ঢাকা , সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবার বিতর্কিত নিরীক্ষক দিয়ে শেয়ারবাজারে আসছে বিডি থাই ফুড

  • পোস্ট হয়েছে : ১১:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ জানুয়ারী ২০২২
  • 68

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : একমি পেস্টিসাইডসের পরে প্রতারনের দায়ে নিষিদ্ধ নিরীক্ষক সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং এর পার্টনার রমেন্দ্র নাথ বসাকের মাধ্যমে নিরীক্ষা করে শেয়ারবাজারে আসছে বিডি থাই ফুড অ্যান্ড বেভারেজ। যে নিরীক্ষক একই কোম্পানির একই সময়ের দুই রকম অ্যাকাউন্টস নিরীক্ষা করেছে এবং সঠিক বলে সার্টিফিকেট দিয়েছে। যা দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। এই জঘন্যতম কাজের জন্য তার নিরীক্ষা কাজের উপর ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)। আর সেই প্রতারক নিরীক্ষা করেছে বিডি থাই ফুড।

অথচ অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব পালনের শুরুতেই স্বচ্ছ কোম্পানির আইপিও অনুমোদনের বিষয়ে জোরদার করেছিলেন। যে কারনে অনেক কোম্পানির আইপিও আবেদন বাতিল করে দিয়েছিলেন। যা শেয়ারবাজারে কমিশনের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করেছিল। কিন্তু সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে।

এ কোম্পানিটিকে শেয়ারবাজারে আনতে ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে- বিএলআই ক্যাপিটাল এবং ইউনিক্যাপ ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।

এ বিষয়ে শেয়ারবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বিজনেস আওয়ারকে বলেন, নিরীক্ষকদের জায়গায় স্বচ্ছতা আনাটা খুবই জরুরি। তাদের নিরীক্ষার উপরে আস্থা রাখা যায় না। তারপরেও একজন বিতর্কিত নিরীক্ষকের নিরীক্ষার কোম্পানির আইপিও কেনো দেওয়া হয়েছে, সেটা কমিশনই ভালো বলতে পারবে।

গত বছরের ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক সিলভার কম্পোজিট টেক্সটাইল মিলসের একই সময়ের দুই রকম আর্থিক হিসাব দুই ব্যাংকে জমাদানের বিষয়ে ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলকে চিঠির মাধ্যমে জানায়। যা রমেন্দ্র নাথ নিরীক্ষা করেছিলেন। এরপরে ১৭ জানুয়ারি এফআরসি থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়ে জানানো হয়, কোম্পানিটি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার জন্য দুই রকম আর্থিক হিসাব বানিয়েছে। এছাড়া একই বিষয়ে আইসিএবিকে অবগত করে এফআরসি। এরপরে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

রমেন্দ্র নাথ বসাককে নিরীক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে বিডি থাই ফুডের সিএফও মো. সাহানুর রহমান ও সচিব হাবিবুর রহমান বিজনেস আওয়ারকে বলেন, সে তো বিএসইসির লিস্টেড নিরীক্ষক, তাকে না নেওয়ার কারন দেখি না। তাকে উপক্ষো (ইগনোর) করার কোন সুযোগ আমাদের আছে বলে মনে হয় না। কিন্তু এ জাতীয় একজন নিরীক্ষকের নিরীক্ষার উপরে বিনিয়োগকারীরা কিভাবে আস্থা রাখবে- এমন প্রশ্নে জানান, সে তো অপরাধ করেছে সম্প্রতি। কিন্তু তাকে আরও আগে নিয়োগ দিয়েছিলাম এবং এখন বাদ দিয়ে দিয়েছি।

আরও পড়ুন…..
উদ্যোক্তা/পরিচালকদের লভ্যাংশে নিষেধাজ্ঞার শর্তে দূর্বল মুনাফার বিডি থাই ফুডের আইপিও অনুমোদন

উল্লেখ্য, বিডি থাই ফুড শেয়ারবাজারে ১ কোটি ৫০ লাখ সাধারণ শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ১৫ কোটি টাকা উত্তোলন করবে। এক্ষেত্রে প্রতিটি শেয়ারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ টাকা। এরইমধ্যে গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোম্পানিটির আইপিওতে আবেদন জমা নেওয়া হয়েছে।

এই শেয়ারের মধ্যে ১৫ শতাংশ শেয়ার এমপ্লয়ীদের মধ্যে ইস্যু করা যাবে। যা ২ বছর লক-ইন থাকবে।

শেয়ারবাজার থেকে কোম্পানিটি অর্থ উত্তোলন করে যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম ক্রয়, দালানকোঠা নির্মান, ভূমি উন্নয়ন এবং আইপিও খরচ খাতে ব্যয় করবে।

বিজনেস আওয়ার/০৩ জানুয়ারি, ২০২২/পিএস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

One thought on “এবার বিতর্কিত নিরীক্ষক দিয়ে শেয়ারবাজারে আসছে বিডি থাই ফুড

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

এবার বিতর্কিত নিরীক্ষক দিয়ে শেয়ারবাজারে আসছে বিডি থাই ফুড

পোস্ট হয়েছে : ১১:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ জানুয়ারী ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : একমি পেস্টিসাইডসের পরে প্রতারনের দায়ে নিষিদ্ধ নিরীক্ষক সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং এর পার্টনার রমেন্দ্র নাথ বসাকের মাধ্যমে নিরীক্ষা করে শেয়ারবাজারে আসছে বিডি থাই ফুড অ্যান্ড বেভারেজ। যে নিরীক্ষক একই কোম্পানির একই সময়ের দুই রকম অ্যাকাউন্টস নিরীক্ষা করেছে এবং সঠিক বলে সার্টিফিকেট দিয়েছে। যা দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। এই জঘন্যতম কাজের জন্য তার নিরীক্ষা কাজের উপর ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)। আর সেই প্রতারক নিরীক্ষা করেছে বিডি থাই ফুড।

অথচ অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব পালনের শুরুতেই স্বচ্ছ কোম্পানির আইপিও অনুমোদনের বিষয়ে জোরদার করেছিলেন। যে কারনে অনেক কোম্পানির আইপিও আবেদন বাতিল করে দিয়েছিলেন। যা শেয়ারবাজারে কমিশনের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করেছিল। কিন্তু সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে।

এ কোম্পানিটিকে শেয়ারবাজারে আনতে ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে- বিএলআই ক্যাপিটাল এবং ইউনিক্যাপ ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।

এ বিষয়ে শেয়ারবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বিজনেস আওয়ারকে বলেন, নিরীক্ষকদের জায়গায় স্বচ্ছতা আনাটা খুবই জরুরি। তাদের নিরীক্ষার উপরে আস্থা রাখা যায় না। তারপরেও একজন বিতর্কিত নিরীক্ষকের নিরীক্ষার কোম্পানির আইপিও কেনো দেওয়া হয়েছে, সেটা কমিশনই ভালো বলতে পারবে।

গত বছরের ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক সিলভার কম্পোজিট টেক্সটাইল মিলসের একই সময়ের দুই রকম আর্থিক হিসাব দুই ব্যাংকে জমাদানের বিষয়ে ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলকে চিঠির মাধ্যমে জানায়। যা রমেন্দ্র নাথ নিরীক্ষা করেছিলেন। এরপরে ১৭ জানুয়ারি এফআরসি থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়ে জানানো হয়, কোম্পানিটি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার জন্য দুই রকম আর্থিক হিসাব বানিয়েছে। এছাড়া একই বিষয়ে আইসিএবিকে অবগত করে এফআরসি। এরপরে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

রমেন্দ্র নাথ বসাককে নিরীক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে বিডি থাই ফুডের সিএফও মো. সাহানুর রহমান ও সচিব হাবিবুর রহমান বিজনেস আওয়ারকে বলেন, সে তো বিএসইসির লিস্টেড নিরীক্ষক, তাকে না নেওয়ার কারন দেখি না। তাকে উপক্ষো (ইগনোর) করার কোন সুযোগ আমাদের আছে বলে মনে হয় না। কিন্তু এ জাতীয় একজন নিরীক্ষকের নিরীক্ষার উপরে বিনিয়োগকারীরা কিভাবে আস্থা রাখবে- এমন প্রশ্নে জানান, সে তো অপরাধ করেছে সম্প্রতি। কিন্তু তাকে আরও আগে নিয়োগ দিয়েছিলাম এবং এখন বাদ দিয়ে দিয়েছি।

আরও পড়ুন…..
উদ্যোক্তা/পরিচালকদের লভ্যাংশে নিষেধাজ্ঞার শর্তে দূর্বল মুনাফার বিডি থাই ফুডের আইপিও অনুমোদন

উল্লেখ্য, বিডি থাই ফুড শেয়ারবাজারে ১ কোটি ৫০ লাখ সাধারণ শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ১৫ কোটি টাকা উত্তোলন করবে। এক্ষেত্রে প্রতিটি শেয়ারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ টাকা। এরইমধ্যে গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোম্পানিটির আইপিওতে আবেদন জমা নেওয়া হয়েছে।

এই শেয়ারের মধ্যে ১৫ শতাংশ শেয়ার এমপ্লয়ীদের মধ্যে ইস্যু করা যাবে। যা ২ বছর লক-ইন থাকবে।

শেয়ারবাজার থেকে কোম্পানিটি অর্থ উত্তোলন করে যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম ক্রয়, দালানকোঠা নির্মান, ভূমি উন্নয়ন এবং আইপিও খরচ খাতে ব্যয় করবে।

বিজনেস আওয়ার/০৩ জানুয়ারি, ২০২২/পিএস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: