বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়ার নিয়ে কারসাজির লক্ষ্যে অক্ষমতা সত্ত্বেও কিছু কোম্পানি লভ্যাংশ ঘোষনা করার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ব্যবসায় লোকসান বা দীর্ঘদিন ধরে মন্দাবস্থায় থাকা কোম্পানির ক্ষেত্রে মাঝেমধ্যেই এমন লভ্যাংশ দেখা যায়। এক্ষেত্রে লভ্যাংশের চেয়ে শেয়ার কারসাজি থেকে অনেক বেশি টাকা হাতানো হয়। পরবর্তীতে ওই কারসাজির টাকা থেকে একটি অংশ দিয়ে লভ্যাংশ প্রদান করা হয়। যার প্রমাণ ফুটে উঠেছে লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের নিরীক্ষায়।
নিরীক্ষক জানিয়েছেন, ২০১৯ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে ‘স্টেটম্যান্ট অব চেঞ্জেস ইন ইক্যুইটি’ হিসাবে দেখানো ১ কোটি ২২ লাখ টাকার লভ্যাংশের মধ্যে মাত্র ৩৫ লাখ টাকা প্রদানের প্রমাণাদি দেখাতে পেরেছে লিগ্যাসি ফুটওয়্যার কর্তৃপক্ষ।
এরপরে তারা গত অর্থবছরে (২০১৯-২০) অযাচাইকৃত ৮৩ লাখ টাকার লভ্যাংশের মধ্যে ৩৭ লাখ টাকার প্রদান করা হয়েছে। যা কোম্পানির পর্ষদের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হয়েছে। ফলে ওই হিসাব কোম্পানির অ্যাকাউন্টসের বাহিরে রয়েছে। অথচ ২০১৯ সালেই পুরো অর্থ প্রদান দেখানো হয়েছে।
লিগ্যাসি ফুটওয়্যার ব্যবসায় দূর্বল হলেও শেয়ার দরে পিছিয়ে নেই। ২০২০-২১ অর্থবছরে মাত্র ১ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষনা করা কোম্পানিটির শেয়ার দর এখন ৬০ টাকার উপরে। যে শেয়ারটি ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ৮৫ টাকায় পর্যন্ত উঠেছিল।
এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ কর্মীদের বেতন, পরিচালকদের সম্মানি এবং ক্যাপিটাল ইনভেস্টমেন্টসহ সব লেনদেনও ব্যাংকিং চ্যানেলের বাহিরে গিয়ে নগদে করেছে বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক। এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ এর ৩০ ধারার (আই) এবং (এম) ভঙ্গ করা হয়েছে।
লিগ্যাসি ফুটওয়্যার কর্তৃপক্ষ ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ড (ডব্লিউপিপিএফ) গঠন করলেও ২০০৬ সালের শ্রম আইনের ২৩২ ধারা অনুযায়ি তা ব্যবহার করে না। এছাড়া তারা যে পরিমাণ অর্থ কর্মীদের মাঝে বিতরন করেছে, তা ডব্লিউপিপিএফ ট্রাস্টি অ্যাকাউন্টের পরিবর্তে কোম্পানির অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া হয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে ডিএসইর ওয়েবসাইটে কোম্পানির প্রোফাইলে যোগাযোগ করার মতো কারও নাম্বার পাওয়া যায়নি। অথচ প্রতিটি তালিকাভুক্ত কোম্পানির প্রোফাইলে কোম্পানি সচিবের নাম ও তার ফোন নাম্বার দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ১৩ কোটি ৮ লাখ টাকা। এরমধ্যে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন শ্রেণীর (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত) বিনিয়োগকারীদের মালিকানা ৭০ শতাংশ। কোম্পানিটির রবিবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) লেনদেন শেষে শেয়ার দর দাড়িঁয়েছে ৬১.৯০ টাকায়।
বিজনেস আওয়ার/০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২/আরএ