1. [email protected] : user : user
  2. [email protected] : jewel : jewel
  3. [email protected] : Admin : Admin
  4. [email protected] : Nayan Babu : Nayan Babu
বিক্রি ১১৮% বাড়লেও উৎপাদনে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খরচ কমেছে
April 25, 2024, 6:17 am

বিক্রি ১১৮% বাড়লেও উৎপাদনে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খরচ কমেছে

ইব্রাহিম হোসাইন (রেজোয়ান)
  • পোস্ট হয়েছে : Wednesday, March 9, 2022
  • 0 বার দেখা হয়েছে
print sharing button

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সূতা উৎপাদন ও বাজারজাতকারী সাফকো স্পিনিং মিলসের বিরুদ্ধে আগের অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর ২০) লোকসান থেকে চলতি অর্থবছরের একই সময়ে মুনাফা দেখাতে গিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ কোম্পানি কর্তৃপক্ষ সূতা বিক্রির পরিমাণ ১১৮ শতাংশ বেড়েছে বলে আর্থিক হিসাবে উল্লেখ করলেও ওই পণ্য উৎপাদনে তারা বিদ্যুৎ বিল ও জ্বালানির মতো ব্যয় কমেছে বলে জানিয়েছে। কিন্তু উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে এ জাতীয় ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়া স্বাভাবিক, কমার কোন সুযোগ নেই বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।।

শেয়ারবাজারে নিরীক্ষত আর্থিক হিসাবের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্ন রয়েছে। সেখানে অনিরীক্ষিত কোয়ার্টারলি (প্রান্তিক) আর্থিক হিসাব বিশ্বাস করা যে কতটা কঠিন, তা সাধারন বিনিয়োগকারীরা ভালোভাবেই টের পান। এই বাজারে কোম্পানিগুলোর অনিরীক্ষিত আর্থিক হিসাব ম্যানেজমেন্টের সুবিধামতো তৈরী করা হয়। যে কারনে অনেক কোম্পানির এক প্রান্তিকের সঙ্গে আরেক প্রান্তিকের ব্যবসার কোন মিল থাকে না। ফলে প্রতারণার ফাদেঁ পড়তে হয় সাধারন বিনিয়োগকারীদের।

তালিকাভুক্ত এই কোম্পানিটির আগের অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর ২০) নিট লোকসান হয়েছিল ১৩ কোটি ২৯ লাখ ৭ হাজার টাকা বা শেয়ারপ্রতি ৪.৪৩ টাকা। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে নিট মুনাফা দেখানো হয়েছে ১০ লাখ ৯০ হাজার টাকা বা শেয়ারপ্রতি ০.০৪ টাকা। যা দেখাতে গিয়ে বিক্রি বেড়েছে বললেও তা উৎপাদনে কিছু ব্যয় কমিয়ে দেখানো হয়েছে। যা বাস্তবে কমার কোন সুযোগ নেই।

বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে ইনসাইডার ট্রেডিং যে অন্যতম প্রধান সমস্যা, এটা একবাক্যে স্বীকার করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, কোম্পানির উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা সরাসরি শেয়ার ব্যবসায় জড়িয়ে রয়েছে। যে কারনে অনেক কোম্পানির প্রান্তিক আর্থিক হিসাবগুলো তাদের শেয়ার ব্যবসার সুবিধার্থে প্রস্তুত করা হয়। এক্ষেত্রে কোন প্রান্তিকে মুনাফা বাড়িয়ে বা কমিয়ে দেখানো হয়। যেটা পুরো বছরের হিসাবে কিংবা এক প্রান্তিকের হিসাব আরেক প্রান্তিকের সঙ্গে সমন্বয় করে দেখানো হয়।

কোম্পানি কর্তৃপক্ষের এই প্রতারণায় সাধারন বিনিয়োগকারীদেরকে লোকসানে পড়তে হয়। তারা যখন কোন কোম্পানির মুনাফা বৃদ্ধি বা লোকসান থেকে মুনাফায় আসার তথ্য পায়, তখন সেখানে বিনিয়োগে আগ্রহী হয়। এছাড়া মুনাফা থেকে লোকসান বা মুনাফা কমে আসা কোম্পানি থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নেয়। বিনিয়োগকারীদের এই আচরনকে স্বাভাবিক বলেই মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আর্থিক হিসাবের স্বচ্ছতার বিকল্প নেই।

আরও পড়ুন….
তালিকাভুক্তির ৪ বছরেই চলতি মূলধনের ঘাটতিতে বন্ধ হওয়ার পথে ওয়াইম্যাক্স

দেখা গেছে, সাফকো স্পিনিংয়ের চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর ২১) ৩০ কোটি ৩৮ লাখ টাকার সূতা বা পণ্য বিক্রি হয়েছে। যার পরিমাণ আগের বছরের একই সময়ে হয়েছিল ১৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এ হিসাবে বিক্রি বেড়েছে ১৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকার বা ১১৮ শতাংশ।

এই পণ্য উৎপাদনে কোম্পানিটির আগের বছরের ২০ কোটি ১২ লাখ টাকার ব্যয় এ বছরে হয়েছে ২৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ বিক্রি ১১৮ শতাংশ বাড়লেও উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে মাত্র ৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকার বা ২৪ শতাংশ।

এই উৎপাদন ব্যয় কম দেখানোর জন্য উৎপাদনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত শ্রমিকদের মজুরি ও বেতন, জ্বালানি তেল ও লুব্রিকেন্টস ও বিদ্যুৎ বিল কম দেখানো হয়েছে।

কোম্পানি কর্তৃপক্ষ, আগের বছরের প্রথমার্ধে ১৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকার বিক্রিত পণ্য উৎপাদনে শ্রমিকদের মজুরি ও বেতনবাবদ ব্যয় দেখায় ১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। কিন্তু চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে দ্বিগুণের বেশি বা ৩০ কোটি ৩৮ লাখ টাকার বিক্রিত পণ্য উৎপাদনে মজুরি ও বেতনবাবদ ব্যয় দেখিয়েছে ১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এছাড়া আগের অর্থবছরের প্রথমার্ধের ৫ লাখ ৮ হাজার টাকার জ্বালানি তেল ও লুব্রিকেন্টস ব্যয় কমিয়ে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা ও ২ কোটি ৯০ লাখ ৬৬ হাজার টাকার বিদ্যুৎ বিল কমিয়ে ২ কোটি ১ লাখ ৭৮ হাজার টাকা দেখিয়েছে।

এছাড়া আগের অর্থবছরের প্রথমার্ধে কারখানার মেশিনারীজ রক্ষনাবেক্ষন ও মেরামতবাবদ ব্যয় দেখানো হয়েছিল ৯৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। তবে এ বছরের প্রথমার্ধে এই খাতে ব্যয়ের পরিবর্তে ৮ হাজার টাকা আয় দেখানো হয়েছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত একই খাতের এক কোম্পানির পরিচালক বিজনেস আওয়ারকে বলেন, ১১৮ শতাংশের মতো বিক্রি বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির বিদ্যুৎ বিল, মজুরী, জ্বালানি তেলের মতো ব্যয় কমে আসার কোন কারন খুজেঁ পাচ্ছি না। যেখানে বাংলাদেশে কোন কিছুর দর কমার মতো ইতিহাস নজির। সেখানে ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়া স্বাভাবিক।

তিনি বলেন, যদি কোন কোম্পানি মানুষ নির্ভরতা কমিয়ে অটোমেশনে যায়, সেক্ষেত্রে মজুরী ব্যয় কমতে পারে। কিন্তু বিদ্যুৎ বিল ও জ্বালানি খরচ কমার কোন সুযোগ নেই। এছাড়া সূতা উৎপাদনকারী কোম্পানিতে প্রায় পুরোটাই মেশিন নির্ভরশীলতা। সেখানে শ্রমিকদের অংশগ্রহণ এমনিতেই কম থাকে। সে হিসাবে সূতা উৎপাদনকারী কোম্পানিতে মজুরী ব্যয় কমে আসাটাও যৌক্তিক না।

বিক্রি বৃদ্ধি সত্ত্বেও ওই বিক্রিত পণ্য উৎপাদনে বিদ্যুৎ বিলের মতো ব্যয় কমে আসার কোন যৌক্তিকতা দেখছেন না দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্ট অব বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) সাবেক সভাপতি আবু সাঈদ মোঃ শায়খুল ইসলাম। তিনি বিজনেস আওয়ারকে বলেন, শেয়ারবাজারে এখনো আর্থিক হিসাবের অস্বচ্ছতা একটি অন্যতম সমস্যা। এখানে প্রান্তিক হিসাবগুলো যে যার মতো করে সাজানোর অভিযোগ আছে। শেয়ারবাজারের উন্নয়নে আর্থিক হিসাবে স্বচ্ছতা খুবই জরুরী।

এসব স্থায়ী ব্যয় কমে আসার কোন ব্যাখ্যা দিতে পারেননি সাফকো স্পিনিংয়ের সচিব ইফতেখার আহমেদ। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ বিলতো কমার কথা না। তবে করোনায় ওইসময় কারখানা বন্ধ থাকায় এমনটি হতে পারে। কিন্তু ওইসময় বন্ধ থাকলেও বিক্রি করা সূতা যখনই উৎপাদন করেছেন, তখনতো বিদ্যুৎ ব্যয় হয়েছে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আগের কথাতো তাই ঠিক মনে নাই।

তিনি বলেন, আমরা এখন ভালো ব্যবসা করছি। করোনার প্রভাব কাটিয়ে উঠছি। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধে কাচাঁমালের দাম বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু উৎপাদিত সূতা বিক্রির সময় দাম বাড়ছে না।

বিজনেস আওয়ার/০৯ মার্চ, ২০২২/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

One response to “বিক্রি ১১৮% বাড়লেও উৎপাদনে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খরচ কমেছে”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category