যুক্তরাজ্য থেকে রেজোয়ান : বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বর্তমানে জিডিপির মাত্র ২০% শেয়ারবাজারের মূলধন। এই বাজারের বড় হওয়ার অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। কারন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সমূহ সম্ভাবনা, সুদ হার অনুকূলে, বিশ্ব প্রতিকূল অবস্থা মোকাবেলার সক্ষমতাসহ অন্যান্য ইতিবাচক দিক রয়েছে। এজন্য বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগযোগ্য এবং বৃটিশদের পার্টনার হতে প্রস্তুত।
সোমবার (০৮ নভেম্বর) যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার সেন্টার কনভেনশন কমপ্লেক্সের এক্সচেঞ্জ হলে ‘ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট পোটেনশিয়াল ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ, ম্যানচেস্টার সিটির মেয়র এন্ডো বার্নহাম, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (বিডা) মো. সিরাজুল ইসলাম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মোহাম্মদ রহমাতুল মুনিম, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান প্রমুখ।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, শেয়ারবাজারের উন্নয়নে শুধু ইক্যুইটি নির্ভর না, বন্ডে মনোযোগি হচ্ছি। এরইমধ্যে সরকারি বন্ডের লেনদেন শুরু হয়েছে। এছাড়া সর্বপ্রথম বেসরকারি হিসেবে সিটি ব্যাংকের পারপিচুয়াল বন্ড লেনদেন শুরু করতে যাচ্ছে। যে শেয়ারবাজার বিশ্বের অন্যতম রিটার্ন বা মুনাফা পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরে বিশ্ব থেকে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করা হয়নি। তবে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের পাশে দাড়িঁয়েছিল। যার ধারাবাহিকতায় দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক্যের ভিত্তি তৈরী হয়েছে। এছাড়া নিয়মিত আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বাড়ছে। এই দেশে অনেক বাংলাদেশী থাকে।
স্বাধীনতার পরবর্তীতে বাংলাদেশ অন্যের সাহায্য নির্ভর ছিল উল্লেখ করে শিবলী রুবাইয়াত বলেন, বাংলাদেশ এখন আত্মনির্ভরশীল। পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন হয় এবং অর্থনীতিতে অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে এই উন্নতির জন্য গত ৫০ বছরে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে। তবে এখনো এনার্জি ও প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমানে দক্ষ জনবল রয়েছে। এছাড়া দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে সরকার কাজ করছে। যারা আগামি ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে নিয়ে যেতে চায়। আমাদের এখন মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রনে ও পর্যাপ্ত রিজার্ভ রয়েছে। যাতে করে যেকোন মুহূর্তে বিদেশী ঋণ পরিশোধ করার সক্ষমতা রয়েছে। এছাড়া মৃত্যুহার, মহিলা কর্মসংস্থান, শিক্ষার হার ইত্যাদি ক্ষেত্রে পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের এই উন্নতি নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে আলোচনা করা হচ্ছে উল্লেখ করে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ চাহিদার কারনে ২০২৩ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে। যেটা দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়ন যে কি পরিমাণ হচ্ছে, তা উপলব্ধি করা যায়।
আরও পড়ুন…..
যুক্তরাজ্যের নাগরিকদেরকে বিনিয়োগে আগ্রহী করতে প্রবাসিদেরকে কাজ করার অনুরোধ- সালমান এফ রহমান
বিএসইসির এই চেয়ারম্যান বলেন, ৩০-৪০ বছর আগে বাংলাদেশের জনগনকে বোঝা মনে করা হলেও এখন সে চিত্র পাল্টে গেছে। এখন বাংলাদেশের জনগন সম্পদ বা ক্যাপিটাল।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অনেক সুযোগ রয়েছে। এখন বাংলাদেশ ডিজিটালের পথে রয়েছে। যে মাধ্যম ব্যবহার করে বাংলাদেশে পৃথিবীর সর্বোচ্চ মোবাইলে আর্থিক লেনদেন সেবা হচ্ছে।
শিবলী রুবাইয়াত বলেন, বাংলাদেশে এখন পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, টানেল, মাতারবাড়ি পাওয়ারের মতো মেগা প্রজেক্টের কাজ চলছে। এছাড়া ১০০ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরন অঞ্চল (ইপিজেড) করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ইউনিলিভার, রবি, এভারকেয়ারের মতো বহূজাতিক কোম্পানি ব্যবসা করছে। এছাড়া বিভিন্ন প্রাইভেট কার কোম্পানি আসতে যাচ্ছে। যে দেশে সামাজিক কাজ করছে বৃটিশদের ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’ সংগঠন। একইভাবে বাংলাদেশের এনজিও ব্র্যাক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সামাজিক কাজ করছে।
বিজনেস আওয়ার/০৮ নভেম্বর, ২০২১/আরএ
2 thoughts on “বাংলাদেশ বৃটিশদের ব্যবসায়িক পার্টনার হতে প্রস্তুত”