করোনা পরিস্থিতির উন্নয়নে জেমিনি সী ফুডের চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর ২১) চিংড়ি রপ্তানি বেড়েছে ৬৫৭ শতাংশ। যার উপর ভিত্তি করে কোম্পানিটি লোকসান কাটিয়ে বড় মুনাফা অর্জন করেছে। তবে কোম্পানিটির বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে নিরীক্ষকের শঙ্কাও রয়েছে।
গত কয়েক বছর ধরে ব্যবসা ভালো যাচ্ছিল না জেমিনি সী ফুডের। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে বড় মুনাফা হয়েছে। ওই সময় যে পরিমাণ মুনাফা হয়েছে, সেই পরিমাণ বিগত কয়েকটি পুরো অর্থবছরেও হয়নি।
ব্যবসায় উন্নতিতে কোম্পানিটির চলতি অর্থবছরের ১ম প্রান্তিকের ব্যবসার খবর প্রকাশের পর থেকেই টানা উত্থানে রয়েছে শেয়ার দর। গত ১৫ নভেম্বর কোম্পানিটির আগের অর্থবছরের ১ম প্রান্তিকের ৪.৪৪ টাকার শেয়ারপ্রতি লোকসান কাটিয়ে চলতি অর্থবছরের ১ম প্রান্তিকে ১.৫৬ টাকা মুনাফার খবর প্রকাশের পর থেকেই টানা উত্থানে রয়েছে। যা স্বল্প মূলধনী এ কোম্পানিটির শেয়ারকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় নিয়ে গেছে।
গত ১৪ নভেম্বর ১ম প্রান্তিকের আর্থিক হিসাব প্রকাশের দিন জেমিনির শেয়ার দর ছিল ২৭৪.৫০ টাকা। যে শেয়ারটি ২১ মার্চ লেনদেন শেষে দাড়িঁয়েছে ৪৪০.৫০ টাকায়। এ হিসাবে ৪ মাসের ব্যবধানে শেয়ারটির দর বেড়েছে ১৬৬ টাকা বা ৬০ শতাংশ। এতে করে কোম্পানিটির মূল্য-আয় (পিই) অনুপাত দাঁড়িয়েছে ৪৩.০২ এ। যা ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় শেয়ারটিতে মার্জিন ঋণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর ২১) কোম্পানিটির চিংড়ি রপ্তানি থেকে ৫১ কোটি ১৯ লাখ টাকা আয় হয়েছে। যার পরিমাণ আগের বছরের একই সময়ে হয়েছিল ৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এ হিসাবে আয় বেড়েছে ৪৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকার বা ৬৫৭ শতাংশ।
এই আয় বৃদ্ধির পেছনে কারন হিসেবে রয়েছে চিংড়ির চাহিদা ও দর বৃদ্ধিকে আর্থিক হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া করোনা পরিস্থিতির উন্নতিতে আমেরিকায় চিংড়ির বাজার বড় হচ্ছে। এতে করে জেমিনী সী ফুডের আমেরিকা ও ইউরোপে চিংড়ি রপ্তানি দিনের পর দিন বাড়ছে।
জেমিনি সী ফুডের চিংড়ি রপ্তানিতে এই উন্নতির ফলে আগের অর্থবছরের প্রথমার্ধের লোকসান কাটিয়ে বড় মুনাফা অর্জন হয়েছে। কোম্পানিটির প্রথমার্ধে চিংড়ি রপ্তানির আয় থেকে পরিচালন ব্যয়, সুদজনিত ব্যয় ও কর সঞ্চিতি বিয়োগ এবং অন্যান্য আয় যোগ শেষে নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা বা শেয়ারপ্রতি ৫.১২ টাকায়। যা আগের বছরের একই সময়ে নিট লোকসান হয়েছিল ৩ কোটি ৭২ লাখ টাকার বা শেয়ারপ্রতি ৭.৯২ টাকা। এ হিসাবে ব্যবসায় উন্নতি হয়েছে ১৬৫ শতাংশ।
উল্লেখ্য, ৪ কোটি ৬৯ লাখ ৬৩ হাজার টাকার পরিশোধিত মূলধনের জেমিনি সী ফুডে ২ কোটি ৮৪ লাখ ২৬ হাজার টাকার নিট সম্পদ রয়েছে। কোম্পানিটির সংরক্ষিত আয় (রিটেইন আর্নিংস) ১ কোটি ৮৫ লাখ ৩৭ হাজার টাকা ঋণাত্মক থাকায় পরিশোধিত মূলধনের থেকে নিট সম্পদ কমে এসেছে। যাতে কোম্পানিটির ৩১ ডিসেম্বর শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৬.০৫ টাকা।
আরও পড়ুন….
আরগন ডেনিমসের লোকসান দেখাতে অস্বাভাবিক উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি : অন্যদের কমেছে
বিজনেস আওয়ার/২২ মার্চ, ২০২২/আরএ