বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানান তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশবাসী দেখেছে একজন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বহীন বক্তব্য এবং অসৎ আচরণের জন্য শেখ হাসিনা ছাড় দেননি। আর তার বিপরীতে দেশবাসী দেখল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাঁর দলের একজন নেতার অশালীন বক্তব্যকে নির্লজ্জভাবে কীভাবে দলীয়ভাবে সমর্থন দিলেন। দেশবাসী বিস্মিত, ক্ষুব্ধ এবং লজ্জিত। দলটির নেতারা রাজনৈতিক শিষ্টাচারকে ভূলুণ্ঠিত করেছেন।
কাদের বলেন, বিএনপি লালন করে প্রতিহিংসা, ষড়যন্ত্র আর পরশ্রীকাতরতা। তাদের মাঝে কৃতজ্ঞতাবোধ নেই, তারা কৃতঘ্ন। তারা জন্মলগ্ন থেকে রাজনীতির সুষ্ঠু ধারা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের পরিবেশকে কলুষিত করে আসছে।
বিএনপির কখনো কৃতজ্ঞতাবোধ ছিল না দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দলগতভাবে তারা শিষ্টাচারবর্জিত দল। তা না হলে শোকসন্তপ্ত মাকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে তারা দরজা বন্ধ করে অসম্মানজনকভাবে ফিরিয়ে দিত না। গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চায়ের আমন্ত্রণের বিপরীতে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সেদিনের অশালীন বক্তব্য সে সময় দেশবাসী শুনেছিল। তাই বলতে চাই, শিষ্টাচারহীনতা, অশালীনতা তাদের মজ্জাগত। এটা তাদের রাজনৈতিক ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মঞ্চে-সংসদে দাঁড়িয়ে বিএনপি নেতা-নেত্রীরা যেসব ভাষায় বক্তব্য দেন তা বলারও অযোগ্য, ছাপারও অযোগ্য। কথায় ও কাজে পরিশীলিত রুচিবোধ ও শালীনতা তাদের মাঝে নেই। না হয়, তাদের নেতা আলালের এমন অরাজনৈতিক কুরুচিপূর্ণ ভাষাকে কীভাবে রাজনীতিতে সজ্জন বলে বিবেচিত মির্জা ফখরুল সাহেবরা যৌক্তিকতা আছে বলে পাবলিকলি সার্টিফিকেট দেন? তাহলে জনগণ ধরে নিচ্ছে তাদের সব অপপ্রচার আর বিষোদগারের মতো লোকদেখানো ভদ্রতাও একধরনের মুখোশ? আসলে বিএনপির রাজনীতি এখন তলানিতে ঠেকে গেছে। তারা মেরুদণ্ডহীন ফরমায়েশসর্বস্ব এক রাজনৈতিক দল।’
জিয়া পরিবারের সদস্যদের অনেক কীর্তি এ দেশের মানুষ জানে দাবি করে কাদের বলেন, ‘সেসব পরিবারের গণ্ডি পেরিয়ে রাজনীতির মাঠে আসুক তা আমরা চাই না। কিন্তু দলটির নেতারা আজ সে প্যান্ডোরার বাক্স উন্মুক্ত করতে উসকানি দিচ্ছেন স্পষ্টত। বিএনপি নেতারা এতটাই অন্ধ এবং ফরমায়েশনির্ভর হয়ে গেছেন যে, দলের একজন নেতা মিথ্যাচার করল, অশালীন কথা বলল অথচ সিনিয়র নেতারা তার পক্ষেই সাফাই গাইলেন। আবার তাঁরা সরকারকে মানবিক হওয়ার সবক দেন।’
বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক শিষ্টাচারে বিশ্বাসী বলে জানিয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ঐতিহ্যগতভাবেই রাজনীতিতে বিনয়, সহমর্মিতা, পরমতসহিষ্ণুতা চর্চা করে আওয়ামী লীগ। দলে কিংবা সরকারে কেউ শিষ্টাচারবহির্ভূত কাজ করলে তাকে ছাড় দেওয়া হয় না, এ কথা শেখ হাসিনা বারবার প্রমাণ করেছেন। যত বড় রাজনৈতিক পরিচয় হোক, অন্যায়, অনিয়ম কিংবা রাজনৈতিক শিষ্টাচার অথবা শৃঙ্খলাবহির্ভূত কাজ করলে দল কখনো তার পক্ষে দাঁড়ায় না।
বিজনেস আওয়ার/০৯ ডিসেম্বর, ২০২১/এএইচ