ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জালিয়াতির অর্থ সরাসরি খেলাপি করতে হবে

  • পোস্ট হয়েছে : ০৩:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ অক্টোবর ২০২১
  • 55

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক- সাম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সার্কুলার জারি করে জানানো হয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে সংঘটিত জাল জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে অর্থের পরিমাণ নিরূপণ করে সেগুলোকে সরাসরি খেলাপি ঋণ হিসাবে চিহ্নিত করতে হবে।

একইসঙ্গে এর বিপরীতে প্রয়োজনীয় প্রভিশন রাখতে হবে। জাল জালিয়াতি ছাড়াও ডাকাতি, অর্থ আত্মসাৎ বা তহবিল তছরুপের অর্থের বিপরীতে এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।

এ বিষয়ে রোববার আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে বাংলাদেশ ব্যাংক এমন সার্কুলার পাঠান। এ নির্দেশনা সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিক থেকেই কার্যকর করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আগে জাল জালিয়াতি বা তহবিল তছরুপ হলে ওই অর্থ সরাসরি খেলাপি করা হতো না। ঋণ বা লিজের মেয়াদ শেষে গ্রাহক তা পরিশোধ না করলে চলতি ঋণের ক্ষেত্রে ৩ বা ৬ মাস পর এবং মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে ৬ বা ৯ মাস পর খেলাপি করা হতো। প্রথমে নিুমান হিসাবে খেলাপি করা হতো। এর বিপরীতে মাত্র ২০ শতাংশ প্রভিশন রাখা হতো। অনেক ক্ষেত্রে জালিয়াতির ঋণের মেয়াদ বাড়িয়ে বা নবায়ন করে নিয়মিত দেখানো হতো। এতে করে জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ বেরিয়ে গেলেও প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ব্যবস্থায় তাৎক্ষণিকভাবে এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়ত না। জালিয়াতির অর্থ খেলাপি করা হলে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ভিত্তিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

নতুন নির্দেশনা কার্যকর হলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাবে। একইসঙ্গে বাড়বে প্রভিশন সংরক্ষণের পরিমাণও। এতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মোটা অংকের অর্থ আটকে যাবে। ফলে প্রভিশন ও মূলধন ঘাটতি আরও বাড়ার আশংকা করা হচ্ছে। তবে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক ভিত্তির সক্ষমতা বাড়বে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, জাল জালিয়াতি, ডাকাতি, অর্থ আত্মসাৎ বা তহবিল তছরুপের অর্থের পরিমাণ তৎাক্ষণিকভাবে নিরূপণ করতে হবে। এসব অর্থ একটি প্রোটেস্টেড বিল বা বিতর্কিত বিল সৃষ্টি করে তার বিপরীতে জমা রাখতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে এগুলোকে খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত করতে হবে। বিচার-বিশ্লেষণ করে যদি দেখা যায় ওই অর্থ আদায়ের কোনো সম্ভাবনা আছে তবে সেগুলোকে সন্দেহজনক হিসাবে শ্রেণিকরণ বা খেলাপি করতে হবে। এর বিপরীতে ৫০ শতাংশ প্রভিশন রাখতে হবে। যদি ওইসব অর্থ আদায়ের কোনো সম্ভাবনা না থাকে তবে ওইসব অর্থ আদায় অযোগ্য মন্দ বা ক্ষতি মানে শ্রেণিকরণ করতে হবে। এর বিপরীতে প্রভিশন রাখতে হবে শতভাগ।

বিজনেস আওয়ার/০৪ অক্টোবর, ২০২১/এএইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জালিয়াতির অর্থ সরাসরি খেলাপি করতে হবে

পোস্ট হয়েছে : ০৩:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ অক্টোবর ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক- সাম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সার্কুলার জারি করে জানানো হয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে সংঘটিত জাল জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে অর্থের পরিমাণ নিরূপণ করে সেগুলোকে সরাসরি খেলাপি ঋণ হিসাবে চিহ্নিত করতে হবে।

একইসঙ্গে এর বিপরীতে প্রয়োজনীয় প্রভিশন রাখতে হবে। জাল জালিয়াতি ছাড়াও ডাকাতি, অর্থ আত্মসাৎ বা তহবিল তছরুপের অর্থের বিপরীতে এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।

এ বিষয়ে রোববার আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে বাংলাদেশ ব্যাংক এমন সার্কুলার পাঠান। এ নির্দেশনা সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিক থেকেই কার্যকর করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আগে জাল জালিয়াতি বা তহবিল তছরুপ হলে ওই অর্থ সরাসরি খেলাপি করা হতো না। ঋণ বা লিজের মেয়াদ শেষে গ্রাহক তা পরিশোধ না করলে চলতি ঋণের ক্ষেত্রে ৩ বা ৬ মাস পর এবং মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে ৬ বা ৯ মাস পর খেলাপি করা হতো। প্রথমে নিুমান হিসাবে খেলাপি করা হতো। এর বিপরীতে মাত্র ২০ শতাংশ প্রভিশন রাখা হতো। অনেক ক্ষেত্রে জালিয়াতির ঋণের মেয়াদ বাড়িয়ে বা নবায়ন করে নিয়মিত দেখানো হতো। এতে করে জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ বেরিয়ে গেলেও প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ব্যবস্থায় তাৎক্ষণিকভাবে এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়ত না। জালিয়াতির অর্থ খেলাপি করা হলে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ভিত্তিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

নতুন নির্দেশনা কার্যকর হলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাবে। একইসঙ্গে বাড়বে প্রভিশন সংরক্ষণের পরিমাণও। এতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মোটা অংকের অর্থ আটকে যাবে। ফলে প্রভিশন ও মূলধন ঘাটতি আরও বাড়ার আশংকা করা হচ্ছে। তবে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক ভিত্তির সক্ষমতা বাড়বে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, জাল জালিয়াতি, ডাকাতি, অর্থ আত্মসাৎ বা তহবিল তছরুপের অর্থের পরিমাণ তৎাক্ষণিকভাবে নিরূপণ করতে হবে। এসব অর্থ একটি প্রোটেস্টেড বিল বা বিতর্কিত বিল সৃষ্টি করে তার বিপরীতে জমা রাখতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে এগুলোকে খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত করতে হবে। বিচার-বিশ্লেষণ করে যদি দেখা যায় ওই অর্থ আদায়ের কোনো সম্ভাবনা আছে তবে সেগুলোকে সন্দেহজনক হিসাবে শ্রেণিকরণ বা খেলাপি করতে হবে। এর বিপরীতে ৫০ শতাংশ প্রভিশন রাখতে হবে। যদি ওইসব অর্থ আদায়ের কোনো সম্ভাবনা না থাকে তবে ওইসব অর্থ আদায় অযোগ্য মন্দ বা ক্ষতি মানে শ্রেণিকরণ করতে হবে। এর বিপরীতে প্রভিশন রাখতে হবে শতভাগ।

বিজনেস আওয়ার/০৪ অক্টোবর, ২০২১/এএইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: