ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খায়রুল কমিশনের গড় ২২ টাকা ইস্যু মূল্যের শেয়ারের বাজার দর ৩৪ টাকা

  • পোস্ট হয়েছে : ০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • 57

রেজোয়ান আহমেদ : বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) ২০১১ সালে চেয়ারম্যান হিসাবে ড. এম খায়রুল হোসেনের দায়িত্ব নেওয়ার পরে ৯০টি কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ওইসব কোম্পানিগুলো গড়ে ২২ টাকা ইস্যু মূল্যে শেয়ার ইস্যু করেছে। যেসব কোম্পানির গড় শেয়ার দর বাজারের চলমান মন্দাবস্থায় রয়েছে ৩৪ টাকায়। যা চলতি বছরের শুরুতে ছিল ৪০ টাকা।

খায়রুল হোসেনের নেত্বতাধীন কমিশনের বিগত ৮ বছরে আইপিও অনুমোদন দেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে সামিট পূর্বাঞ্চল পাওয়ার একই গ্রুপের সামিট পাওয়ারের সঙ্গে একীভূতকরন হয়েছে। যাতে এখন আর সামিট পূর্বাঞ্চলের অস্তিত্ব নেই। বাকি ৮৯টি কোম্পানির মধ্যে ৬০টি বা ৬৭.৪২ শতাংশ ইস্যু মূল্যের উপরে রয়েছে। বাকি ২৯টি বা ৩২.৫৮ শতাংশ কোম্পানি ইস্যু মূল্যের নিচে অবস্থান করছে। তবে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে এই অবস্থা শোচণীয়। ওইসব দেশে ইস্যু মূল্যের নিচে নেমে আসা কোম্পানির হার বেশি।

দেখা গেছে, ভারতে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত ৫০টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে। এরমধ্যে ২৪টি বা ৪৮ শতাংশ ইস্যু মূল্যের নিচে নেমে এসেছে। এছাড়া মালয়েশিয়ায় ২০১৮ সালের মার্চ থেকে ২০১৯ সালের মে পর্যন্ত সময়ে তালিকাভুক্ত হওয়া ২০টি কোম্পানির মধ্যে ৪টি বা ২০ শতাংশ, পাকিস্তানে ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত তালিকাভুক্ত হওয়া ৩টি কোম্পানির মধ্যে ২টি বা ৬৬.৬৭ শতাংশ এবং হংকংয়ে ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের মে পর্যন্ত সময়ে তালিকাভুক্ত হওয়া ১৬০টি কোম্পানির মধ্যে ৮০টি বা ৫০ শতাংশ ইস্যু মূল্যের নিচে লেনদেন হচ্ছে।

এদিকে ২০১৭ সালে মুম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হওয়া ৮৯টি (এসএমইসহ) কোম্পানির মধ্যে ২০টির বা ২২ শতাংশের দর ইস্যু মূল্যের নিচে নেমে এসেছে। আর লেনদেনের প্রথমদিনেই ২১টি বা ২৪ শতাংশ ইস্যু মূল্যের নিচে নেমে যায়। এছাড়া ২০১৭ সালে ভারতের ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান বোর্ডে তালিকাভুক্ত হওয়া ৩৬টি কোম্পানির মধ্যে ২২টি বা ৬১ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর গত ২৫ এপ্রিল ইস্যু মূল্যের নিচে নেমে এসেছে।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক সভাপতি ছায়েদুর রহমান বিজনেস আওয়ারকে বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের আইপিও’র দর ভালো অবস্থানে আছে। অন্যান্য দেশে প্রথমদিনেই ইস্যু মূল্যের নিচে লেনদেন হওয়ার মতো ঘটনা ঘটে। যা বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে হয় না। তবে লেনদেনের শুরুতে লক-ইনের কারনে অনেক সময় কৃত্রিম সংকটের মাধ্যমে শেয়ারের অস্বাভাবিক উত্থান ঘটে। এরপরে লক-ইন পিরিয়ড শেষে শেয়ারের সরবরাহ বেড়ে ওই কৃত্রিম দরে পতন হয়। যাতে লোকসানে পড়ে সাধারন বিনিয়োগকারীরা। 

দেশের শেয়ারবাজারের মন্দাবস্থায় ও কিছু কোম্পানির ব্যবসায় অবনতির কারনে ২৯টি বা ৩২.৫৮ শতাংশ শেয়ার ইস্যু মূল্যের নিচে নেমে এসেছে। তবে চলতি বছরের শুরুতে এ সংখ্যা ছিল ২০টি বা ২২.৪৭ শতাংশ। তবে বর্তমান কমিশন যতগুলো কোম্পানির আইপিও অনুমোদন দিয়েছে, লেনদেনের প্রথম দিন তার একটিও ইস্যু মূল্যের নিচে নামেনি। এছাড়া প্রত্যেকটি আইপিওতে কয়েকগুণ আবেদন জমা পড়ে। তবে শেয়ারবাজারের চলমান অবস্থায় নিরীক্ষা মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

সম্প্রতি একটি কোম্পানির তালিকাভুক্তির আগে ব্যাপক আলোচনায় উঠে আসে নিরীক্ষকদের নিরীক্ষা মান। যা ওই কোম্পানির আর্থিক হিসাব নিয়ে প্রশ্ন উঠার পরে ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) নির্দেশে তদন্তে নামে দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)। তবে সেই তদন্তে সহযোগিতা না করায় নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান আহমেদ অ্যান্ড আক্তারের প্রাকটিসিং লাইসেন্স নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নেয় আইসিএবি। এর মাধ্যমে প্রশ্নবিদ্ধ রয়েছে কোম্পানিটির নিরীক্ষা। তাই ভবিষ্যতে নিরীক্ষা মান উন্নয়নে নিয়ন্ত্রক সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা দরকার বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তাহলে ভবিষ্যতে ইস্যু মূল্যের নিচে নেমে আসা কোম্পানির হার কমবে বলে তাদের বিশ্বাস।

ইস্যু মূল্যের নিচে নেমে আসা ২৯টি কোম্পানির মধ্যে বুক বিল্ডিংয়ে প্রাতিষ্ঠানিক বা যোগ্য বিনিয়োগকারীদের নির্ধারিত ইস্যু মূল্যের ৩টি কোম্পানিও রয়েছে।

২০১৫ সালের সংশোধিত পাবলিক ইস্যু রুলস অনুযায়ি, বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ইস্যু মূল্য নির্ধারন এককভাবে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের হাতে। এক্ষেত্রে স্টক এক্সচেঞ্জ ও বিএসইসির কোন ভূমিকা থাকে না। কিন্তু সেই যোগ্য বিনিয়োগকারীদের মূল্যায়িত ৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩টি বা ৬০ শতাংশ কোম্পানি ইস্যু মূল্যের নিচে অবস্থান করছে।

বুক বিল্ডিংয়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা আমরা নেটওয়ার্ক, এসকোয়্যার নিট কম্পোজিট, বসুন্ধরা পেপারস মিল, আমান কটন ফাইব্রাস ও রানার অটোমোবাইলসের ইস্যু দর নির্ধারন করে। তাদের এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে এসকোয়্যার নিট কম্পোজিট, বসুন্ধরা পেপারস মিল ও আমান কটন ফাইবার্সের শেয়ার দর এখন ইস্যু মূল্যের নিচে।

ইস্যু মূল্য নির্ধারন প্রক্রিয়া নিয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন বিজনেস আওয়ারকে বলেন, কোন কোম্পানির আইপিও দর কমিশন নির্ধারন করে না। ফিক্সড প্রাইস মেথডের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি, ইস্যু ম্যানেজার ও নিরীক্ষকের ডিউ ডিলিজেন্স সনদ দেওয়ার পরে কমিশন ডিসক্লোজারস ভিত্তিতে আইপিও অনুমোদন দেয়। আর প্রিমিয়ামের ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক বা যোগ্য বিনিয়োগকারীরা দর নির্ধারন করে। এক্ষেত্রে কমিশন থেকে শুরু করে কোন স্টক এক্সচেঞ্জের ভূমিকা থাকে না।

নিম্নে বর্তমান কমিশনের অনুমোদন দেওয়া আইপিওর ইস্যু মূল্য ও বাজার দর তুলে ধরা হল-

কোম্পানির নামইস্যু মূল্য (টাকা)৮ সেপ্টেম্বরের দর (টাকা)১ জানুয়ারির দর (টাকা)
নাহি অ্যালুমিনিয়াম১০৪৮.৯০৬১.১০
ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড১০২৭.৩০৩৮.৪০
আমরা নেটওয়ার্ক৩৯৪৮.৯০৬০.৪০
বিবিএস কেবলস১০৯০.২০১০৩.৮০
নূরানি ডাইং অ্যান্ড সোয়েটার১০১৩.৭০১৬.৭০
শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ১০৩৫.২০৪৪.৮০
প্যাসিফিক ডেনিমস১০১৩.৭০১৬.৭০
কাট্টালি টেক্সটাইল১০১৯.৫০২৭.২০
এনভয় টেক্সটাইল৩০৩১.৬০৩৬.৬০
আমরা টেকনোলিজিস২৪২৪.৭০২৯.১০
সায়হাম কটন মিলস২০২৪২৬.৭০
বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল৩৫১১৯.২০৯৬.৭০
জিপিএইচ ইস্পাত৩০৩৩.৭০৩৫.৯০
পদ্মা ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স১০১৫.৮০২৬
প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল২৮৫৬.১০৬৮.৯০
বাংলাদেশ বিল্ডিং সিষ্টেমস১০২৪.৬০২৯.৩০
সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস১০১০.৫০১৪.৩০
গ্লোবাল হেভী কেমিক্যালস২০৩৮৩৯.৩০
গোল্ডেন হার্ভেষ্ট অ্যাগ্রো২৫২৮.৮০৩০.২০
প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলস২২৬৩.২০৭২.২০
সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স১০১৫.৬০২৭.৬০
খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ১০১১.৮০১২
সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ১০২৫.৮০২৯.১০
খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং১০১২.৪০২০.৬০
শাহজিবাজার পাওয়ার২৫৭৭.৩০৯৭.৫০
ফার কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ১০১০.৯০১৫.৬০
হা ওয়েল টেক্সটাইলস১০৩৬.৯০৩৭.৬০
এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ১০১৩.৫০১৬.৬০
এএফসি অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ১০২৭.৩০৩১.৯০
মোজাফ্ফর হোসাইন স্পিনিং১০১০.৩০১৩.১০
আইটি কনসালটেন্টস১০৪৫.৬০৪৭.৩০
ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন৭২৩৮৮.৭০৩০৪.৩০
শাশাঁ ডেনিমস  ৩৫৩৯.৬০৬১.৮০
বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলস৩৫৬৭৮০.৮০
সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ২০২০.২০৩৩.১০
কেডিএস এক্সেসরিজ২০৫৩.১০৫৪.১০
আমান ফিড৩৬৩৯.৯০৪৮.৫০
ইয়াকিন পলিমার ১০১০.৯০১৩.৪০
ইভিন্স টেক্সটাইল১০১১.৯০১২.৯০
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স১০২০.৮০১৬.৬০
ডরিন পাওয়ার জেনারেশন২৯৭৯.৯০৮৪.৮০
ড্রাগণ সোয়েটার অ্যান্ড স্পিনিং১০১৭.৪০২১.২০
ইফাদ অটোস৩০৬৭.৩০১০৯
ন্যাশনাল ফিড মিল১০১০.২০১১.৪০
ফরচুন সুজ১০৩৯.২০৩১.৮০
ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস১০২৩.১০৩৩.৯০
সিলভা ফার্মাসিউটিক্যালস১০২০.২০৩২.৫০
এম.এল ডাইং১০২৬.৬০৩২.৬০
ভিএফএস থ্রেড ডাইং১০২৭.৮০৫৯.৯০
এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ১০৪৫.৬০৪৮.৫০
ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং১০১৯.৮০২৭.৮০
অ্যাডভেন্ট ফার্মা১০৩১.৯০৪০
কুইন সাউথ টেক্সটাইল১০২৯৩৮.৯০
কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ১০৩১.৯০৪৪.৮০
রানার অটোমোবাইলস৭৫৮৫.৪০৯৯.৮০
সী পার্ল বী রিসোর্ট১০২৮.৬০৩৬.৪০
সিলকো ফার্মাসিউটিক্যালস১০৩৪.৬০৩২.৫০
নিউ লাইন ক্লোথিংস১০১৯.৮০১৯.৮০
জেনেক্স ইনফোসিস১০৬০.৫০৫৬.৫০
এসএস স্টিল১০৩২.৯০৫০.১০
আমান কটন ফাইব্রাস৪০২৯.৩০৪৪.১০
এসকোয়্যার নিট কম্পোজিট৪৫৩৫.৩০৪৫.৯০
বসুন্ধরা পেপারস মিল৮০৬২.৪০৮৬.৭০
একমি ল্যাবরেটরিজ৮৫.২০৭১.৮০৮৪.৫০
আরএসআরএম স্টিল৪০৩৭.২০৪৮.২০
জিবিবি পাওয়ার৪০১২১১.৬০
ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস৭৫৪৮.২০৫৩.৬০
জিএসপি ফাইন্যান্স২৫১৪.৫০২০.৮০
বেঙ্গল উইন্ডসোর২৫২৩.৭০২৯.৬০
ওরিয়ন ফার্মা৬০৩২৩৭
আরগন ডেনিমস৩৫২২.৫০২৬.৮০
হামিদ ফেব্রিকস৩৫১৮.৭০২৩.৮০
ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড৩৫১৫.৪০২০.৭০
সাইফ পাওয়ারটেক৩০১৭.৭০২১.৯০
ফারইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডাইং২৭১৩.৯০১৫.৩০
তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ২৬১৭.৭০২০.৫০
পেনিনসুলা চিটাগাং৩০২৩.২০৩০.৮০
মতিন স্পিনিং৩৭৩৫.৯০৩৯.৪০
রংপুর ডেইরী অ্যান্ড ফুড১৮১৩১৬
রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস২৫১৩.৭০১৬.২০
অলিম্পিক এক্সেসরিজ১০৯.১০১৩.১০
জাহিন স্পিনিং১০৮.৫০১১.৪০
জাহিনটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ২৫১১
এ্যাপোলো ইস্পাত২২৫.৯০৮.৫০
জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন১০৪.৩০৬.৫০
ফারইস্ট ফাইন্যান্স১০৩.৩০৫.৮০
ফেমিলিটেক্স বিডি১০৩.৩০
তুং হাই নিটিং অ্যান্ড ডাইং১০৩.১০৫.৮০
সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল১০২.৭০৪.৩০
মোট১৯৮০.২০৩০৪৩.৪০৩৫২৫.৭০
গড়২২.২৫৩৪.২০৩৯.৬১

