1. [email protected] : anjuman : anjuman
  2. [email protected] : user : user
  3. [email protected] : Admin : Admin
  4. [email protected] : Nayan Babu : Nayan Babu
নিজেদের ব্যবসা নিম্নমুখী হলেও সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের দায়িত্ব নিতে চায় আলিফ গ্রুপ
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৪৯ অপরাহ্ন

নিজেদের ব্যবসা নিম্নমুখী হলেও সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের দায়িত্ব নিতে চায় আলিফ গ্রুপ

ইব্রাহিম হোসাইন (রেজোয়ান)
  • পোস্ট হয়েছে : সোমবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২১
print sharing button

শেয়ারবাজারে আলিফ গ্রুপের তালিকাভুক্ত দুটি কোম্পানিরই ব্যবসা কয়েক বছর ধরে নিম্নমুখী। যার উন্নয়নে কার্যকরি ভূমিকা রাখতে পারছে না ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু এরমধ্যেই শেয়ারবাজারের দূর্বল ও বন্ধ কিছু কোম্পানিতে একের পর এক বিনিয়োগের ঘোষণা দিচ্ছে গ্রুপটি। যদিও এরইমধ্যে দু-তিনটি কোম্পানিতে বিনিয়োগের কথা বলেও করেনি। তবে এই কেনার ঘোষণা দিয়েও পরে সরে আসার মধ্য দিয়ে একটি পক্ষ লাভবান হলেও সাধারন বিনিয়োগকারীদেরকে হতে হয়েছে প্রতারিত। যা করার উদ্দেশ্যেই আলিফ গ্রুপ বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছিল বলে বিনিয়োগকারীদের মনে সন্দেহ রয়েছে। এবার সেই গ্রুপই দায়িত্ব নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদন বন্ধ থাকা সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের।

এই গ্রুপটির উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ শেয়ারবাজারে কারসাজিতে জড়িত থাকার দায়ে অভিযুক্ত। যাদেরকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে জরিমানাও করা হয়েছে। এছাড়া দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে পদক্ষেপ নিতেও দেখা গেছে। সেই ম্যানেজমেন্টের উপরেই আস্থা রাখতে রেখে গত ৭ অক্টোবর বিএসইসির বর্তমান কমিশন সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল অধিগ্রহনের অনুমোদন দিয়েছে।

অথচ অনেক আগেই আলিফ গ্রুপ সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলে বিনিয়োগ করছে বলে খবর বাজারে ছড়ানো হয়েছে। যাতে করে ২ টাকার শেয়ারটি ৭ টাকার উপরে উঠে যায়। এক্ষেত্রে একটি গ্রুপ ফায়ঁদা হাসিল করে নিয়েছে।

এ বিষয়ে আলিফ গ্রুপের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) মোহাম্মদ হানিফ বিজনেস আওয়ারকে বলেন, বিএসইসি যেহেতু সম্মতি দিয়েছি, সেহেতু বিনিয়োগ করবই। তবে এক প্রশ্নের জবাবে জানান, বিনিয়োগ না করার সুযোগ নেই, তা না। তবে বিনিয়োগ করার ইচ্ছা আছে।

আলিফ গ্রুপের আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং ও আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রয়েছে। এ কোম্পানি দুটি কয়েক বছর ধরে ব্যবসায় নিম্নমূখী রয়েছে। যে কোম্পানি দুটি থেকে দেওয়া হয় নগদের থেকে বেশি বোনাস লভ্যাংশ।

তারপরেও এই গ্রুপটি থেকে শেয়ারবাজারের সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস ও বিডি ওয়েল্ডিং ইলেকট্রোডসে বিনিয়োগের উদ্যোগ নেয়। যাতে করে কোম্পানি দুটির শেয়ার দর বাড়ে। কিন্তু পরবর্তীতে বিনিয়োগ করেনি আলিফ গ্রুপ। যাতে শেয়ার দুটি আবারও পতন হয়। এতে একটি পক্ষ লাভবান হলেও আরেকটি পক্ষ প্রতারিত হয়। যেখানে আলিফ গ্রুপের সক্রিয় ভূমিকা ছিল এবং অসৎ উদ্দেশ্যে ফায়ঁদা হাসিলের জন্য এমনটি করা হয় বলে বিনিয়োগকারীরা সন্দেহ করে।

এই সন্দেহের পেছনে একটি বড় কারন হিসেবে রয়েছে আলিফ গ্রুপের সক্রিয় শেয়ার ব্যবসা। এরইমধ্যে কোম্পানির উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে শেয়ার কারসাজির দায়ে জরিমানার কবলে পড়তে হয়েছে। বিডি অটোকারস ও লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের শেয়ারের অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির পেছনে আলিফ গ্রুপের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ হওয়ায় ২০১৯ সালের ২২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বিএসইসির কমিশন সভায় আলিফ গ্রুপের চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম, তার ছেলে গ্রুপটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিমুল ইসলাম, চেয়ারম্যানের স্ত্রী লুৎফন নেছা ইসলাম, আজিমুল ইসলামের স্ত্রী নাবিলা ইসলামসহ তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট আলিফ টেক্সটাইল মিলস ও বায়তুল খামুরকে ২ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।

এছাড়া গত ৬ ডিসেম্বর আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান আজিমুল ইসলামসহ ৩ কোম্পানির ৬ পরিচালকের বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অতিরিক্ত মহাপরিদর্শককে (এআইজি) চিঠি দেয় কমিশন। তাদের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজার থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও), রিপিট পাবলিক অফার (আরপিও) এবং রাইট শেয়ার অফারের মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন করে এবং সেকেন্ডারি মার্কেটে তাদের ধারণকৃত বিপুল পরিমাণ শেয়ার বিক্রি অভিযোগ রয়েছে। এতে কমিশনের বিভিন্ন আইন লঙ্ঘনের বিষয়টি পরিলক্ষিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন কর্তৃক তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

২০১৭ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি সেন্ট্রাল ফার্মা জানায়, কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ আলিফ গ্রুপের সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওই চুক্তির আওতায় সেন্ট্রাল ফার্মার ৫ পরিচালকের সবার আলাদা আলাদাভাবে হাতে থাকা শেয়ার ধীরে ধীরে ব্লক মার্কেটের মাধ্যমে আলিফ গ্রুপের পরিচালক ও অংশীজনদের কাছে বিক্রি করবে। শেয়ারের এই বিক্রি প্রক্রিয়া শেষে আলিফ গ্রুপ নতুনভাবে সেন্ট্রাল ফার্মার পরিচালনা পর্ষদ গঠন করবে। পাশাপাশি নতুন চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ করবে।

এই খবর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশের আগেই শেয়ারবাজারে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। যার উপর ভিত্তি করে ২০১৬ সালের ২৩ নভেম্বরের ১৪.২০ টাকার সেন্ট্রাল ফার্মার প্রতিটি শেয়ার ২০১৭ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ৩৩ টাকায় উঠে যায়। কিন্তু সবশেষে বিনিয়োগ করা থেকে সড়ে আসে আলিফ গ্রুপ। যাতে শেয়ারটির দর আবারও কমে জায়গায় চলে আসে। এতে একটি পক্ষ লাভবান হয় এবং আলিফ গ্রুপের কর্মকান্ডে প্রতারিত হয় সাধারন বিনিয়োগকারীরা।

অথচ বিভিন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে দায়িত্ব নিতে চাওয়া এই গ্রুপটির ম্যানেজমেন্ট নিজেদের কোম্পানিরই উন্নতি করতে পারছে না। সর্বশেস প্রকাশিত আর্থিক হিসাব অনুযায়ি, গত অর্থবছরের ৯ মাসে (জুলাই ১৯-মার্চ ২০) আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) কমেছে ৩৮ শতাংশ। আর আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের কমেছে ৩৬ শতাংশ। এরমধ্যে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ৯ মাসে ইপিএস হয়েছে ১.৩৮ টাকা এবং আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের ০.৩৯ টাকা।

এদিকে আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং ও আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ২০১৬-১৭ অর্থবছরের পর থেকে ইপিএস নিয়মিত কমছে। এই পতনের মাধ্যমে আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ১.৯২ টাকার ইপিএস ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ০.৭৪ টাকা হয়েছে। আর আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ৪.৩৭ টাকার ইপিএস নেমে এসেছে ২.৭৪ টাকায়।

যে কোম্পানি দুটির বার্ষিক সাধারন সভা (এজিএম) অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। কোম্পানি দুটির ২০১৯-২০ অর্থবছরের এজিএম এখনো অনুষ্ঠিত হওয়ার কোন তথ্য ডিএসইতে নেই।

এ বিষয়ে সিএফও মোহাম্মদ হানিফ বলেন, আদালতের কারনে এজিএম ঝুঁলে রয়েছে। তবে আমরা করে ফেলব। আর শুরুতে ব্যবসা কমেছে স্বীকার করতে না চাইলেও পরবর্তীতে ২০১৮-১৯ এ করোনার কারনে কমেছে বলে জানান। কিন্তু ওইসময়তো করোনা ছিল না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, হ্যা ব্যবসা একটু কমেছিল।

বিজনেস আওয়ার/১৮ অক্টোবর, ২০২১/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের আরো সংবাদ