বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়ারবাজার তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর অবন্টিত লভ্যাংশ আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডে (স্থিতিশীল তহবিল) জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এই সময়ের মধ্যে অবণ্টিত লভ্যাংশ স্থিতিশীল তহবিলে স্থানান্তর না করলে শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কমিশন।
মঙ্গলবার (২২ মার্চ) এ সংক্রান্ত একটি চিঠি সকল তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠিয়েছে বিএসইসি।
একইসঙ্গে বিষয়টি ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) সভাপতি, ক্যাপিটাল মার্কেট স্টেবিলাইজেশন ফান্ডের চিফ অফ অপারেশন, ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অবহিত করা হয়েছে।
বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ইতোপূর্বে এ বিষয়ে কমিশন কর্তৃক একাধিক চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিএসইসির ওই নির্দেশনা অনুযায়ী আপনাদের ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডে নগদ ও স্টক বা বোনাস লভ্যাংশ বা যেকোন তহবিল বা অবণ্টিত শেয়ার বা অমীমাংসিত বা অনাকাঙ্ক্ষিত দাবিহীন বা ফেরত না হওয়া পাবলিক সাবস্ক্রিপশনের অর্থ হস্তান্তর করার কথা ছিল।
ইতোমধ্যে দেখা যাচ্ছে যে, কিছু কোম্পানি নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে উল্লিখিত বিধি এবং কমিশনের নির্দেশের বিধান অনুযায়ী অবণ্টিত নগদ ও স্টক বা বোনাস শেয়ার হস্তান্তর সম্পন্ন করেনি। তাই ওই কোম্পানিগুলোকে তাদের অবণ্টিত লভ্যাংশ আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে ক্যাপিটাল মার্কেট স্টেবিলাইজেশন ফান্ডের ব্যাংক ও বিও হিসাবে স্থানান্তর করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। আর এ নির্দেশনা পরিপালনে ব্যর্থ হলে আর্থিক জরিমানাসহ সিকিউরিটিজ আইনানুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড পরিচালনার জন্য ‘ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড রুলস, ২০২১’ বিএসইসি প্রণয়ন করেছে। গত বছরের ২৭ জুন রুলসটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। সে অনুযায়ী, ফান্ডটি ব্যবস্থাপনার জন্য ১১ সদস্যের বোর্ড অব গভর্নস রয়েছে। ফান্ড ব্যবস্থাপনার জন্য চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান।
এছাড়াও বোর্ড অব গভর্নসের সদস্য হলেন- বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শেখ তানজিলা দীপ্তি, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. তারিক আমিন ভুঁইয়া, সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, সিডিবিএলের স্বতন্ত্র পরিচালক এ কে এম নুরুল ফজলে বাবুল, সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিসিবিএল) পরিচালক ড. মোহাম্মদ তারেক, বিএপিএলসির সভাপতি আজম জে চৌধুরী, দি ইন্সটিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) সদস্য এ কে এম দেলোয়ার হোসেন। আর ফান্ডটির চিফ অব অপারেশন (সিওও) হিসেবে অগ্রণী ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মো. মনোয়ার হোসেনকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএসইসি। আর ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডটি পরিচালনা করবে আইসিবি।
উল্লেখ্য, শেয়ারবাজারের উন্নয়ন ও তারল্য সংকট দূর করতে ২০ হাজার কোটি টাকার ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বিভিন্ন কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অবণ্টিত নগদ ও বোনাস লভ্যাংশ বা বিতরণ না হওয়া যেকোনো তহবিল বা অমীমাংসিত শেয়ার বা দাবি না করা শেয়ার বা ফেরত না দেওয়া পাবলিক সাবস্ক্রিপশনের অর্থ দিয়ে এ তহবিল গঠন করা হয়েছে।
বিজনেস আওয়ার/২৩ মার্চ, ২০২২/পিএস