ঢাকা , শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশ এখনও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়: কৃষিমন্ত্রী

  • পোস্ট হয়েছে : ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২১
  • 42

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: এতদিন দেশের খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার গল্প শোনালেও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক স্বীকার করলেন, প্রকৃতপক্ষে এখনো চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা আসেনি বাংলাদেশের। দেশের রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদনের গল্প করেও, একটু মজার ছলে পেটুক বাঙালির বেশি পরিমাণে ভাত খাওয়াকেও দূষলেন। জানালেন, ‘ভাত খাওয়া কমাতে পারলে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে খুব বেশি সময় লাগবে না।’

আজ শুক্রবার বিশ্ব খাদ্য দিবস- ২০২১ উপলক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থা (ইউএন-ফাও) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

আগামীকাল শনিবার (১৬ অক্টোবর) বিশ্বব্যাপী খাদ্য দিবস পালিত হবে। এবছর ‘আমাদের কর্মই আমাদের ভবিষ্যৎ- ভালো উৎপাদনে ভালো পুষ্টি, আর ভালো পরিবেশেই উন্নত জীবন’ প্রতিপাদ্যে সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশও দিবসটি পালন করেছে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘জাপানে একজন মানুষ প্রতিদিন গড়ে ১০০ গ্রাম চাল খায়। সেখানে বাংলাদেশের একজন মানুষ প্রতিদিন ৩৮০ গ্রামেরও বেশি চাল খায়। এই ভাত খাওয়া কমাতে পারলে, স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে খুব বেশি সময় লাগবে না।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মন্ত্রী জানান, ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে চালের মোট উৎপাদন হয়েছে ৩ কোটি ৮৬ লাখ টন, যা রেকর্ড পরিমাণ। এক বছরে ৭ লাখ টন বেশি উৎপাদনের মাধ্যমে, মোট ৩৩ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন করে বিশ্বে এখন তৃতীয় পেঁয়াজ উৎপাদনকারী দেশ বাংলাদেশ।

অথচ খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, সরকার চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে ৪১৫ ব্যবসায়ীকে ১৭ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২৫ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে ৩৩ লাখ টন উৎপাদন ও ১০ লাখ টন আমদানি দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

এই পরিস্থিতি স্বীকার করে নিয়েই কৃষিমন্ত্রী বললেন, ‘ডিমান্ড বেশি হলে, সাপ্লাই কম থাকলে দাম বাড়বেই। শুধু দেশে নয়, সারা বিশ্বেই ব্যবসায়ীরা বাড়তি মুনাফার চেষ্টা করে।’ তবে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে চালের দাম বেশি হলেও তেমন একটা অস্বস্তি নেই বলে জানান তিনি।

দুধ, ডিম, মাংসের উৎপাদনেও এখনো দেশের স্বয়সম্পূর্ণতা আসেনি বলেও মন্ত্রব্য করেন কৃষিমন্ত্রী। উৎপাদন কম থাকার কারণে চড়া দামে ব্রয়লার মুরগি খেতে হচ্ছে বলে জানান তিনি। তবে মাস-দুয়েকের মধ্যেই আবার উৎপাদন বাড়লে দামও কমে যাবে বলে জানান তিনি।

মাংসের দাম কমিয়ে আনতে হলে সরকারকে প্রাণিখাদ্যে ভর্তুকি দিতে হবে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী। এই ভর্তুকির বিষয়ে আলোচনা করা হবে বলেও জানান তিনি।

বিজনেস আওয়ার/১৬ অক্টোবর, ২০২১/এএইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

দেশ এখনও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়: কৃষিমন্ত্রী

পোস্ট হয়েছে : ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: এতদিন দেশের খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার গল্প শোনালেও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক স্বীকার করলেন, প্রকৃতপক্ষে এখনো চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা আসেনি বাংলাদেশের। দেশের রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদনের গল্প করেও, একটু মজার ছলে পেটুক বাঙালির বেশি পরিমাণে ভাত খাওয়াকেও দূষলেন। জানালেন, ‘ভাত খাওয়া কমাতে পারলে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে খুব বেশি সময় লাগবে না।’

আজ শুক্রবার বিশ্ব খাদ্য দিবস- ২০২১ উপলক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থা (ইউএন-ফাও) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

আগামীকাল শনিবার (১৬ অক্টোবর) বিশ্বব্যাপী খাদ্য দিবস পালিত হবে। এবছর ‘আমাদের কর্মই আমাদের ভবিষ্যৎ- ভালো উৎপাদনে ভালো পুষ্টি, আর ভালো পরিবেশেই উন্নত জীবন’ প্রতিপাদ্যে সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশও দিবসটি পালন করেছে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘জাপানে একজন মানুষ প্রতিদিন গড়ে ১০০ গ্রাম চাল খায়। সেখানে বাংলাদেশের একজন মানুষ প্রতিদিন ৩৮০ গ্রামেরও বেশি চাল খায়। এই ভাত খাওয়া কমাতে পারলে, স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে খুব বেশি সময় লাগবে না।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মন্ত্রী জানান, ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে চালের মোট উৎপাদন হয়েছে ৩ কোটি ৮৬ লাখ টন, যা রেকর্ড পরিমাণ। এক বছরে ৭ লাখ টন বেশি উৎপাদনের মাধ্যমে, মোট ৩৩ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন করে বিশ্বে এখন তৃতীয় পেঁয়াজ উৎপাদনকারী দেশ বাংলাদেশ।

অথচ খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, সরকার চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে ৪১৫ ব্যবসায়ীকে ১৭ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২৫ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে ৩৩ লাখ টন উৎপাদন ও ১০ লাখ টন আমদানি দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

এই পরিস্থিতি স্বীকার করে নিয়েই কৃষিমন্ত্রী বললেন, ‘ডিমান্ড বেশি হলে, সাপ্লাই কম থাকলে দাম বাড়বেই। শুধু দেশে নয়, সারা বিশ্বেই ব্যবসায়ীরা বাড়তি মুনাফার চেষ্টা করে।’ তবে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে চালের দাম বেশি হলেও তেমন একটা অস্বস্তি নেই বলে জানান তিনি।

দুধ, ডিম, মাংসের উৎপাদনেও এখনো দেশের স্বয়সম্পূর্ণতা আসেনি বলেও মন্ত্রব্য করেন কৃষিমন্ত্রী। উৎপাদন কম থাকার কারণে চড়া দামে ব্রয়লার মুরগি খেতে হচ্ছে বলে জানান তিনি। তবে মাস-দুয়েকের মধ্যেই আবার উৎপাদন বাড়লে দামও কমে যাবে বলে জানান তিনি।

মাংসের দাম কমিয়ে আনতে হলে সরকারকে প্রাণিখাদ্যে ভর্তুকি দিতে হবে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী। এই ভর্তুকির বিষয়ে আলোচনা করা হবে বলেও জানান তিনি।

বিজনেস আওয়ার/১৬ অক্টোবর, ২০২১/এএইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: