ঢাকা , বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শাবিপ্রবির ৩০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা

  • পোস্ট হয়েছে : ০৪:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২২
  • 12

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় জালালাবাদ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান বাদী হয়ে প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে মামলায় কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, রোববার আন্দোলনরত দুই থেকে তিন শতাধিক উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী হঠাৎ কর্তব্যরত পুলিশের ওপর চড়াও হয়। তারা সরকারি আগ্নেয়াস্ত্র ধরে টানাটানি করে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। চারদিক থেকে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছোড়ে। এছাড়া পুলিশের ওপর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ক্যাম্পাসে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।

এ ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থীরা সেদিন সোয়া ৩টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে অবস্থান করে থেমে থেমে পুলিশের ওপর আক্রমণ অব্যাহত রাখে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১১ রাউন্ড রাবার কার্তুজ ও ২০ রাউন্ড সিসা কার্তুজসহ ৩১ রাউন্ড শটগানের গুলি ছোড়ে। এছাড়া সিআরটি ২১টি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। সেদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় উপাচার্যকে উদ্ধার করা হয়।

ইটপাটকেল ও ককটেল বিস্ফোরণে উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর), অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর), জালালাবাদ থানার পরিদর্শক (তদন্ত), এসআই আসাদুজ্জামানসহ অনেকেই আহত হন।

বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হল প্রভোস্ট বডির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবি ও অবস্থান কর্মসূচিতে হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। রোববার চতুর্থ দিনের মতো আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। তবে বিকেলের পর থেকে উত্তপ্ত হয়ে পড়ে ক্যাম্পাস।

বিকেল ৩টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। পরে সন্ধ্যায় তাকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পাঁচ পুলিশ সদস্য, ১০ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী, ১৫ জন শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন।

তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ২৭টি রাবার বুলেট ও ২১টি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ার পাশাপাশি লাঠিপেটা করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে উপাচার্যকে মুক্ত করে তার বাসভবনে নিয়ে আসে।

শিক্ষার্থী-পুলিশ সংঘর্ষের পর অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাসনের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে রাত থেকে দফায় দফায় বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনার বিচার ও উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে অবস্থান নেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকবেন বলে জানিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বিজনেস আওয়ার/১৮ জানুয়ারি, ২০২২/এএইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

শাবিপ্রবির ৩০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা

পোস্ট হয়েছে : ০৪:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় জালালাবাদ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান বাদী হয়ে প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে মামলায় কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, রোববার আন্দোলনরত দুই থেকে তিন শতাধিক উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী হঠাৎ কর্তব্যরত পুলিশের ওপর চড়াও হয়। তারা সরকারি আগ্নেয়াস্ত্র ধরে টানাটানি করে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। চারদিক থেকে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছোড়ে। এছাড়া পুলিশের ওপর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ক্যাম্পাসে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।

এ ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থীরা সেদিন সোয়া ৩টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে অবস্থান করে থেমে থেমে পুলিশের ওপর আক্রমণ অব্যাহত রাখে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১১ রাউন্ড রাবার কার্তুজ ও ২০ রাউন্ড সিসা কার্তুজসহ ৩১ রাউন্ড শটগানের গুলি ছোড়ে। এছাড়া সিআরটি ২১টি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। সেদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় উপাচার্যকে উদ্ধার করা হয়।

ইটপাটকেল ও ককটেল বিস্ফোরণে উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর), অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর), জালালাবাদ থানার পরিদর্শক (তদন্ত), এসআই আসাদুজ্জামানসহ অনেকেই আহত হন।

বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হল প্রভোস্ট বডির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবি ও অবস্থান কর্মসূচিতে হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। রোববার চতুর্থ দিনের মতো আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। তবে বিকেলের পর থেকে উত্তপ্ত হয়ে পড়ে ক্যাম্পাস।

বিকেল ৩টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। পরে সন্ধ্যায় তাকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পাঁচ পুলিশ সদস্য, ১০ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী, ১৫ জন শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন।

তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ২৭টি রাবার বুলেট ও ২১টি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ার পাশাপাশি লাঠিপেটা করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে উপাচার্যকে মুক্ত করে তার বাসভবনে নিয়ে আসে।

শিক্ষার্থী-পুলিশ সংঘর্ষের পর অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাসনের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে রাত থেকে দফায় দফায় বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনার বিচার ও উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে অবস্থান নেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকবেন বলে জানিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বিজনেস আওয়ার/১৮ জানুয়ারি, ২০২২/এএইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: