বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কিছুটা নিম্নমুখী হওয়ায় অক্টোবর থেকে দেশের সব স্কুল-কলেজে স্বাভাবিক ক্লাস কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা আসতে পারে। এজন্য বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৈঠক ডাকা হয়েছে। বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত হলে জাতীয় পরামর্শক কমিটির মতামত নিয়ে প্রাথমিক-মাধ্যমিক স্তরের সব শ্রেণির ক্লাস বাড়ানো হবে।
এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শ্রেণিকক্ষে আংশিক পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। স্কুল-কলেজগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদান চলছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যত্যয়েরও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, স্কুল-কলেজগুলোতে বর্তমানে চলতি বছরের এসএসসি, এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থী এবং পঞ্চম শ্রেণির সপ্তাহে ছয় দিন ক্লাস নিলেও প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে অন্যান্য শ্রেণিতে সপ্তাহে এক থেকে দুদিন ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। আগামীকাল রোববার থেকে প্রাথমিকের তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির সপ্তাহে দুদিন করে ক্লাস নিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) থেকে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। অক্টোবরের শুরু থেকে পঞ্চম শ্রেণির ছয় দিন আর অন্য সব শ্রেণির সপ্তাহে তিন দিন করে ক্লাস শুরুর নির্দেশনা আসতে পারে।
এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, স্বাভাবিক ক্লাস শুরুর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহ থেকে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির সপ্তাহে একদিনের পরিবর্তে দুদিন করে ক্লাস নিতে বলা হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। জাতীয় পরামর্শক কমিটির মতামত নিয়ে স্বাভাবিক ক্লাস কার্যক্রম শুরু করা হতে পারে।
জানা গেছে, অক্টোবর থেকে প্রাথমিকের সব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে তিন দিন করে দুই থেকে তিনটি বিষয়ে ক্লাস শুরু করা হতে পারে। পঞ্চম শ্রেণিতে আগের মতোই ক্লাস চলতে পারে সপ্তাহে ছয় দিন, প্রতিদিন পাঠদান হতে পারে তিন থেকে চারটি বিষয়ে। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধিসহ সরকারি সব নির্দেশনা মেনে এসব ক্লাস কার্যক্রম চালানো হতে পারে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদেরও আগামী মাসের (অক্টোবর) শুরু থেকে সপ্তাহে একদিনের পরিবর্তে তিন-চারদিন করে ক্লাস শুরু করা হতে পারে। ষষ্ঠ-সপ্তম শ্রেণির সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন তিন থেকে চারটি বিষয়ে আর অষ্টম-নবম শ্রেণির সপ্তাহে চার-পাঁচ দিন, প্রতিদিন তিন থেকে চারটি বিষয়ের ক্লাস নেওয়া হতে পারে। ক্লাসের সংখ্যা না বাড়ালে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সিলেবাস শেষ করা সম্ভব হবে না, এ বিষয়টিও চিন্তাভাবনায় রেখেছে মন্ত্রণালয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে দীর্ঘ ১৭ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নিতে কয়েক বছর চলে যাবে। বর্তমানে যে পদ্ধতিতে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে, তাতে করে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সিলেবাস অসম্পন্ন থেকে যাবে। সে কারণে ধাপে ধাপে ক্লাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে স্কুল-কলেজগুলোতে ক্লাস কার্যক্রম স্বাভাবিক হোক। এক্ষেত্রে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও জাতীয় কমিটির মতামত নেওয়া হয়ে থাকে। ধাপে ধাপে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান স্বাভাবিক করতে পরামর্শক কমিটির মতামত নিয়ে তা বাস্তবায়ন করা হবে।
জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব শ্রেণির ক্লাস নিয়মিত করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। যেহেতু করোনা সংক্রমণ পাঁচ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে, ফলে সব ধরনের পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিজনেস আওয়ার/২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১/এ