বিজনেস আওয়ার/১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

খায়রুল কমিশনের গড় ২২ টাকা ইস্যু মূল্যের শেয়ারের বাজার দর ৩৪ টাকা

পোস্ট হয়েছে : ০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

রেজোয়ান আহমেদ : বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) ২০১১ সালে চেয়ারম্যান হিসাবে ড. এম খায়রুল হোসেনের দায়িত্ব নেওয়ার পরে ৯০টি কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ওইসব কোম্পানিগুলো গড়ে ২২ টাকা ইস্যু মূল্যে শেয়ার ইস্যু করেছে। যেসব কোম্পানির গড় শেয়ার দর বাজারের চলমান মন্দাবস্থায় রয়েছে ৩৪ টাকায়। যা চলতি বছরের শুরুতে ছিল ৪০ টাকা।

খায়রুল হোসেনের নেত্বতাধীন কমিশনের বিগত ৮ বছরে আইপিও অনুমোদন দেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে সামিট পূর্বাঞ্চল পাওয়ার একই গ্রুপের সামিট পাওয়ারের সঙ্গে একীভূতকরন হয়েছে। যাতে এখন আর সামিট পূর্বাঞ্চলের অস্তিত্ব নেই। বাকি ৮৯টি কোম্পানির মধ্যে ৬০টি বা ৬৭.৪২ শতাংশ ইস্যু মূল্যের উপরে রয়েছে। বাকি ২৯টি বা ৩২.৫৮ শতাংশ কোম্পানি ইস্যু মূল্যের নিচে অবস্থান করছে। তবে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে এই অবস্থা শোচণীয়। ওইসব দেশে ইস্যু মূল্যের নিচে নেমে আসা কোম্পানির হার বেশি।

দেখা গেছে, ভারতে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত ৫০টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে। এরমধ্যে ২৪টি বা ৪৮ শতাংশ ইস্যু মূল্যের নিচে নেমে এসেছে। এছাড়া মালয়েশিয়ায় ২০১৮ সালের মার্চ থেকে ২০১৯ সালের মে পর্যন্ত সময়ে তালিকাভুক্ত হওয়া ২০টি কোম্পানির মধ্যে ৪টি বা ২০ শতাংশ, পাকিস্তানে ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত তালিকাভুক্ত হওয়া ৩টি কোম্পানির মধ্যে ২টি বা ৬৬.৬৭ শতাংশ এবং হংকংয়ে ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের মে পর্যন্ত সময়ে তালিকাভুক্ত হওয়া ১৬০টি কোম্পানির মধ্যে ৮০টি বা ৫০ শতাংশ ইস্যু মূল্যের নিচে লেনদেন হচ্ছে।

এদিকে ২০১৭ সালে মুম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হওয়া ৮৯টি (এসএমইসহ) কোম্পানির মধ্যে ২০টির বা ২২ শতাংশের দর ইস্যু মূল্যের নিচে নেমে এসেছে। আর লেনদেনের প্রথমদিনেই ২১টি বা ২৪ শতাংশ ইস্যু মূল্যের নিচে নেমে যায়। এছাড়া ২০১৭ সালে ভারতের ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান বোর্ডে তালিকাভুক্ত হওয়া ৩৬টি কোম্পানির মধ্যে ২২টি বা ৬১ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর গত ২৫ এপ্রিল ইস্যু মূল্যের নিচে নেমে এসেছে।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক সভাপতি ছায়েদুর রহমান বিজনেস আওয়ারকে বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের আইপিও’র দর ভালো অবস্থানে আছে। অন্যান্য দেশে প্রথমদিনেই ইস্যু মূল্যের নিচে লেনদেন হওয়ার মতো ঘটনা ঘটে। যা বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে হয় না। তবে লেনদেনের শুরুতে লক-ইনের কারনে অনেক সময় কৃত্রিম সংকটের মাধ্যমে শেয়ারের অস্বাভাবিক উত্থান ঘটে। এরপরে লক-ইন পিরিয়ড শেষে শেয়ারের সরবরাহ বেড়ে ওই কৃত্রিম দরে পতন হয়। যাতে লোকসানে পড়ে সাধারন বিনিয়োগকারীরা। 

দেশের শেয়ারবাজারের মন্দাবস্থায় ও কিছু কোম্পানির ব্যবসায় অবনতির কারনে ২৯টি বা ৩২.৫৮ শতাংশ শেয়ার ইস্যু মূল্যের নিচে নেমে এসেছে। তবে চলতি বছরের শুরুতে এ সংখ্যা ছিল ২০টি বা ২২.৪৭ শতাংশ। তবে বর্তমান কমিশন যতগুলো কোম্পানির আইপিও অনুমোদন দিয়েছে, লেনদেনের প্রথম দিন তার একটিও ইস্যু মূল্যের নিচে নামেনি। এছাড়া প্রত্যেকটি আইপিওতে কয়েকগুণ আবেদন জমা পড়ে। তবে শেয়ারবাজারের চলমান অবস্থায় নিরীক্ষা মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

সম্প্রতি একটি কোম্পানির তালিকাভুক্তির আগে ব্যাপক আলোচনায় উঠে আসে নিরীক্ষকদের নিরীক্ষা মান। যা ওই কোম্পানির আর্থিক হিসাব নিয়ে প্রশ্ন উঠার পরে ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) নির্দেশে তদন্তে নামে দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)। তবে সেই তদন্তে সহযোগিতা না করায় নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান আহমেদ অ্যান্ড আক্তারের প্রাকটিসিং লাইসেন্স নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নেয় আইসিএবি। এর মাধ্যমে প্রশ্নবিদ্ধ রয়েছে কোম্পানিটির নিরীক্ষা। তাই ভবিষ্যতে নিরীক্ষা মান উন্নয়নে নিয়ন্ত্রক সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা দরকার বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তাহলে ভবিষ্যতে ইস্যু মূল্যের নিচে নেমে আসা কোম্পানির হার কমবে বলে তাদের বিশ্বাস।

ইস্যু মূল্যের নিচে নেমে আসা ২৯টি কোম্পানির মধ্যে বুক বিল্ডিংয়ে প্রাতিষ্ঠানিক বা যোগ্য বিনিয়োগকারীদের নির্ধারিত ইস্যু মূল্যের ৩টি কোম্পানিও রয়েছে।

২০১৫ সালের সংশোধিত পাবলিক ইস্যু রুলস অনুযায়ি, বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ইস্যু মূল্য নির্ধারন এককভাবে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের হাতে। এক্ষেত্রে স্টক এক্সচেঞ্জ ও বিএসইসির কোন ভূমিকা থাকে না। কিন্তু সেই যোগ্য বিনিয়োগকারীদের মূল্যায়িত ৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩টি বা ৬০ শতাংশ কোম্পানি ইস্যু মূল্যের নিচে অবস্থান করছে।

বুক বিল্ডিংয়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা আমরা নেটওয়ার্ক, এসকোয়্যার নিট কম্পোজিট, বসুন্ধরা পেপারস মিল, আমান কটন ফাইব্রাস ও রানার অটোমোবাইলসের ইস্যু দর নির্ধারন করে। তাদের এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে এসকোয়্যার নিট কম্পোজিট, বসুন্ধরা পেপারস মিল ও আমান কটন ফাইবার্সের শেয়ার দর এখন ইস্যু মূল্যের নিচে।

ইস্যু মূল্য নির্ধারন প্রক্রিয়া নিয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন বিজনেস আওয়ারকে বলেন, কোন কোম্পানির আইপিও দর কমিশন নির্ধারন করে না। ফিক্সড প্রাইস মেথডের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি, ইস্যু ম্যানেজার ও নিরীক্ষকের ডিউ ডিলিজেন্স সনদ দেওয়ার পরে কমিশন ডিসক্লোজারস ভিত্তিতে আইপিও অনুমোদন দেয়। আর প্রিমিয়ামের ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক বা যোগ্য বিনিয়োগকারীরা দর নির্ধারন করে। এক্ষেত্রে কমিশন থেকে শুরু করে কোন স্টক এক্সচেঞ্জের ভূমিকা থাকে না।

