বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে এসে ১ম বছরেই ‘নো’ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করায় এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স ও রবি আজিয়াটায় বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কোম্পানি দুটির কর্তৃপক্ষকে জরুরী তলব করে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে কমিশন। একইসঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশ দিতে বাধ্য করে। কিন্তু একই ঘটনার জন্ম দেওয়ার পরেও একমি পেস্টিসাইডসের ক্ষেত্রে নিশ্চুপ কমিশন।
মুনাফা সত্ত্বেও রবি আজিয়াটা ও এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্সের ‘নো’ ডিভিডেন্ডের সিদ্ধান্ত শেয়ারবাজারের পরিপন্থী বলে মনে করে কমিশন। যে কারনে কোম্পানি দুটির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তলব করা হয় কমিশনে। এতে লভ্যাংশ না দেওয়ায় খুবই হতাশা এবং অসন্তোষ প্রকাশ করে কমিশন। যে কোম্পানি দুটিকে অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশ দিতে বাধ্য করে কমিশন।
কিন্তু একই ঘটনার জন্ম দেওয়া একমি পেস্টিসাইডসে নিশ্চুপ কমিশন।
গত ৫ অক্টোবর পর্ষদ সভা করে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য কোন লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় একমি পেস্টিসাইডস কর্তৃপক্ষ। রবি আজিয়াটা ও এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্সের থেকে অনেক বেশি বা শেয়ারপ্রতি ২.১২ টাকা মুনাফা সত্ত্বেও ওই অর্থবছরের ব্যবসায় কোন লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি। কিন্তু তারপরেও কমিশন থেকে এ কোম্পানিকে কিছু বলা হয়নি।
এদিকে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণার উদ্দেশ্যে শুরুতেই চালাকির আশ্রয় নেয় একমি পেস্টিসাইডস কর্তৃপক্ষ। এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স ও রবি আজিয়াটা কর্তৃপক্ষ লেনদেন শুরু হওয়ার পরে বিগত বছরের জন্য ‘নো’ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করলেও একমি পেস্টিসাইডস বিষয়টি গোপন করার জন্য লেনদেন শুরুর আগেই করে। যে কারনে তাদেরকে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (পিএসআই) হিসেবে স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে ও গণমাধ্যমে প্রকাশ করতে হয়নি। যাতে করে বিষয়টি আড়াঁলে পড়ে যায়।
আরও পড়ুন…….
আইপিওর আগে ছয় মাসে ৩ কোটি থেকে একমি পেস্টিসাইডস ১০৫ কোটির কোম্পানি
এর আগে গত বছরের ২৪ আগস্ট লেনদেন শুরু হওয়া এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্সের পরিচালনা পর্ষদ ১৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ২০১৯ সালের ব্যবসায় শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ওই বছরের ব্যবসায় শেয়ারপ্রতি ১.৩১ টাকা মুনাফা সত্ত্বেও লভ্যাংশ ঘোষণা না করায় ক্ষুব্ধ হয় বিএসইসি। শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার ৮ মাস আগে শেষ হওয়া অর্থবছরের জন্য লভ্যাংশ না দেওয়ার পরেও ক্ষোভ প্রকাশ করে। যে সময় আইপিওর শেয়ারহোল্ডারদের কোন ভূমিকা ছিল না।
তারপরেও কমিশন পরের দিন (১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০) এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স কর্তৃপক্ষকে কমিশনে তলব করা হয় এবং শেয়ারহোল্ডারদের অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশ দিতে বলা হয়। যার আলোকে গত বছরের ১ নভেম্বর পর্ষদ সভা করে অন্তর্বর্তীকালীন ৫% নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে।
এরপরে চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালের ব্যবসায় শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রবি আজিয়াটা কর্তৃপক্ষ। যার আলোকে ১৬ ফেব্রুয়ারি কোম্পানি কর্তৃপক্ষকে জরুরী তলব করে কমিশন। এতে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। শেয়ারপ্রতি ০.৩৩ টাকা মুনাফা সত্ত্বেও কোম্পানিটির পর্ষদের ‘নো’ ডিভিডেন্ডের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনি কমিশন। তাই তলবে উপস্থিত হওয়া রবির কর্মকর্তাদরকে বিনিয়োগকারীদের জন্য বিকল্প হিসেবে কোন কিছুর ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেয় কমিশন।
এর আলোকে গত ৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় রবি আজিয়াটার পর্ষদ ২০২১ সালের ৩১ মার্চের আর্থিক হিসাবের উপর ভিত্তি করে ৩ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশ ঘোষণা করে।
বিজনেস আওয়ার/২১ নভেম্বর, ২০২১/আরএ