বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চে আগুনের ঘটনায় নিখোঁজদের খুঁজতে ডুবুরিদের পাশাপাশি ট্রলার নিয়ে নদীতে নেমেছেন ৩৬টি পরিবারের স্বজনরা। প্রিয়জনকে জীবিত বা মৃত খুঁজে পেতে শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ৮টায় ঝালকাঠির মিনিপাড় থেকে তিনটি ট্রলার নিয়ে নদীতে নামেন তারা।
বরগুনার নলিমাটিয়া গ্রামের আল-আমিন বলেন, সরকারের পাশাপাশি আমরাও ট্রলার ভাড়া করে নিখোঁজদের খুঁজতে বের হয়েছি। আমার বোন আর বোনের ছয় বছরের ছেলে নিখোঁজ। তাদের না নিয়ে ঘরে ফিরব না।
অভিযান-১০ লঞ্চে ছিলেন একই জেলার মানিকখালি গ্রামের ফরিদা বেগমের মেয়ে, মেয়ের জামাই ও নাতি। তিন জনই নিখোঁজ। তাদের খুঁজতে ট্রলারে করে সুগন্ধায় নেমেছেন ফরিদাও।
তিনি বলেন, তারা ঢাকা থেকে আমার সঙ্গে দেখা করতে আসছিল। আয়োজনও ছিল অনেক বড়। শেষ দেখা আর হলো না।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে ঝালকাঠির পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকায় সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন লাগে। এতে এখন পর্যন্ত ৩৯ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। নিখোঁজ শতাধিক। আর আহত অনেককে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
ডুবে যাওয়া লঞ্চটিতে কত জন যাত্রী ছিল তার সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। বিআইডব্লিউটিএ থেকে জানানো হয়েছে, লঞ্চটিতে প্রায় ৪০০ যাত্রী ছিল। তবে লঞ্চ থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের অনেকে বলছেন, এই অঞ্চে যাত্রী ছিল আটশ’ থেকে এক হাজার।
বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান শুক্রবার রাতে জানান, ঝালকাঠি জেনারেল হাসপাতাল থেকে মোট ৩৭ জনের মরদেহ বুঝে নিয়েছে বরগুনা জেলা প্রশাসন। এদের মধ্যে চারজনের মরদেহ ইতোমধ্যে স্বজনদেরও কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। বাকি মরদেহ বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
তিনি জানান, বেলা ১১টা পর্যন্ত এই মরদেহগুলো বরগুনা জেনারেল হাসপতালের মর্গে রাখা হবে। সকাল ১০টার মধ্যে কেউ মরদেহ শনাক্ত করতে পারলে তাকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
গত বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) গভীর রাতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী লঞ্চটিতে ভয়াবহ ওই অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ বা আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন শতাধিক মানুষ।
বিজনেস আওয়ার/২৫ ডিসেম্বর, ২০২১/এএইচ