নিম্নে বর্তমান কমিশনের অনুমোদন দেওয়া আইপিওর ইস্যু মূল্য ও বাজার দর তুলে ধরা হল-

কোম্পানির নামইস্যু মূল্য (টাকা)৮ সেপ্টেম্বরের দর (টাকা)১ জানুয়ারির দর (টাকা)
নাহি অ্যালুমিনিয়াম১০৪৮.৯০৬১.১০
ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড১০২৭.৩০৩৮.৪০
আমরা নেটওয়ার্ক৩৯৪৮.৯০৬০.৪০
বিবিএস কেবলস১০৯০.২০১০৩.৮০
নূরানি ডাইং অ্যান্ড সোয়েটার১০১৩.৭০১৬.৭০
শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ১০৩৫.২০৪৪.৮০
প্যাসিফিক ডেনিমস১০১৩.৭০১৬.৭০
কাট্টালি টেক্সটাইল১০১৯.৫০২৭.২০
এনভয় টেক্সটাইল৩০৩১.৬০৩৬.৬০
আমরা টেকনোলিজিস২৪২৪.৭০২৯.১০
সায়হাম কটন মিলস২০২৪২৬.৭০
বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল৩৫১১৯.২০৯৬.৭০
জিপিএইচ ইস্পাত৩০৩৩.৭০৩৫.৯০
পদ্মা ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স১০১৫.৮০২৬
প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল২৮৫৬.১০৬৮.৯০
বাংলাদেশ বিল্ডিং সিষ্টেমস১০২৪.৬০২৯.৩০
সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস১০১০.৫০১৪.৩০
গ্লোবাল হেভী কেমিক্যালস২০৩৮৩৯.৩০
গোল্ডেন হার্ভেষ্ট অ্যাগ্রো২৫২৮.৮০৩০.২০
প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলস২২৬৩.২০৭২.২০
সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স১০১৫.৬০২৭.৬০
খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ১০১১.৮০১২
সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ১০২৫.৮০২৯.১০
খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং১০১২.৪০২০.৬০
শাহজিবাজার পাওয়ার২৫৭৭.৩০৯৭.৫০
ফার কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ১০১০.৯০১৫.৬০
হা ওয়েল টেক্সটাইলস১০৩৬.৯০৩৭.৬০
এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ১০১৩.৫০১৬.৬০
এএফসি অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ১০২৭.৩০৩১.৯০
মোজাফ্ফর হোসাইন স্পিনিং১০১০.৩০১৩.১০
আইটি কনসালটেন্টস১০৪৫.৬০৪৭.৩০
ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন৭২৩৮৮.৭০৩০৪.৩০
শাশাঁ ডেনিমস  ৩৫৩৯.৬০৬১.৮০
বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলস৩৫৬৭৮০.৮০
সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ২০২০.২০৩৩.১০
কেডিএস এক্সেসরিজ২০৫৩.১০৫৪.১০
আমান ফিড৩৬৩৯.৯০৪৮.৫০
ইয়াকিন পলিমার ১০১০.৯০১৩.৪০
ইভিন্স টেক্সটাইল১০১১.৯০১২.৯০
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স১০২০.৮০১৬.৬০
ডরিন পাওয়ার জেনারেশন২৯৭৯.৯০৮৪.৮০
ড্রাগণ সোয়েটার অ্যান্ড স্পিনিং১০১৭.৪০২১.২০
ইফাদ অটোস৩০৬৭.৩০১০৯
ন্যাশনাল ফিড মিল১০১০.২০১১.৪০
ফরচুন সুজ১০৩৯.২০৩১.৮০
ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস১০২৩.১০৩৩.৯০
সিলভা ফার্মাসিউটিক্যালস১০২০.২০৩২.৫০
এম.এল ডাইং১০২৬.৬০৩২.৬০
ভিএফএস থ্রেড ডাইং১০২৭.৮০৫৯.৯০
এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ১০৪৫.৬০৪৮.৫০
ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং১০১৯.৮০২৭.৮০
অ্যাডভেন্ট ফার্মা১০৩১.৯০৪০
কুইন সাউথ টেক্সটাইল১০২৯৩৮.৯০
কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ১০৩১.৯০৪৪.৮০
রানার অটোমোবাইলস৭৫৮৫.৪০৯৯.৮০
সী পার্ল বী রিসোর্ট১০২৮.৬০৩৬.৪০
সিলকো ফার্মাসিউটিক্যালস১০৩৪.৬০৩২.৫০
নিউ লাইন ক্লোথিংস১০১৯.৮০১৯.৮০
জেনেক্স ইনফোসিস১০৬০.৫০৫৬.৫০
এসএস স্টিল১০৩২.৯০৫০.১০
আমান কটন ফাইব্রাস৪০২৯.৩০৪৪.১০
এসকোয়্যার নিট কম্পোজিট৪৫৩৫.৩০৪৫.৯০
বসুন্ধরা পেপারস মিল৮০৬২.৪০৮৬.৭০
একমি ল্যাবরেটরিজ৮৫.২০৭১.৮০৮৪.৫০
আরএসআরএম স্টিল৪০৩৭.২০৪৮.২০
জিবিবি পাওয়ার৪০১২১১.৬০
ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস৭৫৪৮.২০৫৩.৬০
জিএসপি ফাইন্যান্স২৫১৪.৫০২০.৮০
বেঙ্গল উইন্ডসোর২৫২৩.৭০২৯.৬০
ওরিয়ন ফার্মা৬০৩২৩৭
আরগন ডেনিমস৩৫২২.৫০২৬.৮০
হামিদ ফেব্রিকস৩৫১৮.৭০২৩.৮০
ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড৩৫১৫.৪০২০.৭০
সাইফ পাওয়ারটেক৩০১৭.৭০২১.৯০
ফারইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডাইং২৭১৩.৯০১৫.৩০
তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ২৬১৭.৭০২০.৫০
পেনিনসুলা চিটাগাং৩০২৩.২০৩০.৮০
মতিন স্পিনিং৩৭৩৫.৯০৩৯.৪০
রংপুর ডেইরী অ্যান্ড ফুড১৮১৩১৬
রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস২৫১৩.৭০১৬.২০
অলিম্পিক এক্সেসরিজ১০৯.১০১৩.১০
জাহিন স্পিনিং১০৮.৫০১১.৪০
জাহিনটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ২৫১১
এ্যাপোলো ইস্পাত২২৫.৯০৮.৫০
জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন১০৪.৩০৬.৫০
ফারইস্ট ফাইন্যান্স১০৩.৩০৫.৮০
ফেমিলিটেক্স বিডি১০৩.৩০
তুং হাই নিটিং অ্যান্ড ডাইং১০৩.১০৫.৮০
সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল১০২.৭০৪.৩০
মোট১৯৮০.২০৩০৪৩.৪০৩৫২৫.৭০
গড়২২.২৫৩৪.২০৩৯.৬১

বিজনেস আওয়ার/১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: