বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : রাজধানীর বাজারগুলোতে হঠাৎ করেই বেড়েছে মুরগি ও ডিমের দাম। প্রতিটি ডিমে দুই টাকা এবং প্রতি কেজি মুরগিতে দাম বেড়েছে ৮০ টাকা পর্যন্ত। রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা ও পাইকারি ডিম-মুরগি ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
ব্যবসায়ীর জানিয়েছেন, মুরগি ও ডিমের দামের ওপর রাজধানীর ব্যবসায়ীদের খুব একটা নিয়ন্ত্রণ নেই। ডিম ও মুরগির দাম এখন অনেকটাই নির্ভর করে গাজীপুর ও টঙ্গী অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের ওপর। মূলত গাজীপুর ও টঙ্গী অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের বেঁধে দেওয়া দামেই রাজধানীতে ডিম ও মুরগি বিক্রি হয়।
ব্যবসায়ীরা আরও জানিয়েছেন, এখন বাজারে মুরগি ও ডিমের সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। কোনো ধরনের ঘাটতি নেই। মূলত উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতিকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে বাজারে ডিম-মুরগির দাম বাড়ানো হচ্ছে। এছাড়া এ মুহূর্তে দাম বাড়ার আর কোনো বিশেষ কারণ নেই।
তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে ফার্মের মুরগির এক ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকা, যা কিছুদিন আগে ছিল ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। আর মুদি দোকানে এক পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১১ টাকা, যা কিছুদিন আগেও ছিল ৮ টাকা।
ডিমের এমন দাম বাড়ার বিষয়ে কারওয়ানবাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা গাজীপুর থেকে ডিম আনি। সপ্তাহ দুই ধরে ওখানে ডিমের দাম বাড়ছে। বেশি দামে কেনা কারণে আমরা বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।
হঠাৎ ডিমের দাম বাড়ার কারণের ব্যাপারে তিনি বলেন, ঢাকায় সব থেকে বেশি ডিম বিক্রি হলেও ডিমের দামের ওপর ঢাকার ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ নেই। ডিমের দাম মূলত গাজীপুর, জয়দেবপুর ও টঙ্গীর ব্যবসায়ীদের ওপর নির্ভর করে। ডিমের দাম বাড়বে কি কমবে, ওনারাই ঠিক করে দেন।
এ ব্যবসায়ী আরও বলেন, বাজারে আগের মতোই ডিমের সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। তারপর কেন ডিমের দাম বাড়ছে বলতে পারবো না। তবে গাজীপুরের ব্যবসায়ীরা বলছেন, বন্যার কারণে মুরগির খামারের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। এ কারণে দাম বাড়ছে।
মালিবাগ হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর জাগো নিউজকে বলেন, ডিমের দাম কেন বাড়ছে, তা আমরা জানি না। তবে পাইকারি বাজারে গিয়ে যেটা শুনতে পারছি, বন্যার কারণে দাম বেড়েছে। সামনে দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গাজীপুরের ব্যবসায়ী ইদ্রিস আলী ডিমের দাম বাড়ার বিষয়ে জাগো নিউজকে বলেন, বন্যার কারণে এখন ডিমের যোগান অনেক কমে গেছে। দেশি মুরগির ডিম খুব একটা পাওয়া যাচ্ছে না। আবার অনেক ফার্ম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যোগান কম থাকায় আমাদের বেশি দামে ডিম সংগ্রহ করতে হচ্ছে।
এদিকে কিছুদিন আগে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাকিস্তানী কক বা সোনালী মুরগির দাম বেড়ে এখন ৩০০ থেকে ৩১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা, যা কিছুদিন আগে ছিল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা।
মুরগির এ দাম বাড়ার কারণ হিসেবে কাপ্তান বাজারের ব্যবসায়ী মো. ইলিয়াস বলেন, ঢাকায় মুরগির সব থেকে বড় বাজার কাপ্তান বাজার। কিন্তু মুরগির দাম কাপ্তান বাজারের ব্যবসায়ীদের ওপর নির্ভর করে না। এখানে যে মুরগি আসে, তার বড় অংশ সরবরাহ করে গাজীপুর ও জয়দেবপুরের ব্যবসায়ীরা।
তিনি বলেন, আমরা যতটুকু শুনেছি, দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে বন্যায় অনেক পোল্ট্রি খামার ভেসে গেছে। ফলে পোল্ট্রি মুরগির সরবরাহ কমে গেছে। এতে সব ধরনের মুরগির দাম বেড়েছে।
বিজনেস আওয়ার/২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১/এ