ্রসীমা নিয়ে ভারতের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক আদালতে জয়লাভ করে।

বিজনেস আওয়ার/১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১/কমা

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

মহীসোপানে ভারতের দাবি: আপত্তি জানিয়ে জাতিসংঘে চিঠি বাংলাদেশের

পোস্ট হয়েছে : ১০:৩৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বঙ্গোপসাগরের কন্টিনেন্টাল শেলফ বা মহীসোপানে ভারতের দাবির বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে জাতিসংঘে একটি চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। গত ১৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ মহাসচিবের বরাবর একটি চিঠি দেয় বাংলাদেশ। চিঠিটি জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। খবর বিবিসি।

চিঠিতে বলা হয়, গত এপ্রিলে জাতিসংঘের মহীসোপান নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিশনে (সিএলসিএস) ভারত দাবি করেছিল, বাংলাদেশ যে মহীসোপান নিজেদের বলে দাবি করছে, তা ভারতের মহীসোপানের অংশ। সে সময়ই বাংলাদেশ জানিয়েছিল ভারতের ওই আপত্তির কোনো আইনগত ভিত্তি নেই বলে তারা মনে করে। এ বিষয়ে কমিশনের সামনে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরার কথাও জানায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মহীসোপান নিয়ে বিতর্কের শুরুটা হয় ২০০৯ সালে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স বিভাগের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল খুরশিদ আলম জানান, ২০০৯ সালে ভারত তাদের সমুদ্রসীমা নির্ধারণের জন্য যে ভিত্তিরেখা বা বেইজ পয়েন্ট নির্ধারণ করে, তার মধ্যে দুটি বেইজ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশের আপত্তি ছিল। ২০০৯ সালে তাদের সমুদ্রসীমা নির্ধারণের সময় একটি বেইজ পয়েন্ট ছিল বাংলাদেশের জলসীমার ভেতরে, আরেকটি বেইজ পয়েন্ট ছিল সাড়ে দশ নটিক্যাল মাইল সমুদ্রের ভেতরে।

চিঠিতে বাংলাদেশ উল্লেখ করেছে, ১৯৭৬ সালে ভারত সরকার সমুদ্রবিষয়ক টেরিটোরিয়াল ওয়াটার ও মেরিটাইম জোন আইন প্রণয়ন করে। এই আইন প্রণয়নের ৩৩ বছর পর ২০০৯ সালে ভারত ভিত্তিরেখা নির্ধারণের জন্য সেই আইনে সংশোধনী আনে। ২০০৯ সালের সংশোধনীতে ভারত ‘স্ট্রেট লাইন বেসলাইন’ পদ্ধতি ব্যবহার করছে, যেটা জাতিসংঘের সমুদ্র আইনবিষয়ক কনভেনশনের ৭ নম্বর ধারার পরিপন্থী।

এর আগে বাংলাদেশের দাবি করা মহীসোপান নিয়ে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে জাতিসংঘে আপত্তি জানিয়ে চিঠি দেয় ভারত। দেশটি দাবি করে, সমুদ্রসীমা নিয়ে বাংলাদেশ যেই মহীসোপান নিজেদের বলে দাবি করছে তা ভারতের অংশ।

এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘে আপত্তি তুলে চিঠি দেয় বাংলাদেশ। সেখানে বলা হয়, ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক আদালত যে রায় দিয়েছে, তা অনুসরণ করেই মহীসোপানের দাবি নির্ধারণ করে বাংলাদেশ। ফলে সেই রায়ের পর দুই দেশের মধ্যে সমুদ্রসীমা নিয়ে আর কোনো বিরোধ থাকতে পারে না।

২০১১ সালে নিজেদের সমুদ্রসীমা নির্ধারণ করে জাতিসংঘের মহীসোপান নির্ধারণ বিষয়ক কমিশনে আবেদন করে বাংলাদেশ। এরপর বাংলাদেশ ২০১৪ সালে সমুদ্রসীমা নিয়ে ভারতের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক আদালতে জয়লাভ করে।

বিজনেস আওয়ার/১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১/কমা

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: