ঢাকা , শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেড়শ ছবির নায়ক শাহিন আলম এখন দোকানদার!

  • পোস্ট হয়েছে : ১১:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ জুলাই ২০২০
  • 182

বিনোদন ডেস্ক : পরীক্ষায় ফল খারাপ করায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করে কলেজ পড়ুয়া মেয়ে। একমাত্র মেয়ের মৃত্যুর পর ভেঙে পড়েন মানসিকভাবে, বদলে গেল চিত্রনায়ক শাহিন আলমের জীবন। ছেড়ে দিলেন চলচ্চিত্র। গার্মেন্টস ব্যবসাকেই জীবিকা হিসেবে নিলেন বেছে নিলেন।

সে সময় হাতে থাকা ছবিগুলোর কাজ নিয়ম মেনেই শেষ করেছিলেন তিনি। শাহিন আলম অভিনীত শেষ সিনেমা রকিবুল আলম পরিচালিত ‘দারোয়ানের ছেলে’। তবে চলচ্চিত্র ছড়ার পেছনে তৎকালীন সময়ে অশ্লীলতাকেও দায়ী করেন এক সময়ের এই অশ্লিল ছবির নায়ক। প্রায় দেড় শ ছবিতে অভিনয়ের পর শাহিন আলম ব্যবসায় মনোযোগ দেন।

শাহিন আলম জানান, ১৯৯১ সালে তাঁর অভিনীত ‘মায়ের কান্না’ ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর একসঙ্গে ৭টি ছবিতে সাইন করেন। তখন থেকে পেছনে না তাকিয়ে একটানা কাজ করে গেছেন। এই কাজ তাঁর ভিত গড়ে দিয়েছে।

ঢাকায় বেড়ে উঠা শাহিন আলম অভিনয় করতেন মঞ্চে। ১৯৮৬ সালে নতুন মুখের কার্যক্রমে অংশ নিয়ে প্রবেশ করেন সিনেমায়। তখনই নজরে পড়েন ‘বে-দ্বীন’–খ্যাত নির্মাতা এস এম শফির। তিনি তাঁর স্বপ্নের প্রকল্প ‘মাসুদ রানা’ ছবিতে মাসুদ রানা হিসেবে নির্বাচিত করেন শাহিন আলমকে।

সেই ছবির শুটিংয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানে যান। তাঁর সহশিল্পী ছিলেন গোলাম মুস্তাফা, অলিভিয়া, ওয়াসীম ও রোজিনা। কিন্তু ব্যয়বহুল ছবিটির ৩০ শতাংশ শুটিং হওয়ার পর কাজ আর এগোয়নি। একক নায়ক হিসেবে অভিনয় করেছেন নূর মোহাম্মদ মণি পরিচালিত ‘ঘাটের মাঝি’ ছবিতে।

তিনি জানালেন, ‘নয়া বাঈদানি’ ছবিটি তার ক্যারিয়ারের বড় টার্নিং পয়েন্ট। মার্শাল আর্টে ব্ল্যাকবেল্টের জন্যই নির্মাতাদের কাছে তাঁর চাহিদা বেশি ছিল বলে মনে করেন শাহিন আলম। তবে তাঁর ক্যারিয়ারের বেদনাদায়ক সমাপ্তি ঘটে বিতর্কিত নায়িকা ময়ূরীর নায়ক হিসেবে পরিচিতি নিয়ে।

‘মাসুদ রানা’র উচ্চাভিলাষ নিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করলেও তার শেষটা ভালো হয়নি। গত চার বছর ধরে গুরুতর অসুস্থ শাহিন আলম। জটিল কিডনি রোগে ভুগছেন। সাড়ে তিন বছর ধরে ডায়ালাইসিস চলছে। প্রতি সপ্তাহে তিন দিন সাভারের গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডায়ালাইসিসের জন্য যেতে হয় তাকে।

তিনি বলেন, সিনেমার লোকদের মধ্যে অমিত হাসান ও মিশা সওদাগর তাঁর খোঁজখবর নেন। কিছু দিন আগে শিল্পী সমিতির কয়েকজন তাঁকে দেখতে এসেছিলেন। গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় কেউ কেউ তাঁকে বলেছেন, চিকিৎসার সহযোগিতার জন্য শিল্পী সমিতি বা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। কিন্তু শাহিন আলম তা করেননি।

শাহিন আলম অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবি ‘ঘাটের মাঝি’, ‘এক পলকে’, ‘প্রেম দিওয়ানা’, ‘চাঁদাবাজ’, ‘প্রেম প্রতিশোধ’, ‘টাইগার’, ‘রাগ-অনুরাগ’, ‘দাগি সন্তান’, ‘বাঘা-বাঘিনী’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘আঞ্জুমান’, ‘অজানা শত্রু’, ‘গরিবের সংসার’, ‘দেশদ্রোহী’,’আমার মা’, ‘পাগলা বাবুল’, ‘তেজী’, ‘শক্তির লড়াই’, ‘দলপতি’, ‘পাপী সন্তান’, ‘ঢাকাইয়া মাস্তান’, ‘বিগবস’, ‘বাবা’, ‘বাঘের বাচ্চা’, ‘বিদ্রোহী সালাউদ্দিন’, ‘তেজী পুরুষ’ ইত্যাদি।

বিজনেস আওয়ার/০৪ জুলাই, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

দেড়শ ছবির নায়ক শাহিন আলম এখন দোকানদার!

পোস্ট হয়েছে : ১১:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ জুলাই ২০২০

বিনোদন ডেস্ক : পরীক্ষায় ফল খারাপ করায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করে কলেজ পড়ুয়া মেয়ে। একমাত্র মেয়ের মৃত্যুর পর ভেঙে পড়েন মানসিকভাবে, বদলে গেল চিত্রনায়ক শাহিন আলমের জীবন। ছেড়ে দিলেন চলচ্চিত্র। গার্মেন্টস ব্যবসাকেই জীবিকা হিসেবে নিলেন বেছে নিলেন।

সে সময় হাতে থাকা ছবিগুলোর কাজ নিয়ম মেনেই শেষ করেছিলেন তিনি। শাহিন আলম অভিনীত শেষ সিনেমা রকিবুল আলম পরিচালিত ‘দারোয়ানের ছেলে’। তবে চলচ্চিত্র ছড়ার পেছনে তৎকালীন সময়ে অশ্লীলতাকেও দায়ী করেন এক সময়ের এই অশ্লিল ছবির নায়ক। প্রায় দেড় শ ছবিতে অভিনয়ের পর শাহিন আলম ব্যবসায় মনোযোগ দেন।

শাহিন আলম জানান, ১৯৯১ সালে তাঁর অভিনীত ‘মায়ের কান্না’ ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর একসঙ্গে ৭টি ছবিতে সাইন করেন। তখন থেকে পেছনে না তাকিয়ে একটানা কাজ করে গেছেন। এই কাজ তাঁর ভিত গড়ে দিয়েছে।

ঢাকায় বেড়ে উঠা শাহিন আলম অভিনয় করতেন মঞ্চে। ১৯৮৬ সালে নতুন মুখের কার্যক্রমে অংশ নিয়ে প্রবেশ করেন সিনেমায়। তখনই নজরে পড়েন ‘বে-দ্বীন’–খ্যাত নির্মাতা এস এম শফির। তিনি তাঁর স্বপ্নের প্রকল্প ‘মাসুদ রানা’ ছবিতে মাসুদ রানা হিসেবে নির্বাচিত করেন শাহিন আলমকে।

সেই ছবির শুটিংয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানে যান। তাঁর সহশিল্পী ছিলেন গোলাম মুস্তাফা, অলিভিয়া, ওয়াসীম ও রোজিনা। কিন্তু ব্যয়বহুল ছবিটির ৩০ শতাংশ শুটিং হওয়ার পর কাজ আর এগোয়নি। একক নায়ক হিসেবে অভিনয় করেছেন নূর মোহাম্মদ মণি পরিচালিত ‘ঘাটের মাঝি’ ছবিতে।

তিনি জানালেন, ‘নয়া বাঈদানি’ ছবিটি তার ক্যারিয়ারের বড় টার্নিং পয়েন্ট। মার্শাল আর্টে ব্ল্যাকবেল্টের জন্যই নির্মাতাদের কাছে তাঁর চাহিদা বেশি ছিল বলে মনে করেন শাহিন আলম। তবে তাঁর ক্যারিয়ারের বেদনাদায়ক সমাপ্তি ঘটে বিতর্কিত নায়িকা ময়ূরীর নায়ক হিসেবে পরিচিতি নিয়ে।

‘মাসুদ রানা’র উচ্চাভিলাষ নিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করলেও তার শেষটা ভালো হয়নি। গত চার বছর ধরে গুরুতর অসুস্থ শাহিন আলম। জটিল কিডনি রোগে ভুগছেন। সাড়ে তিন বছর ধরে ডায়ালাইসিস চলছে। প্রতি সপ্তাহে তিন দিন সাভারের গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডায়ালাইসিসের জন্য যেতে হয় তাকে।

তিনি বলেন, সিনেমার লোকদের মধ্যে অমিত হাসান ও মিশা সওদাগর তাঁর খোঁজখবর নেন। কিছু দিন আগে শিল্পী সমিতির কয়েকজন তাঁকে দেখতে এসেছিলেন। গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় কেউ কেউ তাঁকে বলেছেন, চিকিৎসার সহযোগিতার জন্য শিল্পী সমিতি বা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। কিন্তু শাহিন আলম তা করেননি।

শাহিন আলম অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবি ‘ঘাটের মাঝি’, ‘এক পলকে’, ‘প্রেম দিওয়ানা’, ‘চাঁদাবাজ’, ‘প্রেম প্রতিশোধ’, ‘টাইগার’, ‘রাগ-অনুরাগ’, ‘দাগি সন্তান’, ‘বাঘা-বাঘিনী’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘আঞ্জুমান’, ‘অজানা শত্রু’, ‘গরিবের সংসার’, ‘দেশদ্রোহী’,’আমার মা’, ‘পাগলা বাবুল’, ‘তেজী’, ‘শক্তির লড়াই’, ‘দলপতি’, ‘পাপী সন্তান’, ‘ঢাকাইয়া মাস্তান’, ‘বিগবস’, ‘বাবা’, ‘বাঘের বাচ্চা’, ‘বিদ্রোহী সালাউদ্দিন’, ‘তেজী পুরুষ’ ইত্যাদি।

বিজনেস আওয়ার/০৪ জুলাই, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: