বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: করোনা মহামারীর কারণে বন্ধ থাকার পর আগামী রোববার সারা দেশে শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা। এবারের পরীক্ষায় অংশ নেবে মোট ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে এসএসসিতে ১৮ লাখ ৯৯৮ জন, দাখিলে তিন লাখ এক হাজার ৮৮৭ জন এবং ভোকেশনালে এক লাখ ২৪ হাজার ২২৮ জন।
জানা যায়, গত বছরের তুলনায় ২০২১ সালে পরীক্ষার্থী বেড়েছে এক লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৪ জন। পরীক্ষা বৃদ্ধির গড় হার ৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এবার মোট প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ১৫১টি এবং কেন্দ্র বেড়েছে ১৬৭টি। মোট কেন্দ্র তিন হাজার ৬৭৯টি এবং মোট প্রতিষ্ঠান ২৯ হাজার ৩৫টি।
ঢাকা শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানায়, রোববার থেকে শুরু হওয়া পরীক্ষায় প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দেড় ঘণ্টা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম দিন কোরআন মজিদ ও তাজভিদ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। পদার্থবিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে একই দিন একই সময়। হাদিস শরিফ বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১৮ নভেম্বর। ইসলামের ইতিহাস ও রসায়ন (তত্ত্বীয়), তাজভিদ নসর ও নজম (মুজাব্বিদ গ্রুপ) এবং তাজভিদ (হিলফুল কোরআন গ্রুপ) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২১ নভেম্বর রবিবার।
পরীক্ষার বিশেষ নির্দেশনায় জানানো হয়, কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে অবশ্যই পরীক্ষার কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষার সময় এক ঘণ্টা ৩০ মিনিট।
করোনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এবার একজন শিক্ষার্থীকে নৈর্বাচনিক তিনটি বিষয়ের পরীক্ষা দিতে হবে। আবশ্যিক পরীক্ষা এ বছর হবে না। সূচিতে প্রকাশিত বিষয়গুলোর মধ্যে যার যে নৈর্বাচনিক বিষয় রয়েছে সে সেই বিষয়ের পরীক্ষা দেবে। তবে একজনকে নৈর্বাচনিক তিনটি বিষয়ের পরীক্ষা দিতে হবে।
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থীদের জন্য গত রোববার ৯ নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্দেশনা
১. পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে সব পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করে আসন গ্রহণ করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থী নির্ধারিত সময়ের পর পরীক্ষা কেন্দ্রে আসলে রেজিস্ট্রারে নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময় ও বিলম্বের কারণ উল্লেখ করতে হবে। বিলম্বে আসা পরীক্ষার্থীদের তালিকা প্রতিদিন কেন্দ্রসচিব সংশ্লিষ্ট বোর্ডকে জানাবে।
২. কেন্দ্রসচিব ছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রে অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা মোবাইল ফোনের সুবিধাসহ ঘড়ি, কলম বা অননুমোদিত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবে না। কেন্দ্রসচিব ছবি তোলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাবিহীন একটি সাধারণ (ফিচার) ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। অননুমোদিত ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৩. প্রত্যেক কেন্দ্রের জন্য একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট/কর্মকর্তারা (ট্যাগ অফিসার) নিয়োগ দিতে হবে। ট্রেজারি বা থানা বা নিরাপত্তা হেফাজত থেকে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা তাঁর মনোনীত উপযুক্ত প্রতিনিধি ট্যাগ অফিসারসহ প্রশ্নপত্র গ্রহণ করে পুলিশ প্রহরায় কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতি ছাড়া প্রশ্ন বের করা যাবে না বা বহন করা যাবে না।
৪. ট্রেজারি বা থানা বা নিরাপত্তা হেফাজত থেকে পরীক্ষার কেন্দ্রে বহুমুখী নির্বাচনী প্রশ্নসহ রচনামূলক বা সৃজনশীলের সব সেট প্রশ্নই নিতে হবে। সেট কোড পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে জানানো হবে। সে অনুযায়ী নির্ধারিত সেট কোডে পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে। কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার), কেন্দ্রসচিব এবং পুলিশ কর্মকর্তার উপস্থিতি ও স্বাক্ষরে বিধি অনুযায়ী প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলে ফেলতে হবে।
৫. পরীক্ষা চলাকালে এবং পরীক্ষা অনুষ্ঠানের আগে বা পরে পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা ছাড়া অন্যদের প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে। এ সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশকারী অননুমোদিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৬. অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষা বিলম্বে শুরু করতে হলে যত মিনিট পরে পরীক্ষা শুরু হবে, পরীক্ষার্থীদের সে সময় থেকে যথারীতি প্রশ্নপত্রে উল্লেখিত নির্ধারিত সময় দিতে হবে।
৭. পরীক্ষা কেন্দ্রে ও প্রশ্ন পরিবহনে দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন।
৮. প্রশ্নপত্র ফাঁস কিংবা পরীক্ষার্থীদের কাছে উত্তর সরবরাহে জড়িত ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জেলা প্রশাসন কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁসসংক্রান্ত গুজব কিংবা এ কাজে তৎপর চক্রগুলোর কার্যক্রমের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ নজরদারি জোরদার করবে।
৯. কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য একজনের বেশি অভিভাবক পরীক্ষার্থীর সঙ্গে আসতে পারবেন না। তা ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ৫ সেপ্টেম্বর জারি করা গাইডলাইনের নির্দেশনা পালন করতে হবে।
বিজনেস আওয়ার/ ১৩ নভেম্বর, ২০২১/এএইচ