বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : রাজনৈতিকভবে বিএনপিকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার অনুসারীদের প্রভাব মুক্ত করতে হবে। লন্ডন থেকে তারেকে রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির রাজনীতি পরিচালিত হোক সেটাও চান না দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীরা
তারা বলেন, তারেক রহমানের একক প্রভাবের কারণে বিএনপি’র অধিকাংশ সিনিয়র নেতারা আজ নিষ্ক্রিয় হয়ে আছেন। পদ-পদবি হারানোর ভয়ে নিজেরা উদ্যোগী হয়ে কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করেন না। যার ফলে বিএনপি দিন দিন কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন তৃণমূল নেতা বলেন, আগে খালেদা জিয়া দল চালানোর সময় রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বুদ্ধিজীবীদের পরামর্শ গ্রহণ করতেন। কিন্তু দলের ক্ষমতা যখন তারেক রহমানের হাতে চলে গেছে তখন থেকেই এ দলে বুদ্ধিজীবীরাও নিষ্ক্রিয়।
তারা তার পুত্র তারেক রহমান সম্পর্কে অনেক বিষয়ে সতর্ক করতেন। কিন্তু সেই তারেক রহমানের হাতে যখন দলের ক্ষমতা তখন তারা কীভাবে বুদ্ধি- পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করবেন? আর তারেক রহমান মনে করেন, বিএনপিতে এসব বুদ্ধিজীবীদের প্রয়োজন নেই।
এ বিষয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য ও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একজন নেতা বলেন, বিএনপিতে এখন অঘোষিত স্বৈরতন্ত্র চলছে। এখানে একজনের ইচ্ছায় সবকিছু হচ্ছে। বিএনপির নেতৃত্বে ভারসাম্য দরকার। তিনি যেটা করছেন সেটা ভুল হলেও সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে বাধ্য হচ্ছেন সিনিয়র নেতারা।
তিনি আরও বলেন, একদিকে, তৃণমূল নেতাদের চাপ অন্যদিকে দলে অবমূল্যায়ন। ফলে নেতারা উভয় সংকটের মধ্যে আছেন। তাই রাজনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হলে এ দলের ক্ষমতায়নে ভারসাম্য দরকার।
এ প্রসঙ্গে বিএনপিপন্থী রাজনৈতিক বিশ্লেষক, বুদ্ধিজীবী ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বিএনপির মধ্যে গণতন্ত্র নেই। নেই ক্ষমতার ভারসাম্য। মওদুদ, খন্দকার মোশাররফের মতো নেতারা তো দলের ক্রান্তিকালে দায়িত্ব নিতে পারেন। তারা কেন সেটা করছেন না।
তিনি বলেন, দলের মহাসচিব এখন একজন পুতুল মহাসচিবে পরিণত হয়েছেন। তিনি যদি দলের মধ্যে নির্বাচিত মহাসচিব হতেন, তাহলে তিনি তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তো নির্বাচিত না। কারো দয়ায় মহাসচিব হয়েছেন। বিএনপির রাজনীতিতে এটার পরিবর্তন করতে হবে।
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, লন্ডনে বসে দল চালানো সম্ভব নয়। সেখানে বসে বসে দেশের চিত্র বুঝা যাবে না। ছোট ছোট করে চুল কাটলেই জিয়াউর রহমান হওয়া যায় না। দলের সিনিয়র ও ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করতে হবে। তাদের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে হবে। সেই সাথে তৃনমূল নেতাকর্মীদের প্রাধান্য দিতে হবে।
বিজনেস আওয়ার/১৯ জুলাই, ২০২০/এ