বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : দেশের দ্বিতীয় ও দূর্বল শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মামুন-উর-রশিদকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিচালনা পর্ষদ। যাকে নানা অভিযোগের ভিত্তিতে এরইমধ্যে বরখাস্তে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদনের আগ পর্যন্ত বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো নেওয়া হয়েছে। একই প্রতিষ্ঠানে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (সিআরও) মোহাম্মদ সামসুর রহমান নিজেই গত মাসে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
প্রতিষ্ঠার ২৬ বছরে এসেও বেহাল দশা দেশের দ্বিতীয় শেয়ারবাজার সিএসইর। এতো দীর্ঘসময়ে স্টক এক্সচেঞ্জটির পরিচালনা পর্ষদসহ ম্যানেজমেন্টে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু সিএসইর লেনদেনসহ কোথাও কোন উন্নতি হয়নি। এখনো ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) শীর্ষ এক ব্রোকারের থেকে সিএসইর মোট লেনদেন কম হয়।
১৯৯৫ সালে যাত্রা শুরু করা সিএসইর ব্রোকার সংখ্যা ১৪৮টি। যেগুলোর মোট লেনদেনের চেয়ে ডিএসইর শীর্ষ ব্রোকার হাউজের লেনদেনের পরিমাণ বেশি। এই অবস্থার কারনে অনেকেই সিএসই প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। তারা মনে করেন এটি ডিএসইর সঙ্গে একীভূতকরন করা উচিত। এতে ব্যয় কমে আসবে। আর সিএসইর শেয়ারহোল্ডাররা লাভবান হবেন।
জানা গেছে, গত ১৬ সেপ্টেম্বর সিএসইস পর্ষদ সভায় মামুন-উর-রশিদকে ১ মাসের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ সেপ্টেম্বর থেকেই তাকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে তাকে এক্সচেঞ্জটির এমডি পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য অনুমোদন নিতে বিএসইসির কাছে চিঠি পাঠিয়েছে সিএসইর পর্ষদ।
এমডি হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার, সিআইবি ক্লিয়ারেন্স নিয়ে সমস্যা এবং সর্বশেষ এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় তার আসামি হওয়ার মতো বিষয়গুলোর পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এমডি পদের প্রভাব খাটিয়ে মামুন-উর-রশিদ এক্সচেঞ্জের তিনটি গাড়ি ব্যবহার করতেন। এর মধ্যে তার ছেলে এক্সচেঞ্জের গাড়ি ব্যবহার করতে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটিয়েছেন।
এদিকে প্রতিষ্ঠানটি থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সিআরও মোহাম্মদ সামসুর রহমান। তিনি গত মাসে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ি তিনি আগামি মাস পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। এরইমধ্যে তার পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে সিএসই।
জানা গেছে, কাজের পরিবেশ, কাজের চাপেঁর তুলনায় জনবল সংকট, ক্যারিয়ার হূমকির মূখে পড়াসহ নানা কারনে তিনি পদত্যাগ করেছেন।
এর আগে গত বছরের একইদিনে (২২ জানুয়ারি) ডিএসইতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে কাজী ছানাউল হক ও সিএসইতে এমডি পদে মামুন-উর-রশিদের নিয়োগ প্রস্তাব অনুমোদন করে বিএসইসি।
এরপরে মাত্র ৮ মাসের মাথায় ব্যর্থতার দায়ে পদত্যাগ করেন কাজী সানাউল হক। যিনি ডিএসই থেকে গত ৭ জানুয়ারি বিদায় নিয়েছেন।
তবে একইসময়ে নিয়োগ পাওয়া সিএসইর এমডি মামুন-উর-রশীদ তার চেয়ে অনেকটা বেশি সময় দায়িত্ব পালন করলে। যা হয়তো সম্ভব হয়েছে ডিএসইর তুলনায় সিএসই অনেক পিছিয়ে থাকায়। এছাড়া সিএসই শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের মধ্যে কম গুরুত্ববহন করাও একটি কারন।
বিজনেস আওয়ার/২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১/আরএ