ঢাকা , রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধর্ষিত নারীকে দুশ্চরিত্র প্রমাণের দুটি ধারা বাতিল চেয়ে রিট

  • পোস্ট হয়েছে : ০২:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২১
  • 34

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), নারীপক্ষ ও ব্লাস্টের পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন ধর্ষণের শিকার নারীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা সাক্ষ্য আইনের দুটি ধারা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছে। রিটে আইন মন্ত্রণালয়কে বিবাদী করা হয়েছে।

রিটকারী ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, ‘আমরা সাক্ষ্য আইনের ১৫৫ ও ১৪৬ দুটি ধারা বাতিল চেয়ে রিট দায়ের করেছি। রিটে এ ধারা দুটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।’

রিটটি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে।

ব্রিটিশ আমলে প্রণীত সাক্ষ্য আইনের ১৫৫(৪) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি যখন বলাৎকার বা শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি হন, তখন দেখানো যেতে পারে যে, অভিযোগকারিণী সাধারণভাবে দুশ্চরিত্র নারী (When a man is prosecuted for rape or an attempt to ravish, it may be shown that the prosecutrix was of generally immoral character)।’

১৪৬ ধারার ৩ উপধারায় বলা হয়, ‘যখন একটি সাক্ষী ক্রস-পরীক্ষা করা হয়, তিনি প্রশ্ন করার পূর্বে এখানে প্রশ্ন করতে পারেন, যেকোনো প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হবে তার চরিত্র আহত করার মাধ্যমে তার কৃতিত্বকে হ্রাস করার জন্য, যদিও এই ধরনের প্রশ্নগুলির উত্তর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তাকে দোষারোপ করতে পারে অথবা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রকাশ করতে পারে বা তাকে জরিমানা অথবা জালিয়াতির মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারে।’

সাক্ষ্য আইনের এসব ধারা বাতিলে বিভিন্ন সময় দাবি ওঠে। দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সাক্ষ্য আইনের ধারা বাতিলের উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

চলতি বছরের এক আলোচনায় আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, সাধরণত দুশ্চরিত্র হলেই যে ধর্ষণ করা যাবে, এই বিষয়টি আমরা অনুমোদন দিতে পারি না। এই কারণে সাক্ষ্য আইনের ১৫৫ (৪) ধারা বাতিল হয়ে যাচ্ছে। সাক্ষ্য আইন সংশোধন হচ্ছে। সাক্ষ্য আইনের পরিববর্তন আমরা করছি।

‘ভার্চুয়াল কোর্ট করার জন্য সাক্ষ্য আইনের যে যে জায়গায় পরিবর্তন করা দরকার, সেগুলো আমরা পরিবর্তন করব।’ প্রস্তাবটি জাতীয় সংসদে উত্থাপনের কথা বলেছিলেন মন্ত্রী।

বিজনেস আওয়ার/ ১৪ নভেম্বর, ২০২১/এএইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ধর্ষিত নারীকে দুশ্চরিত্র প্রমাণের দুটি ধারা বাতিল চেয়ে রিট

পোস্ট হয়েছে : ০২:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), নারীপক্ষ ও ব্লাস্টের পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন ধর্ষণের শিকার নারীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা সাক্ষ্য আইনের দুটি ধারা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছে। রিটে আইন মন্ত্রণালয়কে বিবাদী করা হয়েছে।

রিটকারী ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, ‘আমরা সাক্ষ্য আইনের ১৫৫ ও ১৪৬ দুটি ধারা বাতিল চেয়ে রিট দায়ের করেছি। রিটে এ ধারা দুটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।’

রিটটি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে।

ব্রিটিশ আমলে প্রণীত সাক্ষ্য আইনের ১৫৫(৪) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি যখন বলাৎকার বা শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি হন, তখন দেখানো যেতে পারে যে, অভিযোগকারিণী সাধারণভাবে দুশ্চরিত্র নারী (When a man is prosecuted for rape or an attempt to ravish, it may be shown that the prosecutrix was of generally immoral character)।’

১৪৬ ধারার ৩ উপধারায় বলা হয়, ‘যখন একটি সাক্ষী ক্রস-পরীক্ষা করা হয়, তিনি প্রশ্ন করার পূর্বে এখানে প্রশ্ন করতে পারেন, যেকোনো প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হবে তার চরিত্র আহত করার মাধ্যমে তার কৃতিত্বকে হ্রাস করার জন্য, যদিও এই ধরনের প্রশ্নগুলির উত্তর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তাকে দোষারোপ করতে পারে অথবা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রকাশ করতে পারে বা তাকে জরিমানা অথবা জালিয়াতির মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারে।’

সাক্ষ্য আইনের এসব ধারা বাতিলে বিভিন্ন সময় দাবি ওঠে। দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সাক্ষ্য আইনের ধারা বাতিলের উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

চলতি বছরের এক আলোচনায় আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, সাধরণত দুশ্চরিত্র হলেই যে ধর্ষণ করা যাবে, এই বিষয়টি আমরা অনুমোদন দিতে পারি না। এই কারণে সাক্ষ্য আইনের ১৫৫ (৪) ধারা বাতিল হয়ে যাচ্ছে। সাক্ষ্য আইন সংশোধন হচ্ছে। সাক্ষ্য আইনের পরিববর্তন আমরা করছি।

‘ভার্চুয়াল কোর্ট করার জন্য সাক্ষ্য আইনের যে যে জায়গায় পরিবর্তন করা দরকার, সেগুলো আমরা পরিবর্তন করব।’ প্রস্তাবটি জাতীয় সংসদে উত্থাপনের কথা বলেছিলেন মন্ত্রী।

বিজনেস আওয়ার/ ১৪ নভেম্বর, ২০২১/এএইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: