ঢাকা , শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হারানো জায়গা পুনরুদ্ধারে লড়াইয়ে তাসকিন

  • পোস্ট হয়েছে : ০৫:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই ২০২০
  • 61

স্পোর্টস ডেস্ক : আষাঢ়ের ভরদুপুরে তপ্ত বালুতে কোমরে টায়ার বেঁধে ছুটছেন তাসকিন আহমেদ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দৌড়াচ্ছেন, শরীর থেকে দরদর করে ঝরছে ঘাম। কখনো বাসার গ্যারেজে বা কখনওবা একটু খানি খালি যায়গায় বোলিং অনুশীলন করছেন কখনো বা জিমে হাড়ভাঙ্গা খাটুনি।

করনাকালের আগের তাসকিন ও বর্তমানের তাসকিনকে অনেকেই হয়তো মিলাতে পারবেন না। কেননা এই চার মাসে ৬ কেজি ওজন কমিয়ে তাসকিন এখন টগবগে তরুণ। এবং যতদিন মাঠের ক্রিকেট না ফিরছে ততদিন তার এই কর্মযজ্ঞ অব্যাহত থাকবে। লক্ষ্য একটাই, জাতীয় দলের হারানো জায়গা পুনরুদ্ধার করা।

টাইগারদের স্পিড স্টার তাসকিনকে দুর্ভাগা বলতেই হবে এই অর্থে যে যখনই সেরা ফর্মে ফিরেছেন তখনই তাকে ইনজুরি পেয়ে বসেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে কোন সতীর্থ ক্রিকেটার নয়, জাতীয় দলে ফেরার পথে ইনজুরিটা সবচেয়ে বড় বাধা।

বিপিএল ষষ্ঠ আসরে ১২ ম্যাচে ২২ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকার করেছিলেন। ওই আসরের পারফরম্যান্সই তাকে নিউজিল্যান্ড সিরিজে জায়গা করে দিয়েছিল। কিন্তু বিধিবাম, নিজেদের শেষ ম্যাচে লং অফে ক্যাচ নিতে গেলে গোড়ালিতে চোট পেয়ে নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকে ছিটকে যান।

বিষয়টি পরিষ্কার যে তাসকিনের জাতীয় দলে আসার পথটি মূলত ফিটনেসহীনতাই অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। যতবারই আসতে চেয়েছেন এবং এসেছেন ততোবারই তার মিশনে বাধার প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে ইনজুরি। তাসকিনও তা বেশ ভালো করেই অনুধাবন করতে পেরেছেন।

তা অনুধাবন পূর্বক জাতীয় দলে ঢোকার পথ প্রশস্ত করতে ফিটনেসের উপরে গুরুত্ব আরোপ করেছেন এবং সেই লক্ষ্যেই আষাঢ়ের ভরদুপুরে তপ্তবালু তে ছুটে চলেছেন। এবং তিনি নিজের কাছে অঙ্গীকারাবদ্ধ যে, জাতীয় দলে আর একবার সুযোগ পেলে নিজের সেরাটি উজাড় করে দিয়ে হারানো জায়গা পুনরুদ্ধার করবেন।

এ প্রসঙ্গে তাসকিন বলেন, আমি মূলত আমার সামর্থ্য বাড়াতে বালুতে অনুশীলন করছি। ফিটনেসের একটু উন্নতি হয়েছে হয়ত। চেষ্টা করে যাচ্ছি। নিজের সেরাটি যাতে দিতে পারি। বাংলাদেশের হয়ে সুযোগ পেলে সেরা পারফরম্যান্স করে নিজের জায়গা যাতে করে ঠিক করতে পারি ও দেশকে কিছু দিতে পারি এটাই লক্ষ্য।’

তিনি বলেন, করোনাকালে যদি সুস্থ থাকি, মাঠে ক্রিকেট ফেরার আগ পর্যন্ত আমার এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। কারণ আপনি হয়ত বলে কয়ে ভাল খেলতে পারবেন না। কিন্তু যেটা পারবেন নিজের ফিটনেসটা ঠিক রাখতে। আমি সত্যিই অনেক চেষ্টা করছি। যেন কেউ কখনো বলতে পারে তাসকিন চেষ্টাই করেনি।’

উল্লেখ্য, জাতীয় দলের জার্সিতে তাসকিনকে সব শেষ দেখা গিয়েছিল ২০১৮ সালের মার্চে, নিদাহাস ট্রফিতে। এরপর ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ড সিরিজ ও বিশ্বকাপ শেষে শ্রীলঙ্কা সিরিজে তাকে বাংলাদেশ দলের মূল স্কোয়াডে রাখা হলেও টিম কম্বিনেশন কথা বিবেচনা করে একাদশে নামায়নি টিম ম্যানেজমেন্ট।

গেল বছরের সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দেশের মাটিতে একমাত্র টেস্ট সিরিজের ১৫ সদস্যের দলেও। কিন্তু চট্টগ্রামের স্পিন একাদশে জায়গা হয়নি তাসকিনের। এরপর বাংলাদেশ আর যে ক’টি সিরিজে খেলেছে তার কোনটিতেই ডাক পড়েনি এই টাইগার স্পিড স্টারের।

বিজনেস আওয়ার/০৯ জুলাই, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

হারানো জায়গা পুনরুদ্ধারে লড়াইয়ে তাসকিন

পোস্ট হয়েছে : ০৫:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই ২০২০

স্পোর্টস ডেস্ক : আষাঢ়ের ভরদুপুরে তপ্ত বালুতে কোমরে টায়ার বেঁধে ছুটছেন তাসকিন আহমেদ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দৌড়াচ্ছেন, শরীর থেকে দরদর করে ঝরছে ঘাম। কখনো বাসার গ্যারেজে বা কখনওবা একটু খানি খালি যায়গায় বোলিং অনুশীলন করছেন কখনো বা জিমে হাড়ভাঙ্গা খাটুনি।

করনাকালের আগের তাসকিন ও বর্তমানের তাসকিনকে অনেকেই হয়তো মিলাতে পারবেন না। কেননা এই চার মাসে ৬ কেজি ওজন কমিয়ে তাসকিন এখন টগবগে তরুণ। এবং যতদিন মাঠের ক্রিকেট না ফিরছে ততদিন তার এই কর্মযজ্ঞ অব্যাহত থাকবে। লক্ষ্য একটাই, জাতীয় দলের হারানো জায়গা পুনরুদ্ধার করা।

টাইগারদের স্পিড স্টার তাসকিনকে দুর্ভাগা বলতেই হবে এই অর্থে যে যখনই সেরা ফর্মে ফিরেছেন তখনই তাকে ইনজুরি পেয়ে বসেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে কোন সতীর্থ ক্রিকেটার নয়, জাতীয় দলে ফেরার পথে ইনজুরিটা সবচেয়ে বড় বাধা।

বিপিএল ষষ্ঠ আসরে ১২ ম্যাচে ২২ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকার করেছিলেন। ওই আসরের পারফরম্যান্সই তাকে নিউজিল্যান্ড সিরিজে জায়গা করে দিয়েছিল। কিন্তু বিধিবাম, নিজেদের শেষ ম্যাচে লং অফে ক্যাচ নিতে গেলে গোড়ালিতে চোট পেয়ে নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকে ছিটকে যান।

বিষয়টি পরিষ্কার যে তাসকিনের জাতীয় দলে আসার পথটি মূলত ফিটনেসহীনতাই অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। যতবারই আসতে চেয়েছেন এবং এসেছেন ততোবারই তার মিশনে বাধার প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে ইনজুরি। তাসকিনও তা বেশ ভালো করেই অনুধাবন করতে পেরেছেন।

তা অনুধাবন পূর্বক জাতীয় দলে ঢোকার পথ প্রশস্ত করতে ফিটনেসের উপরে গুরুত্ব আরোপ করেছেন এবং সেই লক্ষ্যেই আষাঢ়ের ভরদুপুরে তপ্তবালু তে ছুটে চলেছেন। এবং তিনি নিজের কাছে অঙ্গীকারাবদ্ধ যে, জাতীয় দলে আর একবার সুযোগ পেলে নিজের সেরাটি উজাড় করে দিয়ে হারানো জায়গা পুনরুদ্ধার করবেন।

এ প্রসঙ্গে তাসকিন বলেন, আমি মূলত আমার সামর্থ্য বাড়াতে বালুতে অনুশীলন করছি। ফিটনেসের একটু উন্নতি হয়েছে হয়ত। চেষ্টা করে যাচ্ছি। নিজের সেরাটি যাতে দিতে পারি। বাংলাদেশের হয়ে সুযোগ পেলে সেরা পারফরম্যান্স করে নিজের জায়গা যাতে করে ঠিক করতে পারি ও দেশকে কিছু দিতে পারি এটাই লক্ষ্য।’

তিনি বলেন, করোনাকালে যদি সুস্থ থাকি, মাঠে ক্রিকেট ফেরার আগ পর্যন্ত আমার এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। কারণ আপনি হয়ত বলে কয়ে ভাল খেলতে পারবেন না। কিন্তু যেটা পারবেন নিজের ফিটনেসটা ঠিক রাখতে। আমি সত্যিই অনেক চেষ্টা করছি। যেন কেউ কখনো বলতে পারে তাসকিন চেষ্টাই করেনি।’

উল্লেখ্য, জাতীয় দলের জার্সিতে তাসকিনকে সব শেষ দেখা গিয়েছিল ২০১৮ সালের মার্চে, নিদাহাস ট্রফিতে। এরপর ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ড সিরিজ ও বিশ্বকাপ শেষে শ্রীলঙ্কা সিরিজে তাকে বাংলাদেশ দলের মূল স্কোয়াডে রাখা হলেও টিম কম্বিনেশন কথা বিবেচনা করে একাদশে নামায়নি টিম ম্যানেজমেন্ট।

গেল বছরের সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দেশের মাটিতে একমাত্র টেস্ট সিরিজের ১৫ সদস্যের দলেও। কিন্তু চট্টগ্রামের স্পিন একাদশে জায়গা হয়নি তাসকিনের। এরপর বাংলাদেশ আর যে ক’টি সিরিজে খেলেছে তার কোনটিতেই ডাক পড়েনি এই টাইগার স্পিড স্টারের।

বিজনেস আওয়ার/০৯ জুলাই, